এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্প চালুর। কিন্তু বহু প্রতীক্ষার পরও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে চলতি মৌসুমে ভবদহ সংলগ্ন গ্রামগুলো প্রায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ ফসল। ভবদহ সংগ্রাম কমিটি সূত্রে জানা গেছে, যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর এবং খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শতাধিক গ্রাম ও প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ ভয়াবহ দুর্ভোগে রয়েছে। স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে পানিতে। অনেক পরিবার বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
গেটের উজান ও ভাটির এলাকায় উত্তর দিকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত পলি পড়ে নদী একেবারেই ভরাট হয়ে গেছে। ২১ পোল্ডারের উত্তরে বারবার স্কেভেটর দিয়ে খনন করেও কার্যকর কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গেটের দক্ষিণের অবস্থা আরও করুণÑ সেখানে মানুষ ‘পাঠা’ দিয়ে মাছ ধরছে। নয় ভেল্টের উত্তর পাশে পলি পড়ে জায়গাটি খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। এদিকে গেটের সবগুলো মুখ পলিতে বন্ধ হয়ে পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে।
পানি নিষ্কাশন কমিটির অভিযোগ, একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে টি আর এম প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। এই চক্রটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভ্রান্ত করে চলেছে এবং গত পাঁচ বছরে মাটি কাটার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে প্রবল বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ফসলহানি ঘটে এবং সৃষ্টি হয় স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ সময় মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন, যা পাক সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। পরে ১৯৫৯ সালে পাক সরকার (সিইএফ) কোস্টাল এমব্যাঙ্কমেন্ট প্রজেক্ট চালু করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল জলোচ্ছ্বাস ও প্লাবনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে প্রাণহানি ও ফসলহানি রোধ করা। কিন্তু বাস্তবে এ প্রকল্প কোনো কার্যকর সুফল বয়ে আনতে পারেনি।
সামসুজ্জামান
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্প চালুর। কিন্তু বহু প্রতীক্ষার পরও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে চলতি মৌসুমে ভবদহ সংলগ্ন গ্রামগুলো প্রায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয়েছে বিপুল পরিমাণ ফসল। ভবদহ সংগ্রাম কমিটি সূত্রে জানা গেছে, যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর এবং খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শতাধিক গ্রাম ও প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ ভয়াবহ দুর্ভোগে রয়েছে। স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে পানিতে। অনেক পরিবার বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
গেটের উজান ও ভাটির এলাকায় উত্তর দিকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত পলি পড়ে নদী একেবারেই ভরাট হয়ে গেছে। ২১ পোল্ডারের উত্তরে বারবার স্কেভেটর দিয়ে খনন করেও কার্যকর কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গেটের দক্ষিণের অবস্থা আরও করুণÑ সেখানে মানুষ ‘পাঠা’ দিয়ে মাছ ধরছে। নয় ভেল্টের উত্তর পাশে পলি পড়ে জায়গাটি খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। এদিকে গেটের সবগুলো মুখ পলিতে বন্ধ হয়ে পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে।
পানি নিষ্কাশন কমিটির অভিযোগ, একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে টি আর এম প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। এই চক্রটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভ্রান্ত করে চলেছে এবং গত পাঁচ বছরে মাটি কাটার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে প্রবল বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ফসলহানি ঘটে এবং সৃষ্টি হয় স্থায়ী জলাবদ্ধতা। এ সময় মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন, যা পাক সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। পরে ১৯৫৯ সালে পাক সরকার (সিইএফ) কোস্টাল এমব্যাঙ্কমেন্ট প্রজেক্ট চালু করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল জলোচ্ছ্বাস ও প্লাবনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে প্রাণহানি ও ফসলহানি রোধ করা। কিন্তু বাস্তবে এ প্রকল্প কোনো কার্যকর সুফল বয়ে আনতে পারেনি।
সামসুজ্জামান