গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকাশক্তি। এই শিল্প থেকে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে, কিন্তু এই সাফল্যের পেছনে যে শ্রমিকেরা রাতদিন পরিশ্রম করছেন, তাদের অবস্থার খবর তেমন সুখকর নয়। নিজের ঘাম ও পরিশ্রমে বিলিয়ন ডলারের পণ্য তৈরি হলেও শ্রমিকরা আজও মাস শেষে মাত্র কয়েক হাজার টাকা হাতে পান, যা দিয়ে জীবনের মৌলিক চাহিদা মেটানোও কঠিন। তাঁদের থাকার জায়গা হয় ঝুপড়ি, শিক্ষা-চিকিৎসা ও নিরাপদ আবাসনের স্বপ্ন বেমালুম অদূর ভবিষ্যতের গল্প।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গার্মেন্ট শ্রমিকদের ৭২ শতাংশই মাসিক মজুরি দিয়ে বেঁচে থাকা মুশকিল মনে করেন। অধিকাংশ শ্রমিক প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করেন, তবু তাঁদের হাতে আসে মাত্র ১২,৫০০ থেকে ১৪,০০০ টাকার মধ্যে। ঢাকার মতো শহরে এই মজুরি শুধু অপ্রতুল নয়, বরং অমানবিক। এই অবস্থা তৈরি হয়েছে মালিকপক্ষের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ, শ্রম আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ না থাকার কারণে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকরা আরও বেশি বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ বুজে থাকা সমাধান নয়। ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, শ্রমিক ইউনিয়নের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা বাড়ানো, ফ্যাক্টরিতে নিয়মিত তদারকি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, নারী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা নিশ্চিত করাÑএসব ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও শ্রমিকদের জন্য আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসুবিধা নিশ্চিত করাও সময়ের দাবি।
গার্মেন্টস শিল্প দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ-। সেই মেরুদ- টেকসই রাখতে হলে শ্রমিকদের মানবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করাই হবে মূল চাবিকাঠি। তারা বিলিয়ন ডলারের পণ্য তৈরি করে, তাদের পাওনা সম্মান ও অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের সবচেয়ে জরুরি কাজ।
ফারিহা জামান নাবিলা
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকাশক্তি। এই শিল্প থেকে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ শতাংশ আসে, কিন্তু এই সাফল্যের পেছনে যে শ্রমিকেরা রাতদিন পরিশ্রম করছেন, তাদের অবস্থার খবর তেমন সুখকর নয়। নিজের ঘাম ও পরিশ্রমে বিলিয়ন ডলারের পণ্য তৈরি হলেও শ্রমিকরা আজও মাস শেষে মাত্র কয়েক হাজার টাকা হাতে পান, যা দিয়ে জীবনের মৌলিক চাহিদা মেটানোও কঠিন। তাঁদের থাকার জায়গা হয় ঝুপড়ি, শিক্ষা-চিকিৎসা ও নিরাপদ আবাসনের স্বপ্ন বেমালুম অদূর ভবিষ্যতের গল্প।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গার্মেন্ট শ্রমিকদের ৭২ শতাংশই মাসিক মজুরি দিয়ে বেঁচে থাকা মুশকিল মনে করেন। অধিকাংশ শ্রমিক প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করেন, তবু তাঁদের হাতে আসে মাত্র ১২,৫০০ থেকে ১৪,০০০ টাকার মধ্যে। ঢাকার মতো শহরে এই মজুরি শুধু অপ্রতুল নয়, বরং অমানবিক। এই অবস্থা তৈরি হয়েছে মালিকপক্ষের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ, শ্রম আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ না থাকার কারণে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকরা আরও বেশি বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ বুজে থাকা সমাধান নয়। ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, শ্রমিক ইউনিয়নের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা বাড়ানো, ফ্যাক্টরিতে নিয়মিত তদারকি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, নারী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা নিশ্চিত করাÑএসব ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও শ্রমিকদের জন্য আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাসুবিধা নিশ্চিত করাও সময়ের দাবি।
গার্মেন্টস শিল্প দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ-। সেই মেরুদ- টেকসই রাখতে হলে শ্রমিকদের মানবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করাই হবে মূল চাবিকাঠি। তারা বিলিয়ন ডলারের পণ্য তৈরি করে, তাদের পাওনা সম্মান ও অধিকারও নিশ্চিত করতে হবে। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের সবচেয়ে জরুরি কাজ।
ফারিহা জামান নাবিলা