রিশাদ আহমেদ
মানুষ যখন প্রথম আগুন জ্বালাতে শিখেছিল, তখন তা তাকে আলো ও উষ্ণতা দিয়েছিল, আবার অসাবধানতায় বসতি পুড়িয়েও ছারখার করেছিল। জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আজ অনেকটা সেই আগুনের মতো-একদিকে সুবিধা, অন্যদিকে ভয়াবহ ঝুঁকি। এআই এখন গবেষণাগার ছাড়িয়ে দৈনন্দিন জীবনের অংশ। অফিসের রিপোর্ট, চিকিৎসকের রোগ নির্ণয়, ছবি-ভিডিও সম্পাদনা, এমনকি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা-সব ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার বাড়ছে। লেখালিখি, প্রোগ্রামিং, কণ্ঠস্বর অনুকরণ-এসব সৃজনশীল কাজও সহজ হয়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে এটি অসৎ মানুষের হাতে পড়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্রে রূপ নিতে পারে।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো এই ভয়কে বাস্তব করেছে। চ্যাটজিপিটি প্ল্যাটফর্মে একবার তথ্য ফাঁস হয়েছিল, যেখানে ব্যবহারকারীর নাম, ই-মেইল, এমনকি চ্যাট ইতিহাসও বাইরে চলে আসে। আরেকটি ঘটনা শ্যাডোলিক-যেখানে কোনো ক্লিক ছাড়াই এআই ব্যবহারকারীর জিমেইল থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। ছোট আকারের পরিষেবাতেও দুর্বলতা দেখা গেছে; যেমন রিপেয়ারআইটি অ্যাপে নিরাপত্তাহীন ক্লাউড স্টোরেজের কারণে ব্যক্তিগত ছবি ও কোড ফাঁস হয়। ওপেন সোর্স চ্যাটবটের ভুল কনফিগারেশনেও ব্যবহারকারীর আলাপ প্রকাশ্যে এসেছে। অবশ্যই কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। যেমন গুগলের জেমিনি ক্ষতিকর সফটওয়্যার তৈরির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে এখানেও বিতর্ক রয়েছে, কারণ ব্যবহারকারীর চ্যাট ইতিহাস তিন বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়, যা গোপনীয়তার প্রশ্ন তোলে।
সমাধানের জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছ নীতি, নিয়মিত নিরাপত্তা পরীক্ষা, বাগ শিকার কর্মসূচি, এবং সীমিত তথ্য সংরক্ষণ। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মীদের সাইবার প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং সংবেদনশীল কাজে এআই ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যবহারকারীদেরও সচেতন হতে হবে-ব্যক্তিগত তথ্য না দেওয়া, নীতিমালা পড়ে নেওয়া এবং ভুয়া কনটেন্ট চেনার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। অবশেষে, এআই আমাদের ভবিষ্যতের সঙ্গী। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা এটিকে আলো আর উন্নতির হাতিয়ার করব, নাকি অসাবধানতায় অগ্নিকাণ্ডে পরিণত হতে দেব। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া ভবিষ্যৎ আলো নয়, অন্ধকারেই ঢাকা পড়বে।
রিশাদ আহমেদ
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
মানুষ যখন প্রথম আগুন জ্বালাতে শিখেছিল, তখন তা তাকে আলো ও উষ্ণতা দিয়েছিল, আবার অসাবধানতায় বসতি পুড়িয়েও ছারখার করেছিল। জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আজ অনেকটা সেই আগুনের মতো-একদিকে সুবিধা, অন্যদিকে ভয়াবহ ঝুঁকি। এআই এখন গবেষণাগার ছাড়িয়ে দৈনন্দিন জীবনের অংশ। অফিসের রিপোর্ট, চিকিৎসকের রোগ নির্ণয়, ছবি-ভিডিও সম্পাদনা, এমনকি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা-সব ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার বাড়ছে। লেখালিখি, প্রোগ্রামিং, কণ্ঠস্বর অনুকরণ-এসব সৃজনশীল কাজও সহজ হয়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে এটি অসৎ মানুষের হাতে পড়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্রে রূপ নিতে পারে।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো এই ভয়কে বাস্তব করেছে। চ্যাটজিপিটি প্ল্যাটফর্মে একবার তথ্য ফাঁস হয়েছিল, যেখানে ব্যবহারকারীর নাম, ই-মেইল, এমনকি চ্যাট ইতিহাসও বাইরে চলে আসে। আরেকটি ঘটনা শ্যাডোলিক-যেখানে কোনো ক্লিক ছাড়াই এআই ব্যবহারকারীর জিমেইল থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। ছোট আকারের পরিষেবাতেও দুর্বলতা দেখা গেছে; যেমন রিপেয়ারআইটি অ্যাপে নিরাপত্তাহীন ক্লাউড স্টোরেজের কারণে ব্যক্তিগত ছবি ও কোড ফাঁস হয়। ওপেন সোর্স চ্যাটবটের ভুল কনফিগারেশনেও ব্যবহারকারীর আলাপ প্রকাশ্যে এসেছে। অবশ্যই কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। যেমন গুগলের জেমিনি ক্ষতিকর সফটওয়্যার তৈরির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে এখানেও বিতর্ক রয়েছে, কারণ ব্যবহারকারীর চ্যাট ইতিহাস তিন বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়, যা গোপনীয়তার প্রশ্ন তোলে।
সমাধানের জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছ নীতি, নিয়মিত নিরাপত্তা পরীক্ষা, বাগ শিকার কর্মসূচি, এবং সীমিত তথ্য সংরক্ষণ। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মীদের সাইবার প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং সংবেদনশীল কাজে এআই ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যবহারকারীদেরও সচেতন হতে হবে-ব্যক্তিগত তথ্য না দেওয়া, নীতিমালা পড়ে নেওয়া এবং ভুয়া কনটেন্ট চেনার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। অবশেষে, এআই আমাদের ভবিষ্যতের সঙ্গী। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা এটিকে আলো আর উন্নতির হাতিয়ার করব, নাকি অসাবধানতায় অগ্নিকাণ্ডে পরিণত হতে দেব। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া ভবিষ্যৎ আলো নয়, অন্ধকারেই ঢাকা পড়বে।