মাছ প্রোটিন, কোলাজেন, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎকৃষ্ট উৎস। ভৌগোলিক কারণে নদী-নালা, খাল-বিলঘেরা বাংলাদেশ যুগে যুগে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতিতে মাছকে বিশেষ স্থানে বসিয়েছে। সেই আনন্দ ও প্রাচুর্যের প্রতিফলনই আমাদের চিরচেনা প্রবাদ “মাছে ভাতে বাঙালি”। কিন্তু প্রকৃতির সেই উদার উপহার আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। দেশে বিদ্যমান প্রায় ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ ও ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের একটি বড় অংশই বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়। একসময় মাছ উৎপাদন ও রপ্তানিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করেছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয়ও কমেছে। পাশাপাশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হাজারো মৎস্যজীবী পরিবারের জীবিকা, হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য।
যদিও সরকার মৎস্য সংরক্ষণ আইন, জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০১৪, জাতীয় জলাভূমি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে তবে যথাযথ প্রয়োগ ও কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাবে এসব উদ্যোগ কাক্সিক্ষত ফল দিচ্ছে না। সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে নদী ড্রেজিং, জিনগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ, বিভিন্ন সংরক্ষণ প্রকল্প শুরু হলেও বাস্তবায়ন দুর্বল হওয়ায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশার খবরও রয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমে মেনি, ভেদা, মৃগেলসহ বহু দেশীয় মাছ আবার ফিরতে শুরু করেছে। সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহের পুকুরে আবার দেখা মিলছে হারিয়ে যাওয়া মাছের। রাজশাহী, বগুড়া ও চট্টগ্রামের হ্যাচারিগুলোতে কৈ, শোল, গজার, বাটা সহ আরও অনেক প্রজাতি সফলভাবে উৎপাদিত হচ্ছে।
সর্বোপরি, দেশীয় মাছের পুনর্জাগরণই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করা এবং হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা–এটাই হবে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতি, জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য রক্ষার সবচেয়ে বড় সাফল্য। মাছে ভাতে বাঙালি এই পরিচয় যেন চিরদিন অটুট থাকে।
লাবনী আক্তার শিমলা
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
মাছ প্রোটিন, কোলাজেন, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎকৃষ্ট উৎস। ভৌগোলিক কারণে নদী-নালা, খাল-বিলঘেরা বাংলাদেশ যুগে যুগে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতিতে মাছকে বিশেষ স্থানে বসিয়েছে। সেই আনন্দ ও প্রাচুর্যের প্রতিফলনই আমাদের চিরচেনা প্রবাদ “মাছে ভাতে বাঙালি”। কিন্তু প্রকৃতির সেই উদার উপহার আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। দেশে বিদ্যমান প্রায় ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ ও ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের একটি বড় অংশই বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়। একসময় মাছ উৎপাদন ও রপ্তানিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করেছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয়ও কমেছে। পাশাপাশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হাজারো মৎস্যজীবী পরিবারের জীবিকা, হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য।
যদিও সরকার মৎস্য সংরক্ষণ আইন, জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০১৪, জাতীয় জলাভূমি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে তবে যথাযথ প্রয়োগ ও কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাবে এসব উদ্যোগ কাক্সিক্ষত ফল দিচ্ছে না। সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে নদী ড্রেজিং, জিনগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ, বিভিন্ন সংরক্ষণ প্রকল্প শুরু হলেও বাস্তবায়ন দুর্বল হওয়ায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশার খবরও রয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমে মেনি, ভেদা, মৃগেলসহ বহু দেশীয় মাছ আবার ফিরতে শুরু করেছে। সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহের পুকুরে আবার দেখা মিলছে হারিয়ে যাওয়া মাছের। রাজশাহী, বগুড়া ও চট্টগ্রামের হ্যাচারিগুলোতে কৈ, শোল, গজার, বাটা সহ আরও অনেক প্রজাতি সফলভাবে উৎপাদিত হচ্ছে।
সর্বোপরি, দেশীয় মাছের পুনর্জাগরণই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করা এবং হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা–এটাই হবে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতি, জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য রক্ষার সবচেয়ে বড় সাফল্য। মাছে ভাতে বাঙালি এই পরিচয় যেন চিরদিন অটুট থাকে।
লাবনী আক্তার শিমলা