alt

দেশীয় মাছের বিলুপ্তি ও পুনরুদ্ধার উদ্যোগ

: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

মাছ প্রোটিন, কোলাজেন, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎকৃষ্ট উৎস। ভৌগোলিক কারণে নদী-নালা, খাল-বিলঘেরা বাংলাদেশ যুগে যুগে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতিতে মাছকে বিশেষ স্থানে বসিয়েছে। সেই আনন্দ ও প্রাচুর্যের প্রতিফলনই আমাদের চিরচেনা প্রবাদ “মাছে ভাতে বাঙালি”। কিন্তু প্রকৃতির সেই উদার উপহার আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। দেশে বিদ্যমান প্রায় ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ ও ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের একটি বড় অংশই বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়। একসময় মাছ উৎপাদন ও রপ্তানিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করেছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয়ও কমেছে। পাশাপাশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হাজারো মৎস্যজীবী পরিবারের জীবিকা, হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য।

যদিও সরকার মৎস্য সংরক্ষণ আইন, জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০১৪, জাতীয় জলাভূমি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে তবে যথাযথ প্রয়োগ ও কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাবে এসব উদ্যোগ কাক্সিক্ষত ফল দিচ্ছে না। সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে নদী ড্রেজিং, জিনগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ, বিভিন্ন সংরক্ষণ প্রকল্প শুরু হলেও বাস্তবায়ন দুর্বল হওয়ায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশার খবরও রয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমে মেনি, ভেদা, মৃগেলসহ বহু দেশীয় মাছ আবার ফিরতে শুরু করেছে। সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহের পুকুরে আবার দেখা মিলছে হারিয়ে যাওয়া মাছের। রাজশাহী, বগুড়া ও চট্টগ্রামের হ্যাচারিগুলোতে কৈ, শোল, গজার, বাটা সহ আরও অনেক প্রজাতি সফলভাবে উৎপাদিত হচ্ছে।

সর্বোপরি, দেশীয় মাছের পুনর্জাগরণই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করা এবং হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা–এটাই হবে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতি, জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য রক্ষার সবচেয়ে বড় সাফল্য। মাছে ভাতে বাঙালি এই পরিচয় যেন চিরদিন অটুট থাকে।

লাবনী আক্তার শিমলা

ছবি

দখলমুক্ত ফুটপাত চাই

ভূমিদস্যুদের প্রকোপে অতিষ্ঠ কেরানিগঞ্জবাসী

বাকৃতিতে নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন

যৌতুক প্রথা: এক সামাজিক অভিশাপের নীরব বিস্তার

দেশের রাজনীতির তিন দিগন্ত

ছবি

নয়া জাগরণের পথে দেশের ফুটবল

শিশুদের খেলার জায়গায় স্থায়ী মঞ্চ নয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য

অগ্নিনির্বাপণে প্রস্তুতির ঘাটতি আমাদের বড় বিপদ

সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য দূর হবে কবে?

ছবি

নারী কৃষকের অবদান ও স্বীকৃতি

ছবি

অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনে বাড়ছে নদীভাঙন

খেলার মাঠ নেই, হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব ও শহরের প্রাণ

নদীমাতৃক দেশ এখন নদীহীন হওয়ার পথে

বাল্যবিবাহ রোধে দরকার সচেতনতা ও সহায়তা

বৈষম্যের স্বীকার প্রাথমিক শিক্ষক

ছবি

নরোত্তমপুর কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ভোগান্তিতে গ্রামীণ জনগণ

ছবি

একের পর এক কারখানা বন্ধ, টালমাটাল অর্থনীতি

রেলওয়ের টিকেট বুকিং একাউন্টে নম্বর পরিবর্তন

বাইক থেকে ইজিবাইক : নগর জীবনে গতি, ঝুঁকি ও বাস্তবতা

বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা সময়ের দাবি

নদী বাঁচাতে হবে, জীবন বাঁচাতে হবে

ছবি

পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন

পারিবারিক বন্ধনের ভাঙন

উপকূলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

নারী শ্রমিকের সুরক্ষা

বৃষ্টিতে অদৃশ্য ড্রেনের প্রাণঘাতী ফাঁদ

শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া ন্যায্যতার দাবি

ফেনীর দেওয়ানগঞ্জে ময়লার পাহাড়

তাদের গল্প থেমে গেছে, কারণ আমরা আর শুনি না

দুবলার চরের রাসমেলা হতে পারে পর্যটকদের জন্য এক বিস্ময়ভ্রমণ

ছবি

খাদ্য অপচয় রোধে সচেতনতা এখন জরুরি

ছবি

জিপিএ ৫: পরিশ্রমের প্রতিবিম্ব, তবে ভবিষ্যৎ গড়ার মানদণ্ড নয়

ছবি

কোথায় হারালো বাবুই পাখি ও তাদের বাসা

ছবি

সাইবার বুলিয়িং-এর বাস্তবতা

প্রাণীর প্রতি সহমর্মিতা

tab

দেশীয় মাছের বিলুপ্তি ও পুনরুদ্ধার উদ্যোগ

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

মাছ প্রোটিন, কোলাজেন, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎকৃষ্ট উৎস। ভৌগোলিক কারণে নদী-নালা, খাল-বিলঘেরা বাংলাদেশ যুগে যুগে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতিতে মাছকে বিশেষ স্থানে বসিয়েছে। সেই আনন্দ ও প্রাচুর্যের প্রতিফলনই আমাদের চিরচেনা প্রবাদ “মাছে ভাতে বাঙালি”। কিন্তু প্রকৃতির সেই উদার উপহার আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। দেশে বিদ্যমান প্রায় ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ ও ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের একটি বড় অংশই বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়। একসময় মাছ উৎপাদন ও রপ্তানিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করেছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয়ও কমেছে। পাশাপাশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে হাজারো মৎস্যজীবী পরিবারের জীবিকা, হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য।

যদিও সরকার মৎস্য সংরক্ষণ আইন, জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ২০১৪, জাতীয় জলাভূমি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে তবে যথাযথ প্রয়োগ ও কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাবে এসব উদ্যোগ কাক্সিক্ষত ফল দিচ্ছে না। সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে নদী ড্রেজিং, জিনগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ, বিভিন্ন সংরক্ষণ প্রকল্প শুরু হলেও বাস্তবায়ন দুর্বল হওয়ায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। তবে আশার খবরও রয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমে মেনি, ভেদা, মৃগেলসহ বহু দেশীয় মাছ আবার ফিরতে শুরু করেছে। সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহের পুকুরে আবার দেখা মিলছে হারিয়ে যাওয়া মাছের। রাজশাহী, বগুড়া ও চট্টগ্রামের হ্যাচারিগুলোতে কৈ, শোল, গজার, বাটা সহ আরও অনেক প্রজাতি সফলভাবে উৎপাদিত হচ্ছে।

সর্বোপরি, দেশীয় মাছের পুনর্জাগরণই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করা এবং হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা–এটাই হবে বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতি, জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য রক্ষার সবচেয়ে বড় সাফল্য। মাছে ভাতে বাঙালি এই পরিচয় যেন চিরদিন অটুট থাকে।

লাবনী আক্তার শিমলা

back to top