alt

অপর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট

: মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাস্তায় বের হলে একজন নারীর প্রধান দুশ্চিন্তা যানজট বা নিরাপত্তা নয়, বরং ‘টয়লেট’। শুনতে সাধারণ মনে হলেও, বিভাগীয় শহর রাজশাহী শুধু নয়; টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সমগ্র দেশজুড়ে এটি আজ এক নীরব জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়। শহরের জৌলুস বাড়ছে, কিন্তু ফুটপাত বা পাবলিক প্লেসে একজন নারী, শিশু বা প্রবীণ কিংবা প্রতিবন্ধী যখন নিরাপদ শৌচাগার খুঁজে পান না, তখন এই ব্যর্থতা আর কেবল ‘ব্যবস্থাপনার ত্রুটি’ থাকে না। এটি সংবিধান লঙ্ঘন এবং নারীর প্রতি স্পষ্ট রাষ্ট্রীয় বৈষম্য।

ওয়াটারএইড এবং অ্যাকশনএইড-এর বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য। অ্যাকশনএইড-এর এক সমীক্ষা মতে, নিরাপত্তা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ নারী পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতেই চান না।

এর ফলাফল কী? চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখার ফলে নারীদের মূত্রথলিতে ব্যাকটেরিয়া বাড়ে। যা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ই. কোলাই জনিত ইউটিআই সৃষ্টি করে। নারীদের শারীরিক গঠনের কারণে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি পুরুষদের চেয়ে দশগুণ বেশি। বারবার এই সংক্রমণ কিডনি বিকল হওয়ার মতো প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করছে। সেই সঙ্গে মাসিকের সময় নিরাপদ টয়লেটের অভাবে প্রজননতন্ত্রের জটিল সংক্রমণ বাড়ছে। অর্থাৎ, স্রেফ একটি টয়লেটের অভাবে আমরা নারীদের ঠেলে দিচ্ছি দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

সুতরাং, এই সংকট নিরসনে কেবল কিছু বাজেট বরাদ্দই যথেষ্ট নয়। স্থানীয় সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। ‘মর্যাদার শৌচাগার’ নিশ্চিত করা কোনো দয়া নয়, এটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এখনই সময়, স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে নারীর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের অংশ হিসেবে গণ্য করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। অন্যথায়, টেকসই উন্নয়নের সব দাবি এই অপরিচ্ছন্ন টয়লেটের গর্তেই হারিয়ে যাবে।

শামীউল আলীম শাওন

ছবি

এলপিজি ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি

কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে

সঙ্গীত ও শরীরচর্চা: সুস্থ জীবনের দুই স্তম্ভ

কৃষিতে নতুন প্রজন্মের প্রত্যাবর্তন: আশার ইঙ্গিত

বিশ্বায়নের গ্রাসে আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি

ছবি

বর্ষায় পদ্মাতীরের মানুষদের দুর্বিষহ জীবন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তন চাই

ভেঙে পড়া পুকুরপাড়ের রাস্তায় গ্রামবাসীর দুর্বিষহ জীবন

ছবি

ছয় কুড়ি বিল আর নয় কুড়ি কান্দা: প্রকৃতির সাথে গাঁথা টাঙ্গুয়ার মানুষের ভাগ্য

ময়মনসিংহকে যানজটমুক্ত শহর গড়ে তোলার দাবি

ছবি

মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা কেন বাড়ছে?

ছবি

নিরাপদ ভোজ্য তেল ও ভিটামিন সমৃদ্ধকরণ

হাওর অঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের প্রয়োজন

কসমেটিক সংস্কৃতি : সুন্দর হওয়ার চাপ নারীর মানসিক স্বাস্থ্যে কী করছে

মামলার রায় ও আইনের ভাষা হোক বাংলা

বেকারত্বের অভিশাপ বাংলাদেশের মাথায়

ছবি

ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য : মানুষের আচরণ নাকি সিস্টেমের ব্যর্থতা?

ছবি

মশার কয়েলের ধোঁয়া : ঘরের বাতাসের নীরব বিপদ

রাবির হলের খাবারে স্বাস্থবিধির সংকট

কুষ্টিয়া স্টেশনে যাত্রী দুর্ভোগ

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর প্রবেশমুখ : টিনঘরে বন্দী সৌন্দর্য, সংস্কারের দাবি

ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিরসনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শিক্ষা

ছবি

ভূমিকম্প : ঝুঁকি ও অরক্ষিত বাস্তবতা

ছবি

দখলমুক্ত ফুটপাত চাই

ভূমিদস্যুদের প্রকোপে অতিষ্ঠ কেরানিগঞ্জবাসী

বাকৃতিতে নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন

যৌতুক প্রথা: এক সামাজিক অভিশাপের নীরব বিস্তার

দেশের রাজনীতির তিন দিগন্ত

ছবি

দেশীয় মাছের বিলুপ্তি ও পুনরুদ্ধার উদ্যোগ

ছবি

নয়া জাগরণের পথে দেশের ফুটবল

শিশুদের খেলার জায়গায় স্থায়ী মঞ্চ নয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য

অগ্নিনির্বাপণে প্রস্তুতির ঘাটতি আমাদের বড় বিপদ

সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য দূর হবে কবে?

ছবি

নারী কৃষকের অবদান ও স্বীকৃতি

ছবি

অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনে বাড়ছে নদীভাঙন

tab

অপর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট

মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাস্তায় বের হলে একজন নারীর প্রধান দুশ্চিন্তা যানজট বা নিরাপত্তা নয়, বরং ‘টয়লেট’। শুনতে সাধারণ মনে হলেও, বিভাগীয় শহর রাজশাহী শুধু নয়; টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সমগ্র দেশজুড়ে এটি আজ এক নীরব জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়। শহরের জৌলুস বাড়ছে, কিন্তু ফুটপাত বা পাবলিক প্লেসে একজন নারী, শিশু বা প্রবীণ কিংবা প্রতিবন্ধী যখন নিরাপদ শৌচাগার খুঁজে পান না, তখন এই ব্যর্থতা আর কেবল ‘ব্যবস্থাপনার ত্রুটি’ থাকে না। এটি সংবিধান লঙ্ঘন এবং নারীর প্রতি স্পষ্ট রাষ্ট্রীয় বৈষম্য।

ওয়াটারএইড এবং অ্যাকশনএইড-এর বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য। অ্যাকশনএইড-এর এক সমীক্ষা মতে, নিরাপত্তা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ নারী পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতেই চান না।

এর ফলাফল কী? চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখার ফলে নারীদের মূত্রথলিতে ব্যাকটেরিয়া বাড়ে। যা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ই. কোলাই জনিত ইউটিআই সৃষ্টি করে। নারীদের শারীরিক গঠনের কারণে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি পুরুষদের চেয়ে দশগুণ বেশি। বারবার এই সংক্রমণ কিডনি বিকল হওয়ার মতো প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করছে। সেই সঙ্গে মাসিকের সময় নিরাপদ টয়লেটের অভাবে প্রজননতন্ত্রের জটিল সংক্রমণ বাড়ছে। অর্থাৎ, স্রেফ একটি টয়লেটের অভাবে আমরা নারীদের ঠেলে দিচ্ছি দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

সুতরাং, এই সংকট নিরসনে কেবল কিছু বাজেট বরাদ্দই যথেষ্ট নয়। স্থানীয় সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। ‘মর্যাদার শৌচাগার’ নিশ্চিত করা কোনো দয়া নয়, এটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এখনই সময়, স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে নারীর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের অংশ হিসেবে গণ্য করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। অন্যথায়, টেকসই উন্নয়নের সব দাবি এই অপরিচ্ছন্ন টয়লেটের গর্তেই হারিয়ে যাবে।

শামীউল আলীম শাওন

back to top