মহাবিশ্ব রহস্যে ভরা হলেও বিজ্ঞান মানুষের সামনে সেই রহস্যের দরজা খুলে দিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানযাত্রার ইতিহাসে নারীরা যে অবদান রেখেছেন, তার বড় অংশই রয়ে গেছে উপেক্ষিত। বহু নারী বিজ্ঞানী যুগান্তকারী আবিষ্কার করেও স্বীকৃতি পাননি; কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের সহকর্মী পুরুষদের। রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন ডিএনএর স্পষ্ট ছবি তুলেছিলেন, যা ছাড়া ডিএনএর গঠন জানা সম্ভব ছিল না। কিন্তু স্বীকৃতি গেছে ওয়াটসন ও ক্রিকের নামে। নেটি স্টেভেনস প্রথম লিঙ্গ ক্রোমোজোম চিহ্নিত করেও দীর্ঘদিন অবহেলার শিকার হন। ইউনিস নিউটন ফুট গ্রিনহাউস প্রভাব ব্যাখ্যা করলেও বিজ্ঞান অঙ্গনে নারী হওয়ার কারণে তাকে গবেষণা পেশ করার সুযোগই দেওয়া হয়নি। জিন পার্ডি টেস্টটিউব বেবি প্রযুক্তির মূল কর্মী হয়েও নোবেল পুরস্কারের কৃতিত্ব থেকে বাদ পড়েছিলেন কেবল নারী হওয়ার কারণে।
এতসব অন্যায়ের পরও বিজ্ঞানকে আলোয় ভরিয়ে দিয়েছেন মাদাম কুরি, যিনি দুইবার নোবেলজয়ী। সাম্প্রতিক সময়ে ইমানুয়েল শার্পন্তিয়ে ও জেনিফার ডাউডনা ক্রিসপার প্রযুক্তির জন্য নোবেল পেয়েছেন, যা নতুন প্রজন্মের মেয়েদের সামনে শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
আজও পাঠ্যক্রম থেকে বাস্তব স্বীকৃতি-সব জায়গায় নারীর অবদান প্রাপ্য সম্মান পায় না। যোগ্যদের পিছনে ফেলে ভুল ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয় যে বিজ্ঞান শুধুই পুরুষের ক্ষেত্র। অথচ সত্য হলো-নারীরা না থাকলে আধুনিক বিজ্ঞানের অর্ধেক অধ্যায়ই অসম্পূর্ণ থেকে যেত। তাই ইতিহাসের গোপনে থাকা এই আলোর খণ্ডগুলোকে সামনে আনা জরুরি; যাতে নতুন প্রজন্ম জানে, বিজ্ঞান সবার, এবং নারীর অবদান ছাড়া বিজ্ঞানের আকাশ কখনোই পূর্ণ হতো না।
সামিহা তাসনিম