ভারতবর্ষের উপকূল ও নদনদীসংলগ্ন অঞ্চলে বহু প্রজন্ম ধরে মৎসজীবীরা তাদের জীবন ও সংস্কৃতি গড়ে তুলেছেন। তারা শুধু মাছ আহরণকারী নন, বরং জলজ বাস্তুতন্ত্রের সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষক ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের ধারক। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে প্রকৃতি ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের যুগপৎ আক্রমণে তাদের জীবনধারা সংকটাপন্ন। সমুদ্র, যা একসময় তাদের অন্নদাত্রী ছিল, আজ ভয়াবহ প্রতিকূলতা হয়ে উঠেছে।
মৎসজীবীদের জীবিকা সংকটের পেছনে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট নানা কারণ আছে। সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মাছের বিচরণক্ষেত্র পরিবর্তিত হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা বাড়ছে, জলের অম্লতা এবং দূষণ মাছের প্রজনন ও খাদ্য শৃঙ্খলে প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি, আধুনিক ট্রলার ও যান্ত্রিকীকরণের কারণে অতিরিক্ত মাছ আহরণ মৎস্য প্রজাতির সংখ্যা হ্রাস করছে। অতীতে স্থিতিশীল ও প্রাকৃতিক জ্ঞানভিত্তিক আহরণ ছিল, এখন ছোট মৎসজীবীরা গভীর সমুদ্রে ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছেন, ঋণের বোঝা বাড়ছে এবং জীবন-সংকট তৈরি হচ্ছে।
উপকূলীয় রাজ্যগুলোতে মৌসুম শেষে অনেক মৎসজীবী শূন্য হাতে ফিরে আসছেন। অর্থনৈতিক ক্ষতির সঙ্গে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে। এই সংকট মোকাবিলায় সরকারি, বেসরকারি ও নাগরিক উদ্যোগ একত্রে অপরিহার্য। টেকসই মৎস্য আহরণ নীতি গ্রহণ, প্রজননকালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ, নির্দিষ্ট জাল ব্যবহার, বিকল্প জীবিকার প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা, ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণ, কম সুদে ঋণ, স্বাস্থ্যবীমা ও আধুনিক প্রযুক্তি শেখানো-ধষষ এগুলো সমাধানের মূল উপায়। একই সঙ্গে মৎসজীবীদের ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানকে মূল্য দিতে হবে, যাতে মাছ আহরণ পরিবেশ-সহনশীল হয়।
সাদিয়া ইসলাম কাসফিয়া
আন্তর্জাতিক: পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিল আইএমএফ
আন্তর্জাতিক: মদ বিক্রি শুরু করলো সৌদি আরব
আন্তর্জাতিক: ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইনে যেভাবে ধস নামলো