দেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বহুদিন ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই খাত আবারও নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রির সুযোগ, সরকারি সহায়তা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহ-সব মিলিয়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে এক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলের কারিগর, তাঁতি, মৃৎশিল্পী, কাঠশিল্পী থেকে শুরু করে শহরের ছোট উদ্যোকরা-সবাই এখন নিজস্ব পণ্য সহজে বাজারে তুলতে পারছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তাদের পণ্যের প্রচার ও বিক্রি সহজ করেছে। এতে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, স্থানীয় উপকরণের ব্যবহার বাড়ছে, এবং গ্রামীণ অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্রিয় হচ্ছে।
তবে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কিছু বাধা এই খাতের বৃদ্ধিকে ধীর করে দিচ্ছে। অনেক উদ্যোক্তা এখনো পর্যাপ্ত মূলধন পান না, মানসম্মত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অনেক ক্ষেত্রে সীমিত, আর বড় বাজারে পৌঁছানোও সহজ নয়। বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ব্র্যান্ডিং, মান উন্নয়ন ও প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে আরও মনোযোগ প্রয়োজন। সঠিক পরিকল্পনা, সহজ শর্তে ঋণ, দক্ষতা উন্নয়ন, প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বাজার ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ-এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দেশের অর্থনীতিতে আরও বড় অবদান রাখতে পারবে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের এই পুনর্জাগরণ শুধু কর্মসংস্থানই বাড়াচ্ছে না, আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, গ্রামীণ নৈপুণ্য ও প্রাচীন কারুশিল্পকেও নতুন করে টিকিয়ে রাখছে। তাই এই খাতে বিনিয়োগ ও সহায়তা বাড়ানো সময়ের অন্যতম বড় দাবি!
কাজী মাধুর্য রহমান