নতুন বছরের রঙিন আলো আর আতশবাজির শব্দ মানুষের আনন্দের প্রকাশ হলেও প্রশ্ন থেকে যায়, এই আনন্দ কতটা নিরাপদ? মুহূর্তের উচ্ছ্বাসে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, এই তীব্র শব্দ ও আলো শুধু প্রকৃতি ও প্রাণীকুল নয়, অসুস্থ মানুষ, শিশু ও বয়স্কদের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। বিশেষ করে হৃদরোগীরা এই শব্দ সহ্য করতে পারেন না, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ঢাকায় ফানুস উড়ানো ২০১৮ সালেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তবে বাস্তবায়ন খুবই সীমিত। বিপজ্জনক আতশবাজি, নিম্নমানের পটকা, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং নিরাপত্তা বিধি না মানার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। জরুরি সেবা পৌঁছাতে দেরি হলে ক্ষতিও আরও বাড়ে। গত বছর আতশবাজির কারণে একটি হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর মৃত্যু ঘটে। তীব্র ঠান্ডা ও বরফ থেকে বাঁচতে প্রতিবছরই অতিথি পাখির আগমন ঘটে আমাদের দেশে। অথচ থার্টিফার্স্ট নাইটের বিবেকহীন খামখেয়ালিপনা তাদের জীবন কেড়ে নেয়। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হওয়া সত্ত্বেও যদি আমরা এমন বিবেকহীন কাজ করি, তা কতটা যৌক্তিক?
মানুষ ও প্রকৃতির ক্ষতি করে ফানুস উড়ানো ও আতশবাজি ফাটানো এসব আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। আমরা চাইলে পরিবেশবান্ধব ও সৃজনশীল উপায়ে উৎসবকে অর্থবহ করতে পারি-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফুল–পাতা ও প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে সজ্জা, গাছ লাগানো, পরিচ্ছন্নতা অভিযান বা সামাজিক সহায়তামূলক উদ্যোগ। এ বছর আমরা শব্দ ও বায়ু দূষণকারী আতশবাজি ও ফানুস ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করার আশা রাখি। বিশেষ করে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।
নতুন বছর উদযাপিত হোক আলো, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার মাধ্যমে।
মিথুন শিকদার