জাল নোটের বিস্তার নীরবে হলেও ক্রমেই দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক আস্থাকে বিপন্ন করে তুলছে। প্রতিদিনের লেনদেনে সাধারণ মানুষ যে ঝুঁকির মুখে পড়ছে তা আর অবহেলার সুযোগ রাখে না। প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং অসাধু চক্রের তৎপরতায় জাল নোট আজ একটি জাতীয় উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই সমস্যার মূল কারণ একাধিক। দ্রুত মুনাফার লোভে সক্রিয় জাল নোট চক্র, সীমিত নজরদারি, এবং সাধারণ মানুষের অসচেতনতা সব মিলিয়ে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে খুচরা বাজার, গণপরিবহন ও সীমান্তবর্তী এলাকায় জাল নোট ছড়ানোর ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। লেনদেনের সময় অসতর্কতা এই অপরাধকে আরও সহজ করে দিচ্ছে।
জাল নোটের ক্ষতি কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। এর ফলে বাজারে আর্থিক আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা বাড়ে এবং শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো ভুক্তভোগী ব্যক্তি আইনগত জটিলতায় পড়ে চরম হয়রানির শিকার হন, যদিও তিনি অপরাধী নন।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ অপরিহার্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জাল নোট চক্র চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত আসল নোট শনাক্তকরণে জনসচেতনতা বাড়ানো। গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আর্থিক খাতকে একযোগে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও লেনদেনের সময় সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।
জাল নোট প্রতিরোধ কোনো একক প্রতিষ্ঠানের কাজ নয়; এটি রাষ্ট্র, সমাজ ও নাগরিক সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। এখনই প্রয়োজন সচেতনতা ও কঠোরতার সমন্বয়ে দৃঢ় পদক্ষেপ। অন্যথায়, এই নীরব হুমকি আরও গভীর সংকটে পরিণত হবে যার মূল্য দিতে হবে পুরো দেশকেই।
ফাহমিদা ইয়াসমিন মায়েদা
খেলা: মোহামেডান-কিংস ম্যাচ ড্র