ঢাকার মতো জনবহুল শহর এখন শুধু কর্মব্যস্ততার নয়, ভয় আর আতঙ্কেরও নগরী হয়ে উঠছে। প্রতিদিন কেউ না কেউ ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন-কখনো মোবাইল, কখনো ব্যাগ, কখনো প্রাণ। কিন্তু ৫০ বছর বয়সী এক মায়ের রক্তাক্ত চিৎকার যেন নতুন করে প্রশ্ন তোলে-আমরা আসলে কোন পথে যাচ্ছি?
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মিয়াখানি গ্রামের ফাতেমা বেগম-একজন সাধারণ গ্রামীণ নারী। গত রবিবার (২রা নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের বরগাছি এলাকা থেকে একটি বাসে করে ঢাকায় রওনা দেন। গাজীপুরের টঙ্গী ফ্লাইওভারের ওপর রাতের অন্ধকার দুরীভূত হয়ে সকাল হয়ে আসছিল, আর ঠিক তখনই শুরু হয় তার জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়। যারা তাঁর কাছ থেকে জীবনের নিরাপত্তা ছিনিয়ে নিল, তারা এখনো হয়তো অবলীলায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ঢাকার আলো ঝলমলে ফ্লাইওভারগুলো কি আসলে ঢেকে রাখছে মানবতার অন্ধকারকে?যেখানে সাহায্যের হাতের বদলে দেখা যায় মোবাইল ক্যামেরা-সেই সমাজে আমরা নিরাপদ কাকে বলব? ফাতেমা বেগম এখন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর হাতের রগ কাটা, কিন্তু তাঁর আত্মা এখনও অটুট। এক মায়ের বেঁচে থাকার লড়াই চলছে। কিন্তু এই ঘটনার প্রতিটি ফোঁটা রক্ত আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ আর প্রশাসনের বিবেককে প্রশ্ন করে-
কেন এখনো ছিনতাইকারীরা রাস্তায়?
কেন এখনো “যাত্রী নিরাপত্তা” শব্দটি শুধু স্লোগানেই বন্দী?
কেন এক মায়ের রক্তে আমাদের শহর রঙিন হলো, অথচ আমরা নির্বিকার? এই শহর হয়তো উন্নয়নের গল্প বলে, কিন্তু তার ভিতরে লুকিয়ে আছে ফাতেমা বেগমের মতো অসংখ্য রক্তাক্ত মা, বোন আর মেয়ে।
আবু হানিফ বিন সাঈদ
খেলা: মোহামেডান-কিংস ম্যাচ ড্র