কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার খিরা বহু বছর ধরে স্বতন্ত্র স্বাদ, রঙ, নরম ও দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য পরিচিত। এটি জলীয় উপাদানে সমৃদ্ধ, শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং কচি অবস্থায় খাওয়া হয়। তাড়াইলের মাটি, পানি ও আবহাওয়া খিরা চাষের জন্য অনন্যভাবে উপযোগী। আকারে লম্বাটে, খোসা সবুজ ও ভিতর নরম, পানি প্রায় ৯৫ শতাংশ, এবং বীজ ছোট। এতে ভিটামিন বি ও সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। হজম সহজ করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ত্বককে সতেজ রাখে।
তাড়াইলের বিভিন্ন গ্রামে প্রতিবছর আশ্বিন–কার্তিক মাসে খিরা চাষ হয়। কৃষকরা হেমন্তের ধান কাটার পর মাটির প্রস্তুতি নিয়ে বীজ বপন করে, রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করে ফসল বৃদ্ধি করে। এতে প্রতি বছর কৃষকরা ৩–৪ লক্ষ টাকা আয় করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হন। স্থানীয় ও আশপাশের বাজারে তাড়াইলের খিরার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ঢাকার কাওরান বাজার, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর বাজারে খিরা সরবরাহ করা হয়। স্বাদ ও মানের কারণে দাম তুলনামূলক বেশি হলেও দেশজুড়ে জনপ্রিয়। কৃষক ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খিরা তাড়াইলের অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাত। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। স্বীকৃতি পেলে উৎপাদন বাড়বে, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে এবং স্থানীয় ঐতিহ্য সংরক্ষিত হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কৃষি কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজের সদস্যরা জিআই স্বীকৃতি প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তাড়াইলের খিরা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে উপজেলার কৃষি অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও উন্নত বীজ, সার, সেচ ও কীটনাশক সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি ও রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
শরীফুল ইসলাম
খেলা: মোহামেডান-কিংস ম্যাচ ড্র