অটোরিকশা যেন বিষফোড়া

রাস্তায় বের হলে এখন চারদিকে কেবল অটোরিকশার মেলা। শহরের গলি থেকে রাজপথ সবখানেই এদের অবাধ বিচরণ। আগে রিকশার টুং টাং শব্দ ছিল। এখন আছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার যান্ত্রিক আওয়াজ। এটি এখন আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ একে বলছেন সড়কের বিষফোড়া।

বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এই বাহনটি এক অদ্ভুত সংযোজন। এর কোনো ফিটনেস সনদ নেই, চালকের কোনো প্রশিক্ষণ নেই, ট্রাফিক আইনের কোনো বালাই নেই। আবার হুট করে ব্রেক কষে, ডানে বা বামে মোড় নেয় কোনো সংকেত ছাড়াই। পেছনের গাড়িটি তখন বিপদে পড়ে। দুর্ঘটনার শিকার হয় সাধারণ মানুষ। হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে খোঁজ নিলে দেখা যায় অধিকাংশ দুর্ঘটনাই অটোরিকশার কারণে ঘটেছে। এদের চাকা ছোট কিন্তু গতি বেশি। ফলে সামান্য ধাক্কাতেই উল্টে যায়। যাত্রীরা গুরুতর আহত হন। পঙ্গুত্ব বরণ করেন অনেকে।

প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালায়। দু-একদিন রাস্তা ফাঁকা থাকে, এরপর আবার আগের চিত্র। এই ইঁদুর-বিড়াল খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। একটি টেকসই নীতিমালা প্রয়োজন। অটোরিকশার আমদানি বন্ধ করে ব্যাটারির কারখানাগুলোতে নজরদারি বাড়াতে হবে। হাইওয়ে বা প্রধান সড়কে এদের চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। স্থানীয় সরকার ও ট্রাফিক বিভাগকে কঠোর হতে হবে। উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন আমরা দেখি। অথচ আমাদের সড়কগুলো মধ্যযুগীয় বাহনে পূর্ণ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজন। সুস্থ ও নিরাপদ শহরের স্বার্থে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়।

আল শাহারিয়া

সম্প্রতি