শহরে মৌমাছি কোথায়

শহরের ফুটপাথ ও বাগানগুলো রঙিন ফুলে সাজলেও সেই পরিচিত গুঞ্জন মৌমাছির ডানা ঝাপটানোর সুর অনুপস্থিত। শহরের দূষিত বাতাস, কংক্রিটের বেড়ে যাওয়া এলাকা, কেটে ফেলা বুনো গাছপালা এবং অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার মৌমাছির জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে। হাইব্রিড ও সৌন্দর্য নির্ভর ফুল কম সুগন্ধ, কম মধু এবং পরাগায়নের জন্য অযোগ্য, ফলে মৌমাছি সহজে খাদ্য খুঁজে পায় না। নগরী যতই ফুলে সজ্জিত হোক না কেন, মৌমাছি না থাকলে ফুলের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হয় এবং পুরো নগর বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গবেষণা দেখিয়েছে, দূষিত বাতাস ও ক্ষতিকর কীটনাশক মৌমাছির নেভিগেশন ও বেঁচে থাকার ক্ষমতা হ্রাস করছে। এছাড়া শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, হ্রাসপ্রাপ্ত সবুজ এলাকা এবং অনুপযুক্ত ফুলের প্রজাতি মৌমাছিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। বিশ্বের খাদ্যফসলের ৭৫% পরাগায়নের ওপর নির্ভরশীল এবং মৌমাছি এই প্রক্রিয়ার মূল চালিকা শক্তি। মৌমাছি না থাকলে খাদ্যের বৈচিত্র্য ও উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তবে আশার দিকও আছে। নেদারল্যান্ডসের উদাহরণ দেখায়, দুই বছরে দেশীয় ফুল রোপণ ও দুই লাখের বেশি “বি হোটেল” স্থাপনের মাধ্যমে মৌমাছির সংখ্যা ৫০% বৃদ্ধি পায়। শহরে মৌমাছি ফিরিয়ে আনার জন্য রাস্তার ধার, পার্ক ও ছাদবাগানে দেশীয় ফুল লাগানো, ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার সীমিত করা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষও ঘরের বারান্দা বা ছাদে দেশীয় ফুল ও ছোট “বি হাউস” স্থাপন করে সহায়তা করতে পারে। শহরের ফুল তখনই অর্থপূর্ণ যখন মৌমাছি তার উপর ডানা ঝাপটায়। শহরকে জীবন্ত রাখতে হলে ফুলের সঙ্গে মৌমাছিকেও ফিরিয়ে আনা অপরিহার্য।

উম্মে সালমা রহমান কাশফিয়া

সম্প্রতি