শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলো যেমন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও তিস্তা ব্যাপকভাবে বালুচর বা চর দিয়ে পূর্ণ হয়। এর ফলে নৌযান চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। নদীর পলি অব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত খননের অভাবে নৌপথের নাব্যতা কমছে, যা পণ্য পরিবহন ব্যাহত করছে এবং দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের প্রায় ৭৫ শতাংশ পণ্য নৌপথে পরিবহন হয়। শুষ্ক মৌসুমে নাব্য নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩,৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কমে আসে, ফলে ফেরি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, নৌযান আটকে পড়ে এবং পণ্য খালাসে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। দেশের নদীমাতৃক প্রকৃতি এবং অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের নির্ভরশীলতা নাব্যতা সংকটকে বড় হুমকি হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং পরিকল্পনায় ২০২৫ সালের মধ্যে ১৭৮টি নদী খননের লক্ষ্য ছিল, তবে অগ্রগতি ধীরগতির। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর আলোকে নদী শাসন, পানি ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃসীমান্ত পানি বন্টন চুক্তি বাস্তবায়ন জরুরি। শুষ্ক মৌসুমে চর জেগে ওঠা এবং নৌপথের সংকট স্মরণ করিয়ে দেয়, নৌপথ শুধুমাত্র পরিবহনের মাধ্যম নয়, এটি দেশের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতির ধমনী। নিয়মিত খনন, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বিজ্ঞানভিত্তিক পলি ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে নদীগুলো পুনরায় জীবন্ত হয়ে উঠবে এবং নৌযান চলাচলের জন্য উপযুক্ত হবে।
নাহিদ হাসান নাঈম