বন সম্পদ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় যখন বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বনায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন বিভিন্ন অজুহাতে ধ্বংস করা হচ্ছে বাংলাদেশের বনাঞ্চল। প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বন উজাড় করা হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশে ২৫ শতাংশ বন থাকার কথা, বাস্তবে তা মাত্র ১০ শতাংশই রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে খাতা কলমে দেখানো হিসাব বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।

বন ও পরিবেশ গবেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বন সম্পদ রক্ষায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই ব্যক্তিস্বার্থে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে বনাঞ্চল তুলে দিচ্ছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে কক্সবাজারে ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বন উজাড় হয়েছে, যার মধ্যে ১০ শতাংশ রোহিঙ্গাদের হাতে এবং বাকি ৯০ শতাংশ স্থানীয়দের মাধ্যমে। বনায়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ ও উদ্যোগ নেওয়া হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা ব্যর্থ হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে দেশে ৭ কোটি ৯০ লাখ ৮৫ হাজার ৩০০টি গাছের চারা লাগানো হয়েছিল, অধিকাংশই টেকেনি।

বন রক্ষায় আইনের দুর্বলতাও একটি সমস্যা। তাই আইনের বিধান কঠোর ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করা জরুরি। সাধারণত সংরক্ষিত বন রক্ষার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের হলেও বন ও বন সম্পদ রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছেন। বনভূমি রক্ষায় নিয়োজিতরাই যদি ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক অশনি সংকেত। বনভূমি জবর দখল ও উজাড়ে সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের যথাযথ তদন্ত ও শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আব্বাসউদ্দিন আহমদ

সম্প্রতি