alt

সারাদেশ

সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটির কদর দেশ-বিদেশে

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ : বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

সিরাজগঞ্জ : শীতল পাটি বুননে ব্যস্ত নারী -সংবাদ

গরমে শীতল পরশ দেয়া সিরাজগঞ্জের শীতল পাটির কদর বেড়েছে । প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পাটির দাম ও চাহিদা দেশজুড়ে বেড়েছে । ফলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা অনেকটাই উচ্ছসিত । এই শিল্পকে আরো গতিশীল বাজার সৃষ্টির জন্য সরকারি সহযোগীতা চেয়েছেন পাটি শিল্পীরা। শীতল পাটির কারিগরেরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনও এই পাটি তৈরি করছেন অনেকে। এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্প। মুর্তা বা পাটি বেত নামক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে এটি তৈরি হয় । আগে গ্রামে মাদুর ও চাদরের পরিবর্তে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সাজ সজ্জা করা মাদুরকে নকঁশিকাথা পাটিও বলা হয়। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, রায়গঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হচ্ছে শীতল পাটি। এই সব উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অপেক্ষকৃত অনুর্বর জমিতে পাটি তৈরির প্রধান উপকরণ পাটি বেত চাষ হচ্ছে। পাটিশিল্পের কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেই বৃটিশ আমল থেকেই দেশে বিদেশে জেলার শীতল পাটি সমাদৃত হয়ে আসছে। এখানকার মুর্তাবেতির শীতল পাটির চাহিদাও প্রচুর। কামারখন্দ উপজেলার চাদপুর, রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া ও দরবস্ত গ্রামের মানুষ শীতল পাটি বুনে তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন।

অতীতে শীতলপাটির বিছানায় সুখ খুঁজতেন মানুষ” কালক্রমে এর কদর কমলেও সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের চাঁদপুর, সদর উপজেলার চুনিয়া হাটি, রায়গঞ্জে ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া ও দরবস্ত গ্রামে শতাধিক পরিবার এখনও এ পাটি বুনন ও বিক্রিতে জড়িত। নিপুণ হাতে নারীরা বোনেন শীতলপাটি। নানা নকঁশার এ পাটির কদর দেশজুড়ে। দুই দশক আগেও গ্রীষ্মকালে গ্রামের ঘরে ঘরে এর অনেক ব্যবহার ছিল। জেলার রায়গঞ্জ ও কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ পরিবার এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে শীতলপাটি কিনে নেন। সংসারের কাজের ফাঁকে বাড়ির নারীরাই তৈরি করেন নান্দনিক পাটি। এলাকাগুলোতে কয়েক দশক আগেও আয়ের প্রধান উৎস ছিল শীতলপাটি। গরমে প্রশান্তি পেতে শীতলপাটি ব্যবহার করলেও বিয়ে, গায়ে হলুদ, খাৎনাসহ নানা অনুষ্ঠানে এর ব্যাপক ব্যবহার ছিল। এখন তা অনেকটাই কমে গেছে।

শীতলপাটির গ্রাম ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আরো কথা বলে জানা গেছে, প্লাস্টিক পাটির আগ্রাসনে এ পাটির কদর দিন দিন কমতে শুরু করেছে। একসময় পাটি বুনে যাদের সংসার চলত, তারা অনেকেই এখন এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে আটঘরিয়া ও দরবস্ত চাঁদপুর ও চুনিয়া হাটি এলাকায় এখনও প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের নারী পুরুষরা পূর্বসূরিদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। সময় ও খরচের তুলনায় দাম কম হওয়ায় এখন আর এ কাজে লাভ হয় না বলে জানান তারা। পাটি তৈরির কারিগর কল্পনা ,পাপ্পু সরকারসহ কয়েকজন জানান, এখানে শীতলপাটি,বিছানার পাটি ও আসন পাটি তৈরি করা হয়। ৯০ বছর বয়সী দুলাল চন্দ্র ভৌমিক বলেন ছোট বেলা থেকে তৈরি করে আসছেন এ শীতল পাটি। তিনি বলেন, শীতল পাটি তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। বাবা দাদারা পাটি বুনতেন। তাদের দেখে এ পেশায় জড়ান। তিনি আরো বলেন, এক সময় শীতল পাটির খুব কদর ছিলো। তাদের কাছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার আসতো। অনেক পাইকাররা তাদের থেকে পাটি ক্রয় করে নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করতেন। এখনও তাদের শীতল পাটির কদর পুরো দেশ জুড়ে রয়েছে। তিনি জানান, এই পাটি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যায় ।

চাদপুর গ্রামের স্বপ্না রানী নামে জানান, ছোট বেলা থেকে পাটি বুনে আসছি। একজন মেয়ে সপ্তাহে একটি পাটি বুনা যায় এর এতে মুজুরি আসে ৫-৬শ টাকা । তিনি বলেন, এখন আমাদের শীতল পাটির কদর আগের মতো নেই। সরকারিভাবে সহযোগীতা করা হলে এ শিল্প টিকে থাকবে।

ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া গ্রামের টুম্পা রানী সরকার বলেন, একটি পাটি বানাতে অন্তত সাত দিন সময় লাগে। বিছানায় ব্যবহারের একেকটি শীতলপাটি বিক্রি হয় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। দিন দিন চাহিদা কমায় তারাও কম তৈরি করছেন। একই এলাকার বুলবুলি রানী সরকার বলেন, শীতলপাটির উৎপাদন খরচ বাড়লেও দাম বাড়ছে না। মানুষের চাহিদা দিন দিন কমছে। তবুও নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তৈরি করছেন। আগে গ্রামের হাটে পাটির কদর থাকলেও এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চলে আসায় গরমেও ব্যবহার কমেছে। এখন গাজীপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকার এসে পাটি নিয়ে যান। পাটির কারিগররা বলেন, অনেকে পুঁজির অভাবে কাজ কম করে। চাহিদা কমতে থাকা এবং কারিগরদের পুঁজির অভাবে এ কাজে মানুষের আগ্রহ কমতে শুরু করেছে।

গরমে পাটির বাজার চাঙ্গা থাকায় উঠান ও ঘরের বারান্দায় হরেক নকশায় বুননে দিন-রাত পাড় করছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সীরা। বর্তমানে প্রতিটি পাটি পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা মূল্যে। এতে মজুরি বাদে তেমন লাভ না হওয়ায় অন্যান্য দেশে বাজারজাতসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করলেন পাটিশিল্পীরা। সনাতন ধর্মালম্বী এসব এলাকার প্রায় দেড় থেকে দুই সহস্রাধিক মানুষের এখনও পেশা টিকিয়ে রেখেছেন । যেখানে নারীরাও জীবিকার পথ খুঁজে পেয়েছেন। তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে স্বল্প মজুরিতে অসন্তষ্ট তারা। পাশাপাশি এ শিল্পে প্লাস্টিকের পাটির বিরূপ প্রভাব পড়েছে। চলতি গ্রীষ্মের প্রধান মৌসুমে শীতল পাটির চাহিদা বেশ, বললেন পাটি শিল্পীরা।

এ ব্যপারে সিরাজগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, শীতল পাটির বিষয়ে সরকারিভাবে কোন সুযোগ সুবিধা এই দপ্তরের মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঈশ্বরদীতে বালু মহাল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬

ঈশ্বরদীতে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা আটক ৩.

গজারিয়ায় অবৈধ বালুমহাল থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

ডসির স্বাক্ষর জাল কক্সবাজারে ভুয়া সাংবাদিক আটক

বেগমগঞ্জে তিন প্রজাতির ৭৩টি কচ্ছপ উদ্ধার

নড়াইলের হত্যাকাণ্ডের জের ২০টি বাড়িতে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট

হবিগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় দুই বাইক আরোহী নিহত

ছবি

কুষ্টিয়ার সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

মহেশপুর ১২০ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস

ছবি

বড়াইগ্রামে ঝড়ে দেওয়াল ভেঙে শিশুর মৃত্যু

কালীগঞ্জের কৃতীসন্তান মোহাম্মদ রশীদুজ্জামান আর নেই

ছবি

তিস্তা পাড়ের বাদাম নিয়ে বিপাকে গঙ্গাচড়ার কৃষকরা

ছবি

পানির স্রোতে ভেঙে গেল হিলি-ঘোড়াঘাট নির্মাণাধীন বিকল্প সড়ক, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

সিরাজদিখানে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে একজনের মৃত্যু

ছবি

বরাতী হাই স্কুলের মাঠে হাঁটুপানি চরম দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

বন্যহাতির আক্রমণে দুইজনের মৃত্যু

চসিক পরিচালিত স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য চালু হলো স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড

খাবার হোটেলে ভাঙচুর, ২ জনকে কুপিয়ে জখম গ্রেপ্তার ৩

ছবি

যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ব্রি ধান ৯২ চাষ, বিঘাপ্রতি ফলন ২৯ মণ

পুলিশ দেখে দৌড়ে পালাতে গিয়ে যুবলীগ নেতার মৃত্যু

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্বশুর-বউমার মৃত্যু, শ্বাশুড়ি চিকিৎসাধীন

রামপাল এসিল্যান্ড অফিসে চোরের হানা

ছবি

ফেনী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া পরিবারকে উদ্ধার করল বিজিবি

শ্বশুরবাড়িতে বিষপানে ১ ব্যক্তির আত্মহত্যা

ছবি

আদমদীঘিতে প্রস্তুত চাহিদার চেয়েও বেশি কোরবানির পশু

দাউদকান্দিতে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

বজ্রপাতে স্কুলছাত্রী নিহত, আহত ২

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ট্রাকচালক নিহত

সখীপুরে অবৈধ পাঁচ করাতকল উচ্ছেদ

ছবি

ভাঙন আতঙ্কে বকশীগঞ্জের নদী পারের মানুষ

মহাদেবপুরে সড়কের পাশের ড্রেন বাঁকা করে নির্মাণের অভিযোগ

জমি বিরোধের জের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু

টঙ্গীবাড়ীতে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবি

দৌলতপুরে জেলেদের ভিজিএফের চাল কম দেয়ার অভিযোগ

tab

সারাদেশ

সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটির কদর দেশ-বিদেশে

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জ : শীতল পাটি বুননে ব্যস্ত নারী -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

গরমে শীতল পরশ দেয়া সিরাজগঞ্জের শীতল পাটির কদর বেড়েছে । প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পাটির দাম ও চাহিদা দেশজুড়ে বেড়েছে । ফলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা অনেকটাই উচ্ছসিত । এই শিল্পকে আরো গতিশীল বাজার সৃষ্টির জন্য সরকারি সহযোগীতা চেয়েছেন পাটি শিল্পীরা। শীতল পাটির কারিগরেরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনও এই পাটি তৈরি করছেন অনেকে। এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্প। মুর্তা বা পাটি বেত নামক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে এটি তৈরি হয় । আগে গ্রামে মাদুর ও চাদরের পরিবর্তে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সাজ সজ্জা করা মাদুরকে নকঁশিকাথা পাটিও বলা হয়। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ, রায়গঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হচ্ছে শীতল পাটি। এই সব উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অপেক্ষকৃত অনুর্বর জমিতে পাটি তৈরির প্রধান উপকরণ পাটি বেত চাষ হচ্ছে। পাটিশিল্পের কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সেই বৃটিশ আমল থেকেই দেশে বিদেশে জেলার শীতল পাটি সমাদৃত হয়ে আসছে। এখানকার মুর্তাবেতির শীতল পাটির চাহিদাও প্রচুর। কামারখন্দ উপজেলার চাদপুর, রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া ও দরবস্ত গ্রামের মানুষ শীতল পাটি বুনে তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন।

অতীতে শীতলপাটির বিছানায় সুখ খুঁজতেন মানুষ” কালক্রমে এর কদর কমলেও সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের চাঁদপুর, সদর উপজেলার চুনিয়া হাটি, রায়গঞ্জে ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া ও দরবস্ত গ্রামে শতাধিক পরিবার এখনও এ পাটি বুনন ও বিক্রিতে জড়িত। নিপুণ হাতে নারীরা বোনেন শীতলপাটি। নানা নকঁশার এ পাটির কদর দেশজুড়ে। দুই দশক আগেও গ্রীষ্মকালে গ্রামের ঘরে ঘরে এর অনেক ব্যবহার ছিল। জেলার রায়গঞ্জ ও কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ পরিবার এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে শীতলপাটি কিনে নেন। সংসারের কাজের ফাঁকে বাড়ির নারীরাই তৈরি করেন নান্দনিক পাটি। এলাকাগুলোতে কয়েক দশক আগেও আয়ের প্রধান উৎস ছিল শীতলপাটি। গরমে প্রশান্তি পেতে শীতলপাটি ব্যবহার করলেও বিয়ে, গায়ে হলুদ, খাৎনাসহ নানা অনুষ্ঠানে এর ব্যাপক ব্যবহার ছিল। এখন তা অনেকটাই কমে গেছে।

শীতলপাটির গ্রাম ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আরো কথা বলে জানা গেছে, প্লাস্টিক পাটির আগ্রাসনে এ পাটির কদর দিন দিন কমতে শুরু করেছে। একসময় পাটি বুনে যাদের সংসার চলত, তারা অনেকেই এখন এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে আটঘরিয়া ও দরবস্ত চাঁদপুর ও চুনিয়া হাটি এলাকায় এখনও প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের নারী পুরুষরা পূর্বসূরিদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। সময় ও খরচের তুলনায় দাম কম হওয়ায় এখন আর এ কাজে লাভ হয় না বলে জানান তারা। পাটি তৈরির কারিগর কল্পনা ,পাপ্পু সরকারসহ কয়েকজন জানান, এখানে শীতলপাটি,বিছানার পাটি ও আসন পাটি তৈরি করা হয়। ৯০ বছর বয়সী দুলাল চন্দ্র ভৌমিক বলেন ছোট বেলা থেকে তৈরি করে আসছেন এ শীতল পাটি। তিনি বলেন, শীতল পাটি তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। বাবা দাদারা পাটি বুনতেন। তাদের দেখে এ পেশায় জড়ান। তিনি আরো বলেন, এক সময় শীতল পাটির খুব কদর ছিলো। তাদের কাছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার আসতো। অনেক পাইকাররা তাদের থেকে পাটি ক্রয় করে নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করতেন। এখনও তাদের শীতল পাটির কদর পুরো দেশ জুড়ে রয়েছে। তিনি জানান, এই পাটি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও যায় ।

চাদপুর গ্রামের স্বপ্না রানী নামে জানান, ছোট বেলা থেকে পাটি বুনে আসছি। একজন মেয়ে সপ্তাহে একটি পাটি বুনা যায় এর এতে মুজুরি আসে ৫-৬শ টাকা । তিনি বলেন, এখন আমাদের শীতল পাটির কদর আগের মতো নেই। সরকারিভাবে সহযোগীতা করা হলে এ শিল্প টিকে থাকবে।

ধানগড়া ইউনিয়নের আটঘরিয়া গ্রামের টুম্পা রানী সরকার বলেন, একটি পাটি বানাতে অন্তত সাত দিন সময় লাগে। বিছানায় ব্যবহারের একেকটি শীতলপাটি বিক্রি হয় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। দিন দিন চাহিদা কমায় তারাও কম তৈরি করছেন। একই এলাকার বুলবুলি রানী সরকার বলেন, শীতলপাটির উৎপাদন খরচ বাড়লেও দাম বাড়ছে না। মানুষের চাহিদা দিন দিন কমছে। তবুও নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তৈরি করছেন। আগে গ্রামের হাটে পাটির কদর থাকলেও এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চলে আসায় গরমেও ব্যবহার কমেছে। এখন গাজীপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকার এসে পাটি নিয়ে যান। পাটির কারিগররা বলেন, অনেকে পুঁজির অভাবে কাজ কম করে। চাহিদা কমতে থাকা এবং কারিগরদের পুঁজির অভাবে এ কাজে মানুষের আগ্রহ কমতে শুরু করেছে।

গরমে পাটির বাজার চাঙ্গা থাকায় উঠান ও ঘরের বারান্দায় হরেক নকশায় বুননে দিন-রাত পাড় করছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সীরা। বর্তমানে প্রতিটি পাটি পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা মূল্যে। এতে মজুরি বাদে তেমন লাভ না হওয়ায় অন্যান্য দেশে বাজারজাতসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করলেন পাটিশিল্পীরা। সনাতন ধর্মালম্বী এসব এলাকার প্রায় দেড় থেকে দুই সহস্রাধিক মানুষের এখনও পেশা টিকিয়ে রেখেছেন । যেখানে নারীরাও জীবিকার পথ খুঁজে পেয়েছেন। তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে স্বল্প মজুরিতে অসন্তষ্ট তারা। পাশাপাশি এ শিল্পে প্লাস্টিকের পাটির বিরূপ প্রভাব পড়েছে। চলতি গ্রীষ্মের প্রধান মৌসুমে শীতল পাটির চাহিদা বেশ, বললেন পাটি শিল্পীরা।

এ ব্যপারে সিরাজগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, শীতল পাটির বিষয়ে সরকারিভাবে কোন সুযোগ সুবিধা এই দপ্তরের মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

back to top