রাজশাহী : প্রাণবৈচিত্র্য মেলায় শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষক -সংবাদ
রাজশাহীর তানোরের বিলজোয়ানা ও বিলকুমারী বিল দুটি প্রাণবৈচিত্রে ভরপুর। সম্প্রতি সরকার বিলজোয়ানাকে বাংলাদেশের প্রথম ‘জলা ভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে বুধবার বিলের ধারে উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে শিশুদের জলজ উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, মাছ ধরার উপকরণ চেনানো হয়। ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার গোকুল-মোথুরা গ্রামের বিলপাড়ে বারসিক (বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ), সবুজ সংহতি ও গোকুল-মোথুরা যুব সংগঠনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানটি হয়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে বিগত সময় থেকে চলমান কার্যক্রমের ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে বিলজোয়ানা-বিলকুমারি প্রাণবৈচিত্র্য উৎসবের আয়োজন করা হয়। বিলজোয়ানা-বিলককুমারির স্থানীয় প্রাণবৈচিত্র্য, মানুষের জীবনধারা, এবং জলাভূমির সম্পর্ককে তুলে ধরবে। একই সাথে বিলের প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষা ও জনসচেনতাসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যকর উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের প্রত্যাশা রাখে।
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাণ প্রাচুর্যময় অঞ্চল হলো রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিলজোয়ানা-বিলকুমারি। বিল দুটির একত্রে আয়তন প্রায় ৩৮৭ একর। বিলের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে শিবনদ। এই বিলাঞ্চল শুধু মাছ বা পাখির আবাস নয়, বরং হাজারো প্রাণবৈচিত্র্যে এক সমৃদ্ধ কেন্দ্র।
প্রতিবছর বর্ষাকালে বিলগুলো পানিতে থৈ থৈ করে এবং শুষ্ক মৌসুমে কিছু অংশ হয়ে ওঠে কৃষিকাজের মাঠ। এ অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, গবাদিপশু পালন এবং স্থানীয় জীবনযাত্রা সরাসরি এই বিলভিত্তিক বাস্ততন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বিলজোয়ানিকে দেশের প্রথম ‘জলাভূমি-নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করেছে। নিকট অতীতের প্রাণ প্রাচুর্যময় বিলজোয়ানা-বিলকুমারির জৌলুস দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। বিলকে কেন্দ্রকরে মানুষের জীবন জীবিকা এবং একই সাথে জলজ প্রাণবৈচিত্র্য কমে যাওয়ার কারণে এখন নানাভাবে পরিবেশও হুমকির মধ্যে। বিলের চারিপাশে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার, দখল দুষণ, পাখি শিকারসহ নানা কার্যক্রমের কারণে জলাভূমি-নির্ভর প্রাণবৈচিত্র্য কমে গেছে। অন্যদিকে বিলকে কেন্দ্র করে মৎসজীবীদের পেশাও সংকটের মুখে।
এদিকে বিলকুমারীর বিলের প্রাণবৈচিত্র্য নিয়ে বুধবার সকাল দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত গোকুল মোথুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থীদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রাণবৈচিত্র মেলার এক পাশে বিলজোয়ানা-বিলকুমারীর জলজ উদ্ভিদ বৈচিত্র্য দিয়ে সাজোনো স্টলে একটি জলজ গাছ নিয়ে বলছে এটা কি গাছ এই স্টলের মালিক কবি আফাজ উদ্দিন কবিরাজ। তিনি কবিতার সুরে গাছের নাম বলে দিলেন এটা সিঙ্গার গাছ। এই গাছের ফল খাওয়া যায়। এমন অনেক বৈচিত্রময় জলজ প্রাণ নিয়ে মেলা প্রাঙ্গন সাজানো ছিলো সাথে ছিলো রঙ্গিন সব ফেস্টুনে বিলজোয়ানা-বিলকুমারী রক্ষা বিভিন্ন স্লোগান। সাথে ছিলো জেলে সম্প্রদায়ের মাছ ধরার বিভিন্ন দেশীয় উপকরের স্টল। যা আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন গোকুল-মোথুরা গ্রামের কৃষক-জেলে,নারী,প্রবীন ও নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী। উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে নদী গবেষক ও সবুজ সংহতি সংগঠনের আহব্বায়ক মাহাবুব সিদ্দিকী বলেন“ শিব নদে বাঁধ দেওয়ার ফলে বিলজোয়ানা-বিলকুমারী আস্তে আস্তে জলহীন হতে থাকে। যার ফলে বিলের জীববৈচিত্র আজ হুমকির মুখে। অনেক জলজ প্রাণ বিলুপ্তি হয়েছে। তিনি বিলজোয়ানা-বিলকুমারী খনন করা দাবি জানান। বন্যপ্রানী সংরক্ষক বিভাগের পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন,সকল প্রাণ সংরক্ষণ করেই আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। প্রাণ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ হলেই আমাদের প্রকৃতি সুরক্ষা হবে এ বিষয়ে জনগোষ্টিকে সচেতনতায় তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানের মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. শহিদুল ইসলাম ও অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কর্মসূচি কর্মকর্তা অমৃত সরকার।
রাজশাহী : প্রাণবৈচিত্র্য মেলায় শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষক -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
রাজশাহীর তানোরের বিলজোয়ানা ও বিলকুমারী বিল দুটি প্রাণবৈচিত্রে ভরপুর। সম্প্রতি সরকার বিলজোয়ানাকে বাংলাদেশের প্রথম ‘জলা ভূমি নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে বুধবার বিলের ধারে উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে শিশুদের জলজ উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, মাছ ধরার উপকরণ চেনানো হয়। ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার গোকুল-মোথুরা গ্রামের বিলপাড়ে বারসিক (বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ), সবুজ সংহতি ও গোকুল-মোথুরা যুব সংগঠনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানটি হয়। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে বিগত সময় থেকে চলমান কার্যক্রমের ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে বিলজোয়ানা-বিলকুমারি প্রাণবৈচিত্র্য উৎসবের আয়োজন করা হয়। বিলজোয়ানা-বিলককুমারির স্থানীয় প্রাণবৈচিত্র্য, মানুষের জীবনধারা, এবং জলাভূমির সম্পর্ককে তুলে ধরবে। একই সাথে বিলের প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষা ও জনসচেনতাসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যকর উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের প্রত্যাশা রাখে।
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাণ প্রাচুর্যময় অঞ্চল হলো রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিলজোয়ানা-বিলকুমারি। বিল দুটির একত্রে আয়তন প্রায় ৩৮৭ একর। বিলের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে শিবনদ। এই বিলাঞ্চল শুধু মাছ বা পাখির আবাস নয়, বরং হাজারো প্রাণবৈচিত্র্যে এক সমৃদ্ধ কেন্দ্র।
প্রতিবছর বর্ষাকালে বিলগুলো পানিতে থৈ থৈ করে এবং শুষ্ক মৌসুমে কিছু অংশ হয়ে ওঠে কৃষিকাজের মাঠ। এ অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, গবাদিপশু পালন এবং স্থানীয় জীবনযাত্রা সরাসরি এই বিলভিত্তিক বাস্ততন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বিলজোয়ানিকে দেশের প্রথম ‘জলাভূমি-নির্ভর প্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করেছে। নিকট অতীতের প্রাণ প্রাচুর্যময় বিলজোয়ানা-বিলকুমারির জৌলুস দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। বিলকে কেন্দ্রকরে মানুষের জীবন জীবিকা এবং একই সাথে জলজ প্রাণবৈচিত্র্য কমে যাওয়ার কারণে এখন নানাভাবে পরিবেশও হুমকির মধ্যে। বিলের চারিপাশে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার, দখল দুষণ, পাখি শিকারসহ নানা কার্যক্রমের কারণে জলাভূমি-নির্ভর প্রাণবৈচিত্র্য কমে গেছে। অন্যদিকে বিলকে কেন্দ্র করে মৎসজীবীদের পেশাও সংকটের মুখে।
এদিকে বিলকুমারীর বিলের প্রাণবৈচিত্র্য নিয়ে বুধবার সকাল দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত গোকুল মোথুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থীদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রাণবৈচিত্র মেলার এক পাশে বিলজোয়ানা-বিলকুমারীর জলজ উদ্ভিদ বৈচিত্র্য দিয়ে সাজোনো স্টলে একটি জলজ গাছ নিয়ে বলছে এটা কি গাছ এই স্টলের মালিক কবি আফাজ উদ্দিন কবিরাজ। তিনি কবিতার সুরে গাছের নাম বলে দিলেন এটা সিঙ্গার গাছ। এই গাছের ফল খাওয়া যায়। এমন অনেক বৈচিত্রময় জলজ প্রাণ নিয়ে মেলা প্রাঙ্গন সাজানো ছিলো সাথে ছিলো রঙ্গিন সব ফেস্টুনে বিলজোয়ানা-বিলকুমারী রক্ষা বিভিন্ন স্লোগান। সাথে ছিলো জেলে সম্প্রদায়ের মাছ ধরার বিভিন্ন দেশীয় উপকরের স্টল। যা আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন গোকুল-মোথুরা গ্রামের কৃষক-জেলে,নারী,প্রবীন ও নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী। উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে নদী গবেষক ও সবুজ সংহতি সংগঠনের আহব্বায়ক মাহাবুব সিদ্দিকী বলেন“ শিব নদে বাঁধ দেওয়ার ফলে বিলজোয়ানা-বিলকুমারী আস্তে আস্তে জলহীন হতে থাকে। যার ফলে বিলের জীববৈচিত্র আজ হুমকির মুখে। অনেক জলজ প্রাণ বিলুপ্তি হয়েছে। তিনি বিলজোয়ানা-বিলকুমারী খনন করা দাবি জানান। বন্যপ্রানী সংরক্ষক বিভাগের পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন,সকল প্রাণ সংরক্ষণ করেই আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। প্রাণ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ হলেই আমাদের প্রকৃতি সুরক্ষা হবে এ বিষয়ে জনগোষ্টিকে সচেতনতায় তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানের মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. শহিদুল ইসলাম ও অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কর্মসূচি কর্মকর্তা অমৃত সরকার।