মাদ্রাসায় বিস্ফোরণ: ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার, ৪ আহত
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাদ্রাসা পরিচালক, তার স্ত্রী ও দুই শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।
গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে এবং এখনো অভিযান চলছে। ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে ক্রাইম সিন দল ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে।
হাসনাবাদ এলাকার একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনে তিনি ঘটনাস্থলে দৌড়ে গিয়ে দেখেন মাদ্রাসার পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের চারপাশের দেয়াল উড়ে গেছে। বিস্ফোরণে একতলা ভবনের দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়ে এবং ছাদ ও বিমে ফাটল দেখা দেয়। পাশের আরও দুটি কক্ষেও ফাটল ধরেছে।
তিনি আরও জানান, মাদ্রাসাটিতে ৩০ থেকে ৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন, তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম এবং তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে উমায়েত ও আবদুল্লাহ আহত হন। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবারসহ তিন বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, বিস্ফোরণে তাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে এবং ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।
ভবনমালিক পারভীন বেগম বলেন, তিন বছর ধরে তার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আলামিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। তিনি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারেননি। আজ এসে দেখেন, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে। পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
‘নগর-মহানগর’ : আরও খবর
