alt

লকডাউনে সকল বিপদ যেন মধ্যবিত্তদের

জাহিদা পারভেজ : বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১

দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। মানুষ যথাসম্ভব ঘরে থাকার চেষ্টা করছে। রাস্তায় শুধু রিক্সা ও জরুরি সেবার বাহন চলার অনুমতি দেয়া আছে। এ অবস্থায় কাজ হারিয়ে বেকার অনেক মধ্যবিত্ত, নি¤œ মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

এরই মধ্যে নি¤œ আয়ের অনেকেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে ফিরে গেলেও মধ্যবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে। তারা যেমন গ্রামে ফিরতে পারছেন না তেমনি পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকাও কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। পার করছেন মানবেতর জীবন।

এমনি একজন আব্দুর রাজ্জাক। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে আট বছর মভপড় ঢাকায় আসেন বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী নিয়ে। ঢাকায় এসে প্রথম ৬ বছর স্ত্রী সন্তান নিয়ে কখোনই কোনো আর্থিক সমস্যায় পড়েন নি।

কিন্তু মহামারীর শুরুতেই তার জীবনে নেমে আসে অমানিশা। করোনার প্রথম আঘাত পড়ে রাজ্জাকের চাকরীতে। ২০২০ সালের মে মাসে তার চাকরী চলে যায়। বউ বাচ্চাকে নিয়ে যে গ্রামের বাড়ি ফিরে যাবেন তারও উপায় নাই।

এমন পরিস্থিতিতে জমানো টাকা আর বউয়ের গয়না বেচে একটা মোটর সাইকেল কিনে উবার এ দিয়ে সংসার চালানো শুরু করেন। দিনে কম করে হলেও হাজার টাকা আয়। নতুন পেশা হলেও বেশ ভালোই চলছিল। চাকরী হারানোর কষ্ট ভুলে ছিলেন।

কিন্তু বিপত্তি শুরু হয় লকডাউনে।

গণ পরিবহণ বন্ধ থাকায় বিশেষ কাজে বের হওয়া মানুষের ভরসা তারাই। যাত্রী কম হলেও ট্রিপ পাওয়া যায়। কিন্তু লকডাউনে সকল রাইড শেয়ার বন্ধ। কিন্তু এ নিয়েও সমস্যা না, সমস্যা হলো পুলিশ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে চলতে হয়। ধরা পড়লেই জরিমানা গুনতে হবে। দেবে মামলা।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন বলে জানান রাজ্জাক। তারপরও পুলিশের চোখ এড়িয়ে দুই একটা ট্রিপ দিচ্ছেন। ক্ষোভের সাথে রাজ্জাক বলেন,‘একই যাত্রী কম তার উপর পুলিশী হয়রানির ভয়। বের না হয়ে কি করবো। বাসা ভাড়া, বউ বাচ্চার ভরণপোষণ করবো কিভাবে। চাকরী নাই। ধার করে কতোদিন সংসার চালানো যায়। সবই চলে। যতো সমস্যা আমাদের মধ্যবিত্তদের।’

মিরপুর রংধনু শপিং কমপ্লেক্সে কালেকশন কসমেটিকস দোকানের ম্যানেজার সোহাগ আলম বলেন, ‘আমরা শেষ। আমাদের ব্যবসা শেষ।’ এমন লকডাউন দিয়ে করোনা কমানো সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন ‘যারা বড়লোক টাকা আছে তাদের সমস্য নাই আবার যারা একেবারে নি¤œবিত্ত তারা হাত পাততে পারে। মাঝখান থেকে আমরা যারা মধ্যবিত্ত তাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ছে।’

একটা প্রতিষ্ঠিত মার্চেন্ডাইজিং প্রতিষ্ঠানে লাখ টাকার ওপর বেতন পেতেন আলবার্ট সরকার। করোনার ঘায়ে তারও চাকরী চলে যায়। চাকরী চলে যাওয়াতে আলবার্ট ভেঙে না পড়ে, ঘরে বসে কি করা যায় সেই ভাবনা থেকেই শুরু করেন নার্সারী। নিজের বাড়ী। সামনে বেশ খানকিটা জায়গা, বেসমেন্ট আর সাথেই ফুটপাথ সব মিলিয়ে শুরু করে দেন নার্সারীর কাজ।

আগে থেকেই বাগান ফুল গাছ তার প্রিয়। এই প্রিয় বিষয়টিকেই তিনি পেশা হিসেবে নিলেন। আলবার্ট বলেন, ‘করোনার মধ্যে অনেকেই বারান্দায়, ছাদে বাগান করা শুরু করেন।’ মানুষের বাগান করার সখ তাকে সফলতার মুখ দেখালেও লকডাউনে তা আবার মুখ থুবড়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘মাঝে চারা বিক্রি বেড়ে গেলেও এখন ধুপ করে তা কমে গেছে। লকডাউনের আগে গাছের চারা, মাটি, টব, সার বিক্রি করে সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হতো। এ সপ্তাহে তা অর্ধেকের নীচে নেমে গেছে।’ এ অবস্থা চলতে থাকলে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সমস্যা হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন আলবার্ট।

ছবি

সাতরাস্তা মোড়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল স্থবির

ছবি

স্বতন্ত্র কাঠামোর দাবিতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

ছবি

যমুনা অভিমুখী বেসরকারি শিক্ষকদের পিটিয়ে সরাল পুলিশ

ছবি

আশুলিয়ায় একই পরিবারের তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

ধানমন্ডিতে ১২ সাবেক সচিব-অধিকর্তাকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ বাতিলের পর দুদকে তলব

ছবি

কার্নিশে ঝুলে থাকা তরুণকে গুলি: অভিযোগ গঠনের আদেশ মঙ্গলবার

ছবি

দুর্গাপূজা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা প্রার্থনার দাবি করেছেন ২২ বিশিষ্ট নাগরিক

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: রাজধানীতে বন্ধ থাকবে যেসব সড়ক

ছবি

চেক জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা

ছবি

চানখাঁরপুলে গুলিতে নিহত আনাসের রক্তে ভেসে গিয়েছিল শরীর: ট্রাইব্যুনালে মায়ের সাক্ষ্য

ছবি

ডিএসসিসিতে কোটি টাকার জ্বালানি খরচের ‘অনিয়ম’, দুদকের অভিযান

ছবি

মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার হামলায় আরও দুজন গ্রেপ্তার

ছবি

সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ও মালিকের বাসায় হামলার মামলায় এক আসামি রিমান্ডে, আরেকজন কারাগারে

ছবি

সংস্কারে আরো দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে ‘চাঁদপুর ইলিশ চত্বর’

ছবি

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক র‌্যালি

ছবি

আদাবরে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে গিয়ে পুলিশের গাড়িচালককে কুপিয়ে জখম

ছবি

৩৮ লাখ টাকার অভিযোগে ঢাকার সহকারী কর কমিশনার মিতু সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

একাধিক অভিযোগে বরখাস্ত হল চিকিৎসক ফাতেমা দোজা

ছবি

ডিআরইউ আলোচনায় হামলার শিকার অধ্যাপক কার্জনের জামিন নামঞ্জুর

ছবি

সহকারী শিক্ষকদের আল্টিমেটাম :  ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে আমরণ অনশন

ছবি

কাকরাইলে জাপা কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত কয়েকজন

ছবি

আগারগাঁও অবরোধে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা, তিন দফা দাবিতে দুর্ভোগে যাত্রীরা

ছবি

ডিএমপি কমিশনারের দুঃখ প্রকাশের পর শাহবাগ ছাড়লেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা

ছবি

কাকরাইলে আন্দোলনকারী ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ

ছবি

বুয়েট উপাচার্যের ক্ষোভ: শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ গ্রহণযোগ্য নয়

ছবি

শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের অবস্থান, পুলিশের হামলার বিরুদ্ধে পাঁচ দফা দাবি

ছবি

বিআইপি অভিযোগ: রাজউক ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয় আবাসন ব্যবসায়ীদের পক্ষে কাজ করছে

ছবি

হিজাব বিতর্কে শিক্ষক বরখাস্ত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিকারুননিসা নূন স্কুলে

ছবি

যমুনামুখী হতে চাইলে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

ছবি

শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের অবরোধ, তীব্র যানজট

ছবি

ঢাকায় ৮ কেজি কোকেনসহ গায়ানার নাগরিক গ্রেপ্তার

ছবি

শাহবাগ মোড়ে প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, তিন দাবিতে সড়ক অবরোধ

ছবি

রাজধানীতে সমাবেশের জন্য ডিএমপির চিহ্নিত ৯১ বিকল্প স্থান

ছবি

সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ বুয়েট শিক্ষার্থীদের যমুনায় যাওয়ার চেষ্টা

ছবি

জুলাই আন্দোলনে চোখের ক্ষতির শিকারদের চিত্র ট্রাইব্যুনালে

ছবি

রামপুরার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা : ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ চারজন পলাতক আসামিকে আত্মসমর্পণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

tab

লকডাউনে সকল বিপদ যেন মধ্যবিত্তদের

জাহিদা পারভেজ

বুধবার, ০৭ জুলাই ২০২১

দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। মানুষ যথাসম্ভব ঘরে থাকার চেষ্টা করছে। রাস্তায় শুধু রিক্সা ও জরুরি সেবার বাহন চলার অনুমতি দেয়া আছে। এ অবস্থায় কাজ হারিয়ে বেকার অনেক মধ্যবিত্ত, নি¤œ মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

এরই মধ্যে নি¤œ আয়ের অনেকেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে ফিরে গেলেও মধ্যবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে। তারা যেমন গ্রামে ফিরতে পারছেন না তেমনি পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় থাকাও কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। পার করছেন মানবেতর জীবন।

এমনি একজন আব্দুর রাজ্জাক। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে আট বছর মভপড় ঢাকায় আসেন বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী নিয়ে। ঢাকায় এসে প্রথম ৬ বছর স্ত্রী সন্তান নিয়ে কখোনই কোনো আর্থিক সমস্যায় পড়েন নি।

কিন্তু মহামারীর শুরুতেই তার জীবনে নেমে আসে অমানিশা। করোনার প্রথম আঘাত পড়ে রাজ্জাকের চাকরীতে। ২০২০ সালের মে মাসে তার চাকরী চলে যায়। বউ বাচ্চাকে নিয়ে যে গ্রামের বাড়ি ফিরে যাবেন তারও উপায় নাই।

এমন পরিস্থিতিতে জমানো টাকা আর বউয়ের গয়না বেচে একটা মোটর সাইকেল কিনে উবার এ দিয়ে সংসার চালানো শুরু করেন। দিনে কম করে হলেও হাজার টাকা আয়। নতুন পেশা হলেও বেশ ভালোই চলছিল। চাকরী হারানোর কষ্ট ভুলে ছিলেন।

কিন্তু বিপত্তি শুরু হয় লকডাউনে।

গণ পরিবহণ বন্ধ থাকায় বিশেষ কাজে বের হওয়া মানুষের ভরসা তারাই। যাত্রী কম হলেও ট্রিপ পাওয়া যায়। কিন্তু লকডাউনে সকল রাইড শেয়ার বন্ধ। কিন্তু এ নিয়েও সমস্যা না, সমস্যা হলো পুলিশ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে চলতে হয়। ধরা পড়লেই জরিমানা গুনতে হবে। দেবে মামলা।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন বলে জানান রাজ্জাক। তারপরও পুলিশের চোখ এড়িয়ে দুই একটা ট্রিপ দিচ্ছেন। ক্ষোভের সাথে রাজ্জাক বলেন,‘একই যাত্রী কম তার উপর পুলিশী হয়রানির ভয়। বের না হয়ে কি করবো। বাসা ভাড়া, বউ বাচ্চার ভরণপোষণ করবো কিভাবে। চাকরী নাই। ধার করে কতোদিন সংসার চালানো যায়। সবই চলে। যতো সমস্যা আমাদের মধ্যবিত্তদের।’

মিরপুর রংধনু শপিং কমপ্লেক্সে কালেকশন কসমেটিকস দোকানের ম্যানেজার সোহাগ আলম বলেন, ‘আমরা শেষ। আমাদের ব্যবসা শেষ।’ এমন লকডাউন দিয়ে করোনা কমানো সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন ‘যারা বড়লোক টাকা আছে তাদের সমস্য নাই আবার যারা একেবারে নি¤œবিত্ত তারা হাত পাততে পারে। মাঝখান থেকে আমরা যারা মধ্যবিত্ত তাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ছে।’

একটা প্রতিষ্ঠিত মার্চেন্ডাইজিং প্রতিষ্ঠানে লাখ টাকার ওপর বেতন পেতেন আলবার্ট সরকার। করোনার ঘায়ে তারও চাকরী চলে যায়। চাকরী চলে যাওয়াতে আলবার্ট ভেঙে না পড়ে, ঘরে বসে কি করা যায় সেই ভাবনা থেকেই শুরু করেন নার্সারী। নিজের বাড়ী। সামনে বেশ খানকিটা জায়গা, বেসমেন্ট আর সাথেই ফুটপাথ সব মিলিয়ে শুরু করে দেন নার্সারীর কাজ।

আগে থেকেই বাগান ফুল গাছ তার প্রিয়। এই প্রিয় বিষয়টিকেই তিনি পেশা হিসেবে নিলেন। আলবার্ট বলেন, ‘করোনার মধ্যে অনেকেই বারান্দায়, ছাদে বাগান করা শুরু করেন।’ মানুষের বাগান করার সখ তাকে সফলতার মুখ দেখালেও লকডাউনে তা আবার মুখ থুবড়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘মাঝে চারা বিক্রি বেড়ে গেলেও এখন ধুপ করে তা কমে গেছে। লকডাউনের আগে গাছের চারা, মাটি, টব, সার বিক্রি করে সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হতো। এ সপ্তাহে তা অর্ধেকের নীচে নেমে গেছে।’ এ অবস্থা চলতে থাকলে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সমস্যা হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন আলবার্ট।

back to top