প্রশাসন সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো প্রস্তাবগুলো কেবল বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্যই নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের নাগরিকের প্রয়োজন মেটাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে প্রতিবেদন তুলে দেন বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। এরপর সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সামনে কয়েক মিনিট বক্তব্য দেন তিনি।
এই দুটি খাতের সংস্কার প্রস্তাবকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য এই উদ্যোগ প্রাসঙ্গিক। তাই রূপরেখাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “এটা জাতির জন্য একটা বিরাট সংবাদ। জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। নেহায়েত সৌজন্যমূলকভাবে বলছি না।”
প্রস্তাবগুলো দেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বার্থকে ‘ছুঁয়ে যাবে’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, “কতজনের মাথা নাড়া দেখলাম। তাতে বোঝা গেল কোন জায়গাতে আপনারা হাত দিয়েছেন। এই দুটো সংস্কার কমিশন হল এমন জিনিস, বাংলাদেশের হেন নাগরিক নাই যে এটাতে টাচড হয়নি। অন্য কমিশনে অনেক বড় বড় জিনিস থাকে, কিন্তু সরাসরি টাচড হয় না। এটা হলো একদম সরাসরি। আপনি দরিদ্রতম ব্যক্তি হতে পারেন, ধনী হতে পারেন, মাঝের লোক হতে পারেন। এই দুইটার সঙ্গে আপনাকে সম্পৃক্ত হতেই হবে।”
ইউনূস বলেন, “আমাদের দেশের যে অভিজ্ঞতা, সেটা হল হেনস্তা, অপমানের অভিজ্ঞতা। আমরা নাগরিক হিসাবে আমাদের যে একটা দাবি আছে, সেটা ভুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। নতজানু হওয়ার অভিজ্ঞতা। এখানে যে আশার কথা শুনিয়েছেন, যে সংক্ষিপ্ত সার দিলেন, সেটাতে আশা জাগায় যে, হয়ত আমরা এটা থেকে মুক্ত হব। আমরা সত্যিকারভাবে নাগরিক হিসাবে অধিকার ফিরে পাব। এটা আমাদের প্রত্যাশা, আপনাদের মাধ্যমে সেই প্রত্যাশা পূরণ হোক।”
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সায় পেলে কিছু সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট রাজনৈতিক দল, জনগণ ও সিভিল সোসাইটির হাতে দিয়ে দেব, যাতে তারা একমত হতে পারে যে, এগুলো করে ফেলা ভালো। আমরা মাথা নাড়ছি, ভালো লাগছে। সবাই যেন মাথা নাড়ে যে, আমাদের প্রাণের কথাটি বলেছেন। কারণ, আমি তো ভুক্তভোগী। এটা বোঝার জন্য আমাকে পণ্ডিত হতে হবে না। আজকে আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক জ্ঞান সবকিছু, সবকিছুর সংক্ষিপ্তসার করে এবং বহুজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। সবকিছু একত্রিত হয়ে এখানে এসেছে। এটা হচ্ছে ইতিহাসের একটা স্মরণীয় পুস্তক; এটা থেকে যাবে।”
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে ইউনূস বলেন, “ভবিষ্যত প্রজন্ম এটা দেখে আমাদেরকে বিচার করবে যে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, করেন নাই কেন। এমন না যে আপনারা জানতেন না বলে করেন নাই। এখন তো আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা করেন নাই কেন?” আপনাদের মতামত চাওয়া হয়েছিল, আপনারা মতামত দেওয়ার জন্য গা করেন নাই। অবহেলা করেছেন। একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে গুরুত্ব দেন নাই। এই ফসল জাতির জন্য একটা স্মরণীয় বিষয়। জাতি যেদিকেই যাক না কেন, এই রেফারেন্স পয়েন্টটা থেকে যাবে।”
কমিশনের সদস্য ও চেয়ারম্যানরা যে অবদান রেখেছেন, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ‘বিশ্বের জন্য অবদান’ বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সব জাতিকে এটা ফেইস করতে হয়। সুতরাং আমার অনুরোধ থাকবে, এটার ইংরেজি অনুবাদ হয়ে যাওয়া। বিশ্বের দরবারে যেতে হলে বিশ্বের ভাষায় আমাদের যেতে হবে। কষ্টের ফসলটা সারা পৃথিবীর প্রাপ্য। তারা তাদের কনটেক্সটে বিচার করবে। কিন্তু জিনিস একই। তারা যখন তাদের দেশের জন্য একটা প্রস্তাব আনবে, এগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করবে যে, তারা কী করেছিল। সেজন্যই আজকের যে দুটি রিপোর্ট আমরা গ্রহণ করছি সেটা জাতির সম্পদ হিসাবে, পৃথিবীর সম্পদ হিসাবে আমরা গ্রহণ করলাম।আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ, এই কাজটা করে দেওয়ার জন্য। আপনার এই কাজের মাধ্যমে ইতিহাসে স্থান করে নেবেন।”
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রশাসন সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো প্রস্তাবগুলো কেবল বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্যই নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের নাগরিকের প্রয়োজন মেটাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে প্রতিবেদন তুলে দেন বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। এরপর সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সামনে কয়েক মিনিট বক্তব্য দেন তিনি।
এই দুটি খাতের সংস্কার প্রস্তাবকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য এই উদ্যোগ প্রাসঙ্গিক। তাই রূপরেখাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ করতে হবে।”
তিনি বলেন, “এটা জাতির জন্য একটা বিরাট সংবাদ। জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। নেহায়েত সৌজন্যমূলকভাবে বলছি না।”
প্রস্তাবগুলো দেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বার্থকে ‘ছুঁয়ে যাবে’ মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, “কতজনের মাথা নাড়া দেখলাম। তাতে বোঝা গেল কোন জায়গাতে আপনারা হাত দিয়েছেন। এই দুটো সংস্কার কমিশন হল এমন জিনিস, বাংলাদেশের হেন নাগরিক নাই যে এটাতে টাচড হয়নি। অন্য কমিশনে অনেক বড় বড় জিনিস থাকে, কিন্তু সরাসরি টাচড হয় না। এটা হলো একদম সরাসরি। আপনি দরিদ্রতম ব্যক্তি হতে পারেন, ধনী হতে পারেন, মাঝের লোক হতে পারেন। এই দুইটার সঙ্গে আপনাকে সম্পৃক্ত হতেই হবে।”
ইউনূস বলেন, “আমাদের দেশের যে অভিজ্ঞতা, সেটা হল হেনস্তা, অপমানের অভিজ্ঞতা। আমরা নাগরিক হিসাবে আমাদের যে একটা দাবি আছে, সেটা ভুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। নতজানু হওয়ার অভিজ্ঞতা। এখানে যে আশার কথা শুনিয়েছেন, যে সংক্ষিপ্ত সার দিলেন, সেটাতে আশা জাগায় যে, হয়ত আমরা এটা থেকে মুক্ত হব। আমরা সত্যিকারভাবে নাগরিক হিসাবে অধিকার ফিরে পাব। এটা আমাদের প্রত্যাশা, আপনাদের মাধ্যমে সেই প্রত্যাশা পূরণ হোক।”
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সায় পেলে কিছু সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট রাজনৈতিক দল, জনগণ ও সিভিল সোসাইটির হাতে দিয়ে দেব, যাতে তারা একমত হতে পারে যে, এগুলো করে ফেলা ভালো। আমরা মাথা নাড়ছি, ভালো লাগছে। সবাই যেন মাথা নাড়ে যে, আমাদের প্রাণের কথাটি বলেছেন। কারণ, আমি তো ভুক্তভোগী। এটা বোঝার জন্য আমাকে পণ্ডিত হতে হবে না। আজকে আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক জ্ঞান সবকিছু, সবকিছুর সংক্ষিপ্তসার করে এবং বহুজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। সবকিছু একত্রিত হয়ে এখানে এসেছে। এটা হচ্ছে ইতিহাসের একটা স্মরণীয় পুস্তক; এটা থেকে যাবে।”
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে ইউনূস বলেন, “ভবিষ্যত প্রজন্ম এটা দেখে আমাদেরকে বিচার করবে যে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, করেন নাই কেন। এমন না যে আপনারা জানতেন না বলে করেন নাই। এখন তো আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা করেন নাই কেন?” আপনাদের মতামত চাওয়া হয়েছিল, আপনারা মতামত দেওয়ার জন্য গা করেন নাই। অবহেলা করেছেন। একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে গুরুত্ব দেন নাই। এই ফসল জাতির জন্য একটা স্মরণীয় বিষয়। জাতি যেদিকেই যাক না কেন, এই রেফারেন্স পয়েন্টটা থেকে যাবে।”
কমিশনের সদস্য ও চেয়ারম্যানরা যে অবদান রেখেছেন, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ‘বিশ্বের জন্য অবদান’ বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সব জাতিকে এটা ফেইস করতে হয়। সুতরাং আমার অনুরোধ থাকবে, এটার ইংরেজি অনুবাদ হয়ে যাওয়া। বিশ্বের দরবারে যেতে হলে বিশ্বের ভাষায় আমাদের যেতে হবে। কষ্টের ফসলটা সারা পৃথিবীর প্রাপ্য। তারা তাদের কনটেক্সটে বিচার করবে। কিন্তু জিনিস একই। তারা যখন তাদের দেশের জন্য একটা প্রস্তাব আনবে, এগুলো ঘাঁটাঘাঁটি করবে যে, তারা কী করেছিল। সেজন্যই আজকের যে দুটি রিপোর্ট আমরা গ্রহণ করছি সেটা জাতির সম্পদ হিসাবে, পৃথিবীর সম্পদ হিসাবে আমরা গ্রহণ করলাম।আপনাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ, এই কাজটা করে দেওয়ার জন্য। আপনার এই কাজের মাধ্যমে ইতিহাসে স্থান করে নেবেন।”