দেশের নারী ফুটবলারদের বেতন কাঠামো, অনুশীলন এবং আবাসন নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রতিটি খেলোয়ারকে বলেছে, তাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাক্সক্ষা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলো আলাদা কাগজে লিখিত আকারে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আপনারা যা মন চায়, লিখতে পারেন, দ্বিধা করবেন না। যদি এখন কিছু বলতে চান, সেটাও বলতে পারেন। আমরা আপনাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব। এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায়, তবে আমরা এখনই তা করব।’
শনিবার (২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী বাংলাদেশের মেয়েদের সংবর্ধনা দিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ১০টায় যমুনায় প্রবেশ করে নারী ফুটবল দলটি। প্রধান উপদেষ্টা এ সময় দলের সব সদস্যের ফুটবল ও সই করা জার্সি উপহার দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলো মনোযোগের সঙ্গে শুনেছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্বাগত বক্তব্যে খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এই সাফল্যের জন্য আমি গোটা জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। আপনারা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছেন।’
সংবর্ধনা শেষে নারী ফুটবল দল বেরিয়ে যাওয়ার পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের সদস্যরা আবাসন সমস্যা, অনুশীলন, বেতন কাঠামোর বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টা খুব ধৈর্য সহকারে নারী ফুটবল দলের প্রত্যেকের কথা শুনেছেন। এখানে আলোচনা খুব খোলামেলা হয়েছে। আলোচনার সবকিছুই আমরা অ্যাড্রেস করব।’
তিনি জানিয়েছেন, নারী ফুটবলাররা বলেছেন, সারাবছর ধরে ক্যাম্প চালানো হয়েছে বলেই সাফল্য ধরা দিয়েছে। তাই বছরজুড়ে ক্যাম্প চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ ফুটবলাররা করেছেন বলে জানান আসিফ। এমন একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অধিনায়ক সাবিনা খাতুন প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন। সাবিনা বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। এটা শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীরা অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’
একই সঙ্গে সাবিনা বাংলাদেশের নারী ফুটবলে তার আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করেন, যারা ফুটবলকে তাদের আবেগ হিসেবে নেয়ার সাহস দেখিয়েছেন।’
সাবিনা বলেন, ‘তাদের মধ্যে অনেকেই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে এসেছেন এবং তাদের পরিবারকে সমর্থন করার দরকার। আমরা যা বেতন পাই, তা দিয়ে পরিবারকে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারি না। কারণ, আমরা বেশি কিছু পাই না।’
নারী ফুটবল দলের অনেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসেছেন বলে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তাদের পরিবারের অনেক বিষয় আছে, রাস্তাঘাটের বিষয় আছে। যেখানে সরকারের বিভিন্ন অঙ্গ জড়িত। তারা সেটা সমাধানের জন্য কাজ করবে।’
‘প্রধান উপদেষ্টা খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেছেন। যাতে করে আমাদের বিজয়ের ধারা অব্যাহত থাকে,’ বলেন আসিফ।
সাবিনা তার কয়েকজন সতীর্থের উঠে আসার সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। যেমন মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দা, যিনি উঠে এসেছেন ময়মনসিংহের কলসিন্দুর থেকে। মারিয়া তার বাবাকে হারিয়েছেন ছোটবেলায়। মা তাকে লালন পালন করেছেন। কলসিন্দুর থেকে সাফজয়ী দলে ৬ জন খেলোয়াড় আছেন।
দলের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি অনুরোধ করেছেন এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা করতে। বিশেষ করে মেয়েদের সর্বশেষ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলার কথা বলেছেন কৃষ্ণা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার। উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও।
কাঠমা-ুর দশরথ স্টেডিয়ামে গত বুধবার স্বাগতিক নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ। বাফুফে ভবনে দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হাতে এক কোটি টাকার পুরস্কারের চেক তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।
রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪
দেশের নারী ফুটবলারদের বেতন কাঠামো, অনুশীলন এবং আবাসন নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রতিটি খেলোয়ারকে বলেছে, তাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাক্সক্ষা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলো আলাদা কাগজে লিখিত আকারে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আপনারা যা মন চায়, লিখতে পারেন, দ্বিধা করবেন না। যদি এখন কিছু বলতে চান, সেটাও বলতে পারেন। আমরা আপনাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব। এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায়, তবে আমরা এখনই তা করব।’
শনিবার (২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী বাংলাদেশের মেয়েদের সংবর্ধনা দিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ১০টায় যমুনায় প্রবেশ করে নারী ফুটবল দলটি। প্রধান উপদেষ্টা এ সময় দলের সব সদস্যের ফুটবল ও সই করা জার্সি উপহার দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলো মনোযোগের সঙ্গে শুনেছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্বাগত বক্তব্যে খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এই সাফল্যের জন্য আমি গোটা জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। আপনারা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছেন।’
সংবর্ধনা শেষে নারী ফুটবল দল বেরিয়ে যাওয়ার পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের সদস্যরা আবাসন সমস্যা, অনুশীলন, বেতন কাঠামোর বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টা খুব ধৈর্য সহকারে নারী ফুটবল দলের প্রত্যেকের কথা শুনেছেন। এখানে আলোচনা খুব খোলামেলা হয়েছে। আলোচনার সবকিছুই আমরা অ্যাড্রেস করব।’
তিনি জানিয়েছেন, নারী ফুটবলাররা বলেছেন, সারাবছর ধরে ক্যাম্প চালানো হয়েছে বলেই সাফল্য ধরা দিয়েছে। তাই বছরজুড়ে ক্যাম্প চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ ফুটবলাররা করেছেন বলে জানান আসিফ। এমন একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অধিনায়ক সাবিনা খাতুন প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন। সাবিনা বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। এটা শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের নারীরা অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’
একই সঙ্গে সাবিনা বাংলাদেশের নারী ফুটবলে তার আগের প্রজন্মের অবদানের কথা স্মরণ করেন, যারা ফুটবলকে তাদের আবেগ হিসেবে নেয়ার সাহস দেখিয়েছেন।’
সাবিনা বলেন, ‘তাদের মধ্যে অনেকেই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উঠে এসেছেন এবং তাদের পরিবারকে সমর্থন করার দরকার। আমরা যা বেতন পাই, তা দিয়ে পরিবারকে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারি না। কারণ, আমরা বেশি কিছু পাই না।’
নারী ফুটবল দলের অনেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসেছেন বলে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তাদের পরিবারের অনেক বিষয় আছে, রাস্তাঘাটের বিষয় আছে। যেখানে সরকারের বিভিন্ন অঙ্গ জড়িত। তারা সেটা সমাধানের জন্য কাজ করবে।’
‘প্রধান উপদেষ্টা খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেছেন। যাতে করে আমাদের বিজয়ের ধারা অব্যাহত থাকে,’ বলেন আসিফ।
সাবিনা তার কয়েকজন সতীর্থের উঠে আসার সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। যেমন মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দা, যিনি উঠে এসেছেন ময়মনসিংহের কলসিন্দুর থেকে। মারিয়া তার বাবাকে হারিয়েছেন ছোটবেলায়। মা তাকে লালন পালন করেছেন। কলসিন্দুর থেকে সাফজয়ী দলে ৬ জন খেলোয়াড় আছেন।
দলের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি অনুরোধ করেছেন এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা করতে। বিশেষ করে মেয়েদের সর্বশেষ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলার কথা বলেছেন কৃষ্ণা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার। উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও।
কাঠমা-ুর দশরথ স্টেডিয়ামে গত বুধবার স্বাগতিক নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ। বাফুফে ভবনে দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হাতে এক কোটি টাকার পুরস্কারের চেক তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।