কঠোর লকডাউনের ১২তম দিন
কঠোর বিধিনিষেধ একদিন শিথিলতার পর রাজধানী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর সর্বত্রই যানবাহন এবং মানুষের চাপ গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত গাড়ীর সংখ্যা অন্য যেকোন দিনের তুলনায় বেশী। সড়কের চিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই যে, দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে।রাস্তার চিত্র দেখে মনেহয়, শুধু গণ পরিবহন ছাড়া সবই আছে।
রবিবার ১৬ ঘণ্টার জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় পর এমন চিত্র। গাবতলী-গুলিস্থান, মোহাম্মদপুর-সাইনবোর্ড, মিরপুর- গুলিস্থানসহ সব এলাকায় অবাধে চলছে সব। এর পাশাপাশি সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করে। রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সব রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। শিল্প-কারখানা ও গার্মেন্টস খোলার পর অতিরিক্ত গাড়ির চাপে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।
রাজধানীর সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কোন চেকপোষ্ট চোঁখে পড়েনাই, তারা মোটামুটি অনান্য দিনের তুলনায় নিষ্ক্রিয়। অন্যান্য দিন নগরীর যেসব জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট ছিল আজ সেখানে কোনো চেকপোস্ট এবং পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। মোটকথা পুলিশের উদাসীনতা এবং সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে সব ধরনের যানবাহন ঢাকার রাস্তায় চলাচল করছে।
খোঁজনিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীতে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় রাজধানীবাসী কর্মস্থলে এবং জরুরি কাজে যাওয়ার পথের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। যানবাহনের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। বাস বন্ধ রেখে অফিস খুলে দেওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদ পুর ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। এমনকি ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলও যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
বনানীতে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জিলফুল মুরাদ শানু বলেন, অফিস চালু থাকার কারণে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই অফিসে যেতে হয়। যেহেতু অফিসে যেতে হয় সেহেতু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সুফল মিলছে না। মতিঝিলে কাজ করা এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, এখানকার প্রায় ৯০শতাংশ অফিস খোলা। অফিস যেহেতু খোলা তাই বিধিনিষেধের মধ্যেই আসতে হচ্ছে। তবে, আজ রাস্তায় জ্যাম থাকলেও আসতে কোন সমস্যা হয়নি।
সকাল সাড়ে ৯টায় রামপুরা এলাকায় পিকআপের যাত্রী হয়ে লোকজনকে অফিসে যেতে হয়। মানুষে ঠাসা ছোট পিকআপটি মতিঝিল হয়ে যাত্রাবাড়ীর দিকে চলে যায়। যাত্রাবাড়ী এলাকায় রিকশাভ্যানে পাঁচ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে লোকজনকে যেতে হয়েছে। তারপরে সবাই যেতে পারেনি, হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটেই কর্মস্থলের রওনা হয়।
ফার্মগেটে এক রিক্সা যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, আমরা যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তারাই পড়ছি চরম বিপদে। রাস্তায় সব চলছে শুধু গণ পরিবহন নাই। এখন ১০ টাকার ভাড়া রিক্সায় ১০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, খুব জরুরী প্রয়োজনে বাইরে যাবার কথা বললেও তারা বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হচ্ছে। এদের কোন কারণেই থামানো যাচ্ছেনা। আমরা তাদের সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছি।
গণভবন এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আতিক মাহমুদ সংবাদকে বলেন, কিছু অফিস আদালত বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ দিনের তুলনায় গাড়ীর চাপ কম। তিনি আরো বলেন, আমরা নিজেরাও সাধ্যমাত বোঝানোর চেষ্টা করছি মানুষদের তারা যেন অকারণে বের না হন। যতক্ষণ না মানুষ নিজেরা সচেতন না হয় ততদিন লকডাউন আইন দিয়ে বাস্তবায়ন সম্ভবনা।
সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।
বিধিনিষেধের মধ্যে খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন/প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল কারখানা, কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানা ছাড়া বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            কঠোর লকডাউনের ১২তম দিন
মঙ্গলবার, ০৩ আগস্ট ২০২১
কঠোর বিধিনিষেধ একদিন শিথিলতার পর রাজধানী আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর সর্বত্রই যানবাহন এবং মানুষের চাপ গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত গাড়ীর সংখ্যা অন্য যেকোন দিনের তুলনায় বেশী। সড়কের চিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই যে, দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে।রাস্তার চিত্র দেখে মনেহয়, শুধু গণ পরিবহন ছাড়া সবই আছে।
রবিবার ১৬ ঘণ্টার জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় পর এমন চিত্র। গাবতলী-গুলিস্থান, মোহাম্মদপুর-সাইনবোর্ড, মিরপুর- গুলিস্থানসহ সব এলাকায় অবাধে চলছে সব। এর পাশাপাশি সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করে। রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সব রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। শিল্প-কারখানা ও গার্মেন্টস খোলার পর অতিরিক্ত গাড়ির চাপে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।
রাজধানীর সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কোন চেকপোষ্ট চোঁখে পড়েনাই, তারা মোটামুটি অনান্য দিনের তুলনায় নিষ্ক্রিয়। অন্যান্য দিন নগরীর যেসব জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট ছিল আজ সেখানে কোনো চেকপোস্ট এবং পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। মোটকথা পুলিশের উদাসীনতা এবং সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে সব ধরনের যানবাহন ঢাকার রাস্তায় চলাচল করছে।
খোঁজনিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীতে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় রাজধানীবাসী কর্মস্থলে এবং জরুরি কাজে যাওয়ার পথের চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। যানবাহনের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। বাস বন্ধ রেখে অফিস খুলে দেওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদ পুর ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। এমনকি ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলও যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
বনানীতে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জিলফুল মুরাদ শানু বলেন, অফিস চালু থাকার কারণে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই অফিসে যেতে হয়। যেহেতু অফিসে যেতে হয় সেহেতু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সুফল মিলছে না। মতিঝিলে কাজ করা এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, এখানকার প্রায় ৯০শতাংশ অফিস খোলা। অফিস যেহেতু খোলা তাই বিধিনিষেধের মধ্যেই আসতে হচ্ছে। তবে, আজ রাস্তায় জ্যাম থাকলেও আসতে কোন সমস্যা হয়নি।
সকাল সাড়ে ৯টায় রামপুরা এলাকায় পিকআপের যাত্রী হয়ে লোকজনকে অফিসে যেতে হয়। মানুষে ঠাসা ছোট পিকআপটি মতিঝিল হয়ে যাত্রাবাড়ীর দিকে চলে যায়। যাত্রাবাড়ী এলাকায় রিকশাভ্যানে পাঁচ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা দিয়ে লোকজনকে যেতে হয়েছে। তারপরে সবাই যেতে পারেনি, হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটেই কর্মস্থলের রওনা হয়।
ফার্মগেটে এক রিক্সা যাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, আমরা যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তারাই পড়ছি চরম বিপদে। রাস্তায় সব চলছে শুধু গণ পরিবহন নাই। এখন ১০ টাকার ভাড়া রিক্সায় ১০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, খুব জরুরী প্রয়োজনে বাইরে যাবার কথা বললেও তারা বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হচ্ছে। এদের কোন কারণেই থামানো যাচ্ছেনা। আমরা তাদের সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছি।
গণভবন এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আতিক মাহমুদ সংবাদকে বলেন, কিছু অফিস আদালত বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ দিনের তুলনায় গাড়ীর চাপ কম। তিনি আরো বলেন, আমরা নিজেরাও সাধ্যমাত বোঝানোর চেষ্টা করছি মানুষদের তারা যেন অকারণে বের না হন। যতক্ষণ না মানুষ নিজেরা সচেতন না হয় ততদিন লকডাউন আইন দিয়ে বাস্তবায়ন সম্ভবনা।
সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।
বিধিনিষেধের মধ্যে খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন/প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল কারখানা, কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানা ছাড়া বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।
