alt

বাংলাদেশে নতুন প্রচলিত চায়না দুয়ারী জাল কেন বিপজ্জনক?

ডেস্ক রিপোর্ট : সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মৎস শিকারের জন্য নতুন এক ধরণের জালের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, যা নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের মত মিহি ও হালকা, এবং এই জাল একবারে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে মাছ ধরতে সক্ষম।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, জেলেদের অনেকে এই জাল ব্যবহার করে খুশী। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে এ জাল মাছসহ জলজ জীববৈচিত্র্যের জন্য কারেন্ট জালের চাইতেও ক্ষতিকর।

নতুন এই জালের পরিচিতি চায়না দুয়ারী নামে। শুরুর দিকে মূলত পদ্মা নদীর তীর ধরে এই জালের ব্যবহার হলেও এখন সারা দেশেই, বিশেষত বড় নদীর ধারে, চায়না দুয়ারী জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। এটিকে জাল হিসেবে বর্ণনা করা হলেও মৎস বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে চায়না দুয়ারী মূলত মাছ ধরার এক ধরণের ফাঁদ।

এই জালের বুননে একটি গিঁঠ থেকে আরেকটি গিঁঠের দূরত্ব খুব কম, যে কারণে এতে মাছ একবার ঢুকলে আর বের হতে পারে না। একে চায়না জাল, ম্যাজিক জাল এবং ঢলুক জাল নামেও ডাকা হয়।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মাছ ধরার জালের মেস-সাইজ অর্থাৎ জালে একেকটি গিঁঠের দূরত্বের অনুমোদিত পরিমাপ উল্লেখ আছে এবং এই মাপটি সাড়ে চার সেন্টিমিটার। জালের ‌‌‌‌‘মেস-সাইজ’ এর চেয়ে কম হলে, সেটি দেশের আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। ‘এই কারণে বাংলাদেশে কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ, ঠিক একই কারণে চায়না দুয়ারীও নিষিদ্ধ,’ বলছিলেন এই মৎস কর্মকর্তা।

তবে এক্ষেত্রে একটি ফাঁক থেকে যাচ্ছে। মি. সাহা নিশ্চিত করেছেন যে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জালের তালিকায় চায়না দুয়ারীর উল্লেখ নাই, যদিও আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী এটি নিষিদ্ধ।

‘সেই সুযোগটিই অনেক জেলে নিচ্ছেন।’ নাম চায়না দুয়ারী বলা হলেও এই জাল উৎপাদিত হয় বাংলাদেশেই।

জেলেদের জালে ধরা পড়া নানা জাতের ও আকারের মাছ বাজারে তোলার জন্য নেয়া হচ্ছে

তবে জালের সুতা সূক্ষ্ম আর মিহি বলে অনেকের ধারণা এ সুতা চীন থেকে আমদানি করা হয়। জালের দুই মাথা খোলা বলে একে দুয়ারী বলা হয়। মান এবং দৈর্ঘ্য ভেদে চায়না দুয়ারীর আকার নির্ধারিত হয়।

সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে এই জাল। প্রস্থ হবে এক থেকে দেড় ফুট, আর এর গিঁঠ হবে খুবই ক্ষুদ্র।

লোহার চারকোনা রড দিয়ে অনেকগুলো ফ্রেম বানানো হয় জালের মধ্যে দেয়ার জন্য, এবং প্রয়োজন অনুসারে জালের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী রডের ফ্রেমের সংখ্যা নির্ধারিত হয়। এটি নদীর একেবারে তলদেশ পর্যন্ত যায় এবং তলদেশের মাটির সাথে মিশে থাকে। ফলে কোন মাছ একবার জালে ঢুকলে আর বের হতে পারে না। আর এই জাল এত সূক্ষ্ম যে ছোট ছোট জাতের মাছ, এমনকি মাছের ডিমও অনেক সময় উঠে আসে।

দৈর্ঘ্য এবং মান অনুযায়ী একটি চায়না দুয়ারীর দাম সাড়ে তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে জেলে ও মৎস বিভাগের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মি. সাহা বলেছেন, চায়না দুয়ারীর জালের কারণে নদীতে মাছের বিচরণ কঠিন হয়ে গেছে। আর সেক্ষেত্রে কারেন্ট জালের চাইতেও বিপজ্জনক চায়না দুয়ারী। দুইটি জালের মধ্যে সাদৃশ্য যেমন আছে, তেমনই কিছু পার্থক্যও আছে। যেমন, কারেন্ট জাল নদীর মাঝখানে আড়াআড়ি পাতা হয়। কিন্তু চায়না দুয়ারী নদীর কম গভীর অংশে পাতা হয়।

দুইটি জালই হালকা ও মিহি বুননের হলেও চায়না দুয়ারী ছোট ফাঁসবিশিষ্ট, যা কপাটের মত কাজ করে। এতে মাছসহ যেকোন জলজ প্রাণী একবার ঢুকে পড়লে জালের মুখ বন্ধ হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই কারণে জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎসবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বিজয়া পাল বলেন, যে প্রক্রিয়ায় চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ ধরা হয়, তার কারণে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দুই ধরণের ক্ষতিই হয়।

তিনি বলেন, নদীতে চায়না দুয়ারী জাল একবার পাতা হলে তাতে মাছ, মাছের বাচ্চা বা পোনা, এবং এমনকি মাছের ডিমও উঠে আসে। আবার যত মাছ ধরা পড়ে তার সবই ‘টার্গেটেড’ মাছ নয়।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বাজারে চাহিদা নেই, এমন অনেক মাছ ধরা পড়ে। সেগুলো জেলেরা ফেলে দেয়, কিন্তু সেগুলো বেশিরভাগ সময় আর বাঁচে না।

‘এর মানে হচ্ছে, এই মাছগুলো আর বংশবৃদ্ধি করতে পারলো না। এর মধ্যে হয়তো অনেক মাছ আছে, যা বিপন্ন প্রজাতির।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে ১০০র বেশি দেশি প্রজাতির মাছ বাজার থেকে ‘প্রায় নেই’ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশে মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, উন্মুক্ত জলাশয়ে জন্মানো প্রতিটি মাছকে একবার ডিম ছাড়া ও বাচ্চা ফুটানোর সুযোগ দিতে হবে। তার আগে মাছের পোনা ধরা আইনত দণ্ডনীয় একটি অপরাধ।

ছবি

জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় রামপুরায় হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ: পাঁচ আসামির বিচার শুরু

ছবি

সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিসের আবেদন

ছবি

সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

টিআইবির প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ মন্ত্রীদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় অতি আগ্রহ কেন?

ছবি

নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি: ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে অপমানিত করা হয়েছে

ছবি

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ

ছবি

আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয় নি: সিলেটে আসিফ নজরুল

ছবি

অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার দুটি লকার জব্দ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৬২২

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহের-আখতার

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে চারটি পদ্ধতির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ছবি

ডেমু ট্রেন কেনায় রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের মামলা

ছবি

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের প্রধান বিচারপতির বৈঠক

ছবি

ট্রাইব্যুনাল: নাহিদের সাক্ষ্য বুধবার, মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন

ছবি

ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা: বাংলাদেশ-ভারতের ভৌগোলিক নৈকট্য ও আন্তঃনির্ভতা নতুন সুযোগে রূপান্তরের সম্ভাবনা

ছবি

ধর্মীয় উৎসবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নয়, সমান নাগরিক অধিকারের বাংলাদেশ চান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য বুধবার

ছবি

জুলাই আন্দোলন: ইনু-নূরসহ ৯ আসামির ভার্চুয়াল হাজিরা

ছবি

বাংলাদেশে উষ্ণায়নের প্রভাব: কর্মদিবস নষ্ট, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যে বড় ক্ষতি

ছবি

এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য সচিব

ছবি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা

ছবি

দুর্গাপূজা প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালকদের দপ্তর বদল, একজনকে ওএসডি

ছবি

ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাল বাংলাদেশ

ছবি

আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ছাড়াল ৩৮ হাজার

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে অঙ্গীকার ইউনূসের

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি : মাইকেল মিলার

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার হাতে ১২ তরুণ পেলেন ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’

ছবি

ইসিতে নিবন্ধন: নতুন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চলছে

ছবি

সেপ্টেম্বরের শেষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি

ছবি

দ্বিমতের কোনো জায়গা নাই, এই সুযোগ আর আসবে না: ইউনূস

ছবি

নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারিত সময়ের আগেই

tab

বাংলাদেশে নতুন প্রচলিত চায়না দুয়ারী জাল কেন বিপজ্জনক?

ডেস্ক রিপোর্ট

সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মৎস শিকারের জন্য নতুন এক ধরণের জালের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, যা নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের মত মিহি ও হালকা, এবং এই জাল একবারে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে মাছ ধরতে সক্ষম।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, জেলেদের অনেকে এই জাল ব্যবহার করে খুশী। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে এ জাল মাছসহ জলজ জীববৈচিত্র্যের জন্য কারেন্ট জালের চাইতেও ক্ষতিকর।

নতুন এই জালের পরিচিতি চায়না দুয়ারী নামে। শুরুর দিকে মূলত পদ্মা নদীর তীর ধরে এই জালের ব্যবহার হলেও এখন সারা দেশেই, বিশেষত বড় নদীর ধারে, চায়না দুয়ারী জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। এটিকে জাল হিসেবে বর্ণনা করা হলেও মৎস বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে চায়না দুয়ারী মূলত মাছ ধরার এক ধরণের ফাঁদ।

এই জালের বুননে একটি গিঁঠ থেকে আরেকটি গিঁঠের দূরত্ব খুব কম, যে কারণে এতে মাছ একবার ঢুকলে আর বের হতে পারে না। একে চায়না জাল, ম্যাজিক জাল এবং ঢলুক জাল নামেও ডাকা হয়।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মাছ ধরার জালের মেস-সাইজ অর্থাৎ জালে একেকটি গিঁঠের দূরত্বের অনুমোদিত পরিমাপ উল্লেখ আছে এবং এই মাপটি সাড়ে চার সেন্টিমিটার। জালের ‌‌‌‌‘মেস-সাইজ’ এর চেয়ে কম হলে, সেটি দেশের আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। ‘এই কারণে বাংলাদেশে কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ, ঠিক একই কারণে চায়না দুয়ারীও নিষিদ্ধ,’ বলছিলেন এই মৎস কর্মকর্তা।

তবে এক্ষেত্রে একটি ফাঁক থেকে যাচ্ছে। মি. সাহা নিশ্চিত করেছেন যে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জালের তালিকায় চায়না দুয়ারীর উল্লেখ নাই, যদিও আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী এটি নিষিদ্ধ।

‘সেই সুযোগটিই অনেক জেলে নিচ্ছেন।’ নাম চায়না দুয়ারী বলা হলেও এই জাল উৎপাদিত হয় বাংলাদেশেই।

জেলেদের জালে ধরা পড়া নানা জাতের ও আকারের মাছ বাজারে তোলার জন্য নেয়া হচ্ছে

তবে জালের সুতা সূক্ষ্ম আর মিহি বলে অনেকের ধারণা এ সুতা চীন থেকে আমদানি করা হয়। জালের দুই মাথা খোলা বলে একে দুয়ারী বলা হয়। মান এবং দৈর্ঘ্য ভেদে চায়না দুয়ারীর আকার নির্ধারিত হয়।

সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে এই জাল। প্রস্থ হবে এক থেকে দেড় ফুট, আর এর গিঁঠ হবে খুবই ক্ষুদ্র।

লোহার চারকোনা রড দিয়ে অনেকগুলো ফ্রেম বানানো হয় জালের মধ্যে দেয়ার জন্য, এবং প্রয়োজন অনুসারে জালের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী রডের ফ্রেমের সংখ্যা নির্ধারিত হয়। এটি নদীর একেবারে তলদেশ পর্যন্ত যায় এবং তলদেশের মাটির সাথে মিশে থাকে। ফলে কোন মাছ একবার জালে ঢুকলে আর বের হতে পারে না। আর এই জাল এত সূক্ষ্ম যে ছোট ছোট জাতের মাছ, এমনকি মাছের ডিমও অনেক সময় উঠে আসে।

দৈর্ঘ্য এবং মান অনুযায়ী একটি চায়না দুয়ারীর দাম সাড়ে তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে জেলে ও মৎস বিভাগের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মি. সাহা বলেছেন, চায়না দুয়ারীর জালের কারণে নদীতে মাছের বিচরণ কঠিন হয়ে গেছে। আর সেক্ষেত্রে কারেন্ট জালের চাইতেও বিপজ্জনক চায়না দুয়ারী। দুইটি জালের মধ্যে সাদৃশ্য যেমন আছে, তেমনই কিছু পার্থক্যও আছে। যেমন, কারেন্ট জাল নদীর মাঝখানে আড়াআড়ি পাতা হয়। কিন্তু চায়না দুয়ারী নদীর কম গভীর অংশে পাতা হয়।

দুইটি জালই হালকা ও মিহি বুননের হলেও চায়না দুয়ারী ছোট ফাঁসবিশিষ্ট, যা কপাটের মত কাজ করে। এতে মাছসহ যেকোন জলজ প্রাণী একবার ঢুকে পড়লে জালের মুখ বন্ধ হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই কারণে জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎসবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বিজয়া পাল বলেন, যে প্রক্রিয়ায় চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ ধরা হয়, তার কারণে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দুই ধরণের ক্ষতিই হয়।

তিনি বলেন, নদীতে চায়না দুয়ারী জাল একবার পাতা হলে তাতে মাছ, মাছের বাচ্চা বা পোনা, এবং এমনকি মাছের ডিমও উঠে আসে। আবার যত মাছ ধরা পড়ে তার সবই ‘টার্গেটেড’ মাছ নয়।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বাজারে চাহিদা নেই, এমন অনেক মাছ ধরা পড়ে। সেগুলো জেলেরা ফেলে দেয়, কিন্তু সেগুলো বেশিরভাগ সময় আর বাঁচে না।

‘এর মানে হচ্ছে, এই মাছগুলো আর বংশবৃদ্ধি করতে পারলো না। এর মধ্যে হয়তো অনেক মাছ আছে, যা বিপন্ন প্রজাতির।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে ১০০র বেশি দেশি প্রজাতির মাছ বাজার থেকে ‘প্রায় নেই’ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশে মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, উন্মুক্ত জলাশয়ে জন্মানো প্রতিটি মাছকে একবার ডিম ছাড়া ও বাচ্চা ফুটানোর সুযোগ দিতে হবে। তার আগে মাছের পোনা ধরা আইনত দণ্ডনীয় একটি অপরাধ।

back to top