জনপ্রশাসনে মাঝামাঝি ও নিচের স্তরে পদের চেয়ে কর্মকর্তা বেশি। তবে সচিব ও সমপর্যায় এবং সিনিয়র সচিব পদে এই সমস্যা নেই। কিন্তু পদস্বল্পতার কারণে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশকেই ‘ইন-সি-টু’ হিসেবে নিচের পদে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। নিচের স্তর সহকারী সচিব থেকে ওপরের স্তর অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত-এই পাঁচ স্তরে সাত শতাধিক কর্মকর্তা ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ও সংযুক্ত আছেন।
পদোন্নতি পেয়েও আগের পদে দায়িত্বপালন করে আসা অনেক কর্মকর্তাই অস্বস্থিতে ভুগছেন। কারণ, পদোন্নতিতে কর্মকর্তাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাড়লেও অনেক ক্ষেত্রেই দাপ্তরিক সুবিধা বাড়ছে না।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কর্মরত একজন উপসচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, ‘আমি নিচের পদে অর্থাৎ সিনিয়র সহকারী সচিবের দায়িত্বই পালন করছি। মূলত, আমার পদোন্নতি হয়েছে, মর্যাদা বেড়েছে; কিন্তু দাপ্তরিক উন্নতি ঘটেনি। এটি না হওয়ায় সরকার আমাকে যে সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, আমি সেভাবে সরকারকে প্রতিদান দিতে পারছি না। কারণ, আমাকে এখনও কেরানির কাজই করতে হচ্ছে। এই অবস্থার স্থায়ী সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি আদর্শ ও কার্যকর আমলাতন্ত্রের কাঠামো পিরামিডের মতো হওয়া উচিত। যেখানে নিচের দিকে জনবল বেশি থাকবে এবং ওপরের দিকে জনবল কম থাকবে। কিন্তু দেশের আমলাতন্ত্রে আদর্শ কাঠামোর উল্টো চিত্র বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন অতিরিক্ত সচিব সংবাদকে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের তুলনায় হয় না। যেমন সরকারি কলেজের একজন অধ্যাপক কিংবা একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব তার সহকর্মীরা করতে পারবেন। কিন্তু একজন সচিবের দায়িত্ব কি নিচের পদের কর্মকর্তারা করতে পারবেন? অনেক সময় অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হলেও তারা রুটিন কাজের বাইরে নীতিনির্ধারণ পর্যায়ের কোন কাজ করতে পারেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি তা ধরেননি। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারাও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন মতামত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উপসচিবের (গ্রেড-৫) মোট স্থায়ী পদ রয়েছে এক হাজার ৩২৪টি। এর বিপরীতে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট কর্মরত উপসচিব আছেন এক হাজার ৯৫৬ জন। অর্থাৎ মোট পদের চেয়ে ৬৩২ জন কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন। পদ স্বল্পতার কারণে উপসচিব পদে ওএসডি আছেন ৩০৩ জন কর্মকর্তা।
উপসচিবের উপরের স্তর যুগ্ম সচিব পর্যায়ে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে সরকারের মোট পদ রয়েছে ৫০২টি। এর বিপরীতে সরকারের মোট যুগ্ম সচিব আছেন ৫৯৯ জন। তাদের মধ্যে আবার ওএসডি আছেন ১২৩ জন কর্মকর্তা।
যুগ্ম সচিবের ওপরের স্তর অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-২)। তাদের মধ্য থেকেই সরকারের সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। এই স্তরে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে সরকারের মোট পদ রয়েছে ২১২টি। এসব পদের বিপরীতে সরকারের মোট অতিরিক্ত আছেন ৪৯৯ জন। এ হিসাবে মোট পদের চেয়ে ২৮৭ জন বেশি কর্মকর্তা রয়েছেন। পদের চেয়ে কর্মকর্তা বেশি হওয়ায় এই স্তরে অধিকাংশ কর্মকর্তাকেই ইন-সি-টু হিসেবে নিচের পদে অর্থাৎ যুগ্ম সচিবের দায়িত্বপালন করতে হচ্ছে। তবে ওএসডি আছেন মাত্র ছয়জন অতিরিক্ত সচিব।
প্রশাসনের ওপরের স্তর গুলোতে পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি থাকলেও নিচের স্তরে ভিন্ন চিত্র বিরাজ করছে। উপসচিবের নিচের স্তর সিনিয়র সহকারী সচিব। এই স্তরে বর্তমানে কর্মকর্তার সংখ্যা এক হাজার ৫১৮ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ওএসডি আছেন ১৬৮ জন। আর বর্তমানে সিনিয়র সহকারী সচিবের পদ রয়েছে এক হাজার ৭৪০টি।
সিনিয়র সহকারী সচিবের (গ্রেড-৬) নিচের স্তর সহকারী সচিব পদে বর্তমানে কর্মকর্তার সংখ্যা এক হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১১৩ জন কর্মকর্তা ওএসডি আছেন। বর্তমানে সহকারী সচিবের পদ রয়েছে এক হাজার ৩১৪টি।
সরকারি প্রশাসনের উপরের স্তরে সিনিয়র সচিব (সুপার গ্রেড) ও সচিবের (গ্রেড-১) ৭৪টি পদের বিপরীতে ৭৪ জন কর্মকর্তাই কর্মরত আছেন। এ ছাড়া সচিব সমমর্যাদার ১৬টি সংস্থায় গ্রেড-১ পদে ১৬ জন কর্মকর্তাই দায়িত্বে আছেন।
জনপ্রশাসন অর্থাৎ বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে পদের চেয়ে বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতির ঢালাও নজির শুরু হয় ২০১০ সালের পর। তার আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দু-একটি ক্ষেত্রে এই ‘ইন-সি-টু’ হিসেবে দায়িত্বপালনের নজির ছিল। গত ১০ বছরে এই ধরনের পদোন্নতির ব্যাপকতা বেড়েছে।
প্রশাসন ক্যাডার ছাড়াও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা এবং পুলিশ ক্যাডারে পদের চেয়ে বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতির নজির রয়েছে। তবে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বিসিএসের অন্য ২৬টি ক্যাডারে পদ শূন্য না থাকায় তাদের পদোন্নতির জন্য বছরের পর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এ কারণে আন্তঃক্যাডার বৈষম্যও সৃষ্টি হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাম্প্রতিক এক জরিপে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসনের বর্তমান অবস্থা নানান সমস্যার সৃষ্টি করে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সংবাদকে বলেন, যেকোন প্রশাসনের কাঠামো পিরামিডের মতো হওয়া উচিত। কিন্তু যেকোন কার্যকর সংস্থার অর্গানোগ্রামের তুলনায় জনপ্রশাসনের শীর্ষ পদের কাঠামো একেবারে বিপরীত।
তিনি বলেন, ‘এই সাংগঠনিক কাঠামো প্রশাসনিক দক্ষতা ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে বাধা দেয়। এটি নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি করে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘মূল বিষয়টি হলো-আমাদের এখানে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রণয়ন ও প্রয়োজন অনুযায়ী নীরব। যে কারণে প্রশাসনের উপরের দিকে একটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে একদিনে সুশাসনের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। আরেকদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইনসেনটিভের ঘাটতি হয়। অর্থাৎ, তারা উপরের দিকে ওঠতে পারেন না।’
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
জনপ্রশাসনে মাঝামাঝি ও নিচের স্তরে পদের চেয়ে কর্মকর্তা বেশি। তবে সচিব ও সমপর্যায় এবং সিনিয়র সচিব পদে এই সমস্যা নেই। কিন্তু পদস্বল্পতার কারণে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশকেই ‘ইন-সি-টু’ হিসেবে নিচের পদে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। নিচের স্তর সহকারী সচিব থেকে ওপরের স্তর অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত-এই পাঁচ স্তরে সাত শতাধিক কর্মকর্তা ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ও সংযুক্ত আছেন।
পদোন্নতি পেয়েও আগের পদে দায়িত্বপালন করে আসা অনেক কর্মকর্তাই অস্বস্থিতে ভুগছেন। কারণ, পদোন্নতিতে কর্মকর্তাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বাড়লেও অনেক ক্ষেত্রেই দাপ্তরিক সুবিধা বাড়ছে না।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কর্মরত একজন উপসচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, ‘আমি নিচের পদে অর্থাৎ সিনিয়র সহকারী সচিবের দায়িত্বই পালন করছি। মূলত, আমার পদোন্নতি হয়েছে, মর্যাদা বেড়েছে; কিন্তু দাপ্তরিক উন্নতি ঘটেনি। এটি না হওয়ায় সরকার আমাকে যে সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, আমি সেভাবে সরকারকে প্রতিদান দিতে পারছি না। কারণ, আমাকে এখনও কেরানির কাজই করতে হচ্ছে। এই অবস্থার স্থায়ী সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি আদর্শ ও কার্যকর আমলাতন্ত্রের কাঠামো পিরামিডের মতো হওয়া উচিত। যেখানে নিচের দিকে জনবল বেশি থাকবে এবং ওপরের দিকে জনবল কম থাকবে। কিন্তু দেশের আমলাতন্ত্রে আদর্শ কাঠামোর উল্টো চিত্র বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন অতিরিক্ত সচিব সংবাদকে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের তুলনায় হয় না। যেমন সরকারি কলেজের একজন অধ্যাপক কিংবা একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব তার সহকর্মীরা করতে পারবেন। কিন্তু একজন সচিবের দায়িত্ব কি নিচের পদের কর্মকর্তারা করতে পারবেন? অনেক সময় অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হলেও তারা রুটিন কাজের বাইরে নীতিনির্ধারণ পর্যায়ের কোন কাজ করতে পারেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি তা ধরেননি। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারাও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন মতামত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উপসচিবের (গ্রেড-৫) মোট স্থায়ী পদ রয়েছে এক হাজার ৩২৪টি। এর বিপরীতে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট কর্মরত উপসচিব আছেন এক হাজার ৯৫৬ জন। অর্থাৎ মোট পদের চেয়ে ৬৩২ জন কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন। পদ স্বল্পতার কারণে উপসচিব পদে ওএসডি আছেন ৩০৩ জন কর্মকর্তা।
উপসচিবের উপরের স্তর যুগ্ম সচিব পর্যায়ে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে সরকারের মোট পদ রয়েছে ৫০২টি। এর বিপরীতে সরকারের মোট যুগ্ম সচিব আছেন ৫৯৯ জন। তাদের মধ্যে আবার ওএসডি আছেন ১২৩ জন কর্মকর্তা।
যুগ্ম সচিবের ওপরের স্তর অতিরিক্ত সচিব (গ্রেড-২)। তাদের মধ্য থেকেই সরকারের সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। এই স্তরে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে সরকারের মোট পদ রয়েছে ২১২টি। এসব পদের বিপরীতে সরকারের মোট অতিরিক্ত আছেন ৪৯৯ জন। এ হিসাবে মোট পদের চেয়ে ২৮৭ জন বেশি কর্মকর্তা রয়েছেন। পদের চেয়ে কর্মকর্তা বেশি হওয়ায় এই স্তরে অধিকাংশ কর্মকর্তাকেই ইন-সি-টু হিসেবে নিচের পদে অর্থাৎ যুগ্ম সচিবের দায়িত্বপালন করতে হচ্ছে। তবে ওএসডি আছেন মাত্র ছয়জন অতিরিক্ত সচিব।
প্রশাসনের ওপরের স্তর গুলোতে পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি থাকলেও নিচের স্তরে ভিন্ন চিত্র বিরাজ করছে। উপসচিবের নিচের স্তর সিনিয়র সহকারী সচিব। এই স্তরে বর্তমানে কর্মকর্তার সংখ্যা এক হাজার ৫১৮ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ওএসডি আছেন ১৬৮ জন। আর বর্তমানে সিনিয়র সহকারী সচিবের পদ রয়েছে এক হাজার ৭৪০টি।
সিনিয়র সহকারী সচিবের (গ্রেড-৬) নিচের স্তর সহকারী সচিব পদে বর্তমানে কর্মকর্তার সংখ্যা এক হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১১৩ জন কর্মকর্তা ওএসডি আছেন। বর্তমানে সহকারী সচিবের পদ রয়েছে এক হাজার ৩১৪টি।
সরকারি প্রশাসনের উপরের স্তরে সিনিয়র সচিব (সুপার গ্রেড) ও সচিবের (গ্রেড-১) ৭৪টি পদের বিপরীতে ৭৪ জন কর্মকর্তাই কর্মরত আছেন। এ ছাড়া সচিব সমমর্যাদার ১৬টি সংস্থায় গ্রেড-১ পদে ১৬ জন কর্মকর্তাই দায়িত্বে আছেন।
জনপ্রশাসন অর্থাৎ বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে পদের চেয়ে বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতির ঢালাও নজির শুরু হয় ২০১০ সালের পর। তার আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দু-একটি ক্ষেত্রে এই ‘ইন-সি-টু’ হিসেবে দায়িত্বপালনের নজির ছিল। গত ১০ বছরে এই ধরনের পদোন্নতির ব্যাপকতা বেড়েছে।
প্রশাসন ক্যাডার ছাড়াও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা এবং পুলিশ ক্যাডারে পদের চেয়ে বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতির নজির রয়েছে। তবে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বিসিএসের অন্য ২৬টি ক্যাডারে পদ শূন্য না থাকায় তাদের পদোন্নতির জন্য বছরের পর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এ কারণে আন্তঃক্যাডার বৈষম্যও সৃষ্টি হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাম্প্রতিক এক জরিপে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসনের বর্তমান অবস্থা নানান সমস্যার সৃষ্টি করে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সংবাদকে বলেন, যেকোন প্রশাসনের কাঠামো পিরামিডের মতো হওয়া উচিত। কিন্তু যেকোন কার্যকর সংস্থার অর্গানোগ্রামের তুলনায় জনপ্রশাসনের শীর্ষ পদের কাঠামো একেবারে বিপরীত।
তিনি বলেন, ‘এই সাংগঠনিক কাঠামো প্রশাসনিক দক্ষতা ও কার্যক্ষমতা বাড়াতে বাধা দেয়। এটি নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি করে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘মূল বিষয়টি হলো-আমাদের এখানে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রণয়ন ও প্রয়োজন অনুযায়ী নীরব। যে কারণে প্রশাসনের উপরের দিকে একটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে একদিনে সুশাসনের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। আরেকদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইনসেনটিভের ঘাটতি হয়। অর্থাৎ, তারা উপরের দিকে ওঠতে পারেন না।’
