দেশে এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে চার লাখ টন বেশি হয়েছে। আউশ, আমন এবং বোরো মৌসুমে সব মিলয়ে দেশে চাল উৎপাদন হয় তিন কোটি টন। খাদ্য অধিদপ্তরের গুদামে চালের মজুদ আছে ১২ লাখ ৬৬ হাজার টন। যা গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত এক বছরে কৃষকের উৎপাদন খরচ যে লক্ষ্যযোগ্যভাবে বেড়েছে তাও নয়। তারপরও চালের দাম বেড়েই চলছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, চাল উৎপাদনকারী অন্যতম চার দেশ ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশে চালের দাম বেশি।
চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বাজারে অনেক নতুন ফড়িয়া ব্যবসায়ী যুক্ত হয়ে ধান মজুত করছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গুদামে চালের মজুদ প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ার কারণেও দাম বাড়ছে বলে অনেকে মনে করছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারের মজুদ ১৫ লাখ টনের নিচে নামলেই বাজারে চালের দাম বেড়ে যায়।
এটা ঠিক যে, সরকারি গুদামে চালের ঘাটতি আছে। তবে গত বছরের তুলনায় ঘাটতি কমেছে। কিন্তু চালের দাম বাড়েনি। গত দেড় বছরে মজুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানি করা হয়েছে। সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, কোনভাবেই চালের বাজার অস্থিতিশীল হতে দেয়া যাবে না। অভ্যন্তরীণ চাল সংগ্রহ জোরদার করার পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনা শীঘ্রই চাল আমদানি করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এসবের ইতিবাচক প্রভাব চালের বাজারে পড়ছে না।
করোনা পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এমনিতেই তারা খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বা ভোগ কমিয়ে দিয়েছে। ভোগ কমার ফলে চাহিদাও কমে গেছে। চালের দাম কমা বা অন্ততপক্ষে স্থিতিশীল থাকার জন্য চাহিদা কমাই যথেষ্ট। কিন্তু এর দাম বাড়ছেই।
যৌক্তিক কোন কারণ ছাড়া দাম বাড়লে বুঝতে হবে কোথাও কোন একটা গলদ আছে। সরকারকে এ গলদ খুঁজে বেড় করতে হবে। অভিযোগ উঠেছে, অবৈধ মজুদদারের কারণে চালের বাজারে দিন দিন অস্থিরতা বাড়ছে। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। মজুতদারদের খুঁজে বেড় করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করা মানুষের আয়রোজগার কম বা বন্ধ হয়ে গেছে। নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়েই চলেছে। চালের মূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতির কারণে দুমুঠো ভাত খেয়ে প্রাণ ধারণ করার পথও কঠিন হয়ে উঠছে।
দাম বাড়ানোর কারসাজির যাঁতাকল থেকে মানুষকে যেকোন উপায়েই হোক রক্ষা করতে হবে। সংকট উত্তরণে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্যের মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে চাল বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে হবে। বাজারের ওপর কঠোর নজরদারি রাখতে হবে, যাতে মজুত বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে। প্রয়োজনে আরও চাল আমদানি করতে হবে। তবে আমানির ক্ষেত্রে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১
দেশে এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে চার লাখ টন বেশি হয়েছে। আউশ, আমন এবং বোরো মৌসুমে সব মিলয়ে দেশে চাল উৎপাদন হয় তিন কোটি টন। খাদ্য অধিদপ্তরের গুদামে চালের মজুদ আছে ১২ লাখ ৬৬ হাজার টন। যা গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত এক বছরে কৃষকের উৎপাদন খরচ যে লক্ষ্যযোগ্যভাবে বেড়েছে তাও নয়। তারপরও চালের দাম বেড়েই চলছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, চাল উৎপাদনকারী অন্যতম চার দেশ ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশে চালের দাম বেশি।
চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বাজারে অনেক নতুন ফড়িয়া ব্যবসায়ী যুক্ত হয়ে ধান মজুত করছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গুদামে চালের মজুদ প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ার কারণেও দাম বাড়ছে বলে অনেকে মনে করছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারের মজুদ ১৫ লাখ টনের নিচে নামলেই বাজারে চালের দাম বেড়ে যায়।
এটা ঠিক যে, সরকারি গুদামে চালের ঘাটতি আছে। তবে গত বছরের তুলনায় ঘাটতি কমেছে। কিন্তু চালের দাম বাড়েনি। গত দেড় বছরে মজুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানি করা হয়েছে। সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, কোনভাবেই চালের বাজার অস্থিতিশীল হতে দেয়া যাবে না। অভ্যন্তরীণ চাল সংগ্রহ জোরদার করার পাশাপাশি বেসরকারি ব্যবস্থাপনা শীঘ্রই চাল আমদানি করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এসবের ইতিবাচক প্রভাব চালের বাজারে পড়ছে না।
করোনা পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এমনিতেই তারা খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বা ভোগ কমিয়ে দিয়েছে। ভোগ কমার ফলে চাহিদাও কমে গেছে। চালের দাম কমা বা অন্ততপক্ষে স্থিতিশীল থাকার জন্য চাহিদা কমাই যথেষ্ট। কিন্তু এর দাম বাড়ছেই।
যৌক্তিক কোন কারণ ছাড়া দাম বাড়লে বুঝতে হবে কোথাও কোন একটা গলদ আছে। সরকারকে এ গলদ খুঁজে বেড় করতে হবে। অভিযোগ উঠেছে, অবৈধ মজুদদারের কারণে চালের বাজারে দিন দিন অস্থিরতা বাড়ছে। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। মজুতদারদের খুঁজে বেড় করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করা মানুষের আয়রোজগার কম বা বন্ধ হয়ে গেছে। নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়েই চলেছে। চালের মূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতির কারণে দুমুঠো ভাত খেয়ে প্রাণ ধারণ করার পথও কঠিন হয়ে উঠছে।
দাম বাড়ানোর কারসাজির যাঁতাকল থেকে মানুষকে যেকোন উপায়েই হোক রক্ষা করতে হবে। সংকট উত্তরণে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্যের মজুদ ও সরবরাহ বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে চাল বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে হবে। বাজারের ওপর কঠোর নজরদারি রাখতে হবে, যাতে মজুত বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে। প্রয়োজনে আরও চাল আমদানি করতে হবে। তবে আমানির ক্ষেত্রে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।