নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দেশে নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার হার ৩০-এর আশপাশে। গত এক সপ্তাহ ধরে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই মারা গেছে দুইশ’র বেশি মানুষ। সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি কিভাবে সামলানো হবে সেটা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চিন্তিত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে চলমান বিধিনিষেধ ৫ আগস্টের পরও আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একদিকে বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে অন্যদিকে সরকার ১ আগস্ট থেকে গার্মেন্টসহ দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পকলকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ১৪ দিনের কঠোরতম বিধিনিষেধে চামড়া, ওষুধ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প ছাড়া সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে এতদিন। গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভায়ও এমন সিদ্ধান্ত হয় যে, ৫ আগস্ট পর্যন্ত পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। অথচ বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার আগেই খুলে দেয়া হচ্ছে রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে সরকার শিল্পকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নিল। শিল্পকারখানা আর দু-চার দিন বন্ধ থাকলে অর্থনীতির কি ক্ষতি হতো তার সুস্পষ্ট কোন পরিসংখ্যান কি সরকারের কাছে আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কিসের ভিত্তিতে শ্রমঘন শিল্পকারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব শিল্পকারখানায় কর্মরত সবার কি করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। এমন কোন নিশ্চয়তা কি মিলেছে যে, কারখানায় কর্মরতদের করোনার সংক্রমণ ঘটবে না বা তাদের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ ছড়াবে না।
শ্রমিকদের বড় একটি অংশই রয়ে গেছে টিকা কর্মসূচির আওতায় বাইরে। কারখানা খোলার কথা জানার পর শ্রমিকদের কর্মস্থলমুখী স্রোতে স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। এর ফলে কারখানা খোলার আগেই করোনার সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
একদিকে লকডাউন চলছে, গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে শিল্পকলকারখানা খুলে দেয়া হচ্ছে। অতীতেও একই ধরনের ভ্রান্তিতে সরকারকে ঘুরপাক খেতে দেখা গেছে। শিল্পকলকারখানা খুললে শ্রমিকরা গ্রাম থেকে কর্মস্থলে ফিরবেন কিভাবে সেটা এবারও ভেবে দেখা হয়নি। আকস্মিকভাবে একেকটি ঘোষণা দিয়ে পথে পথে ভিড় তৈরি করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি সেখানেই ভেঙে পড়ছে। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের অবর্ণনীয় কষ্ট আর অর্থের শ্রাদ্ধ তো আছেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ করতে হলে অন্তত দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন মানতে হবে। তাহলে করোনা বিস্তারের চেইনটি ভাঙা সম্ভব হয়। লকডাউন দেয়ার পর দুই সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই কলকারখানা খুলে দেয়ায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়াবে। গণহারে টিকা দিয়ে, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেও উন্নত অনেক দেশের পক্ষে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পকারখানা খোলার পর করোনার সংক্রমণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি কিভাবে সামলানো হবে, এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী? করোনার সংক্রমণ আগামীতে আরও বাড়লে তার চাপ সামলানোর সক্ষমতা স্বাস্থ্য খাতের কি আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট করে মানুষদের জানাতে হবে।
শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দেশে নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার হার ৩০-এর আশপাশে। গত এক সপ্তাহ ধরে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই মারা গেছে দুইশ’র বেশি মানুষ। সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি কিভাবে সামলানো হবে সেটা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চিন্তিত। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে চলমান বিধিনিষেধ ৫ আগস্টের পরও আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একদিকে বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে অন্যদিকে সরকার ১ আগস্ট থেকে গার্মেন্টসহ দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পকলকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ১৪ দিনের কঠোরতম বিধিনিষেধে চামড়া, ওষুধ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প ছাড়া সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে এতদিন। গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভায়ও এমন সিদ্ধান্ত হয় যে, ৫ আগস্ট পর্যন্ত পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। অথচ বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার আগেই খুলে দেয়া হচ্ছে রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে সরকার শিল্পকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নিল। শিল্পকারখানা আর দু-চার দিন বন্ধ থাকলে অর্থনীতির কি ক্ষতি হতো তার সুস্পষ্ট কোন পরিসংখ্যান কি সরকারের কাছে আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কিসের ভিত্তিতে শ্রমঘন শিল্পকারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব শিল্পকারখানায় কর্মরত সবার কি করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। এমন কোন নিশ্চয়তা কি মিলেছে যে, কারখানায় কর্মরতদের করোনার সংক্রমণ ঘটবে না বা তাদের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ ছড়াবে না।
শ্রমিকদের বড় একটি অংশই রয়ে গেছে টিকা কর্মসূচির আওতায় বাইরে। কারখানা খোলার কথা জানার পর শ্রমিকদের কর্মস্থলমুখী স্রোতে স্বাস্থ্যবিধি চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। এর ফলে কারখানা খোলার আগেই করোনার সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
একদিকে লকডাউন চলছে, গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে শিল্পকলকারখানা খুলে দেয়া হচ্ছে। অতীতেও একই ধরনের ভ্রান্তিতে সরকারকে ঘুরপাক খেতে দেখা গেছে। শিল্পকলকারখানা খুললে শ্রমিকরা গ্রাম থেকে কর্মস্থলে ফিরবেন কিভাবে সেটা এবারও ভেবে দেখা হয়নি। আকস্মিকভাবে একেকটি ঘোষণা দিয়ে পথে পথে ভিড় তৈরি করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি সেখানেই ভেঙে পড়ছে। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের অবর্ণনীয় কষ্ট আর অর্থের শ্রাদ্ধ তো আছেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ করতে হলে অন্তত দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন মানতে হবে। তাহলে করোনা বিস্তারের চেইনটি ভাঙা সম্ভব হয়। লকডাউন দেয়ার পর দুই সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই কলকারখানা খুলে দেয়ায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়াবে। গণহারে টিকা দিয়ে, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেও উন্নত অনেক দেশের পক্ষে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পকারখানা খোলার পর করোনার সংক্রমণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি কিভাবে সামলানো হবে, এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী? করোনার সংক্রমণ আগামীতে আরও বাড়লে তার চাপ সামলানোর সক্ষমতা স্বাস্থ্য খাতের কি আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট করে মানুষদের জানাতে হবে।