গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ও মাতামুহুরী নদীর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ। উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও চকরিয়া পৌরসভার লোকালয়ে পানি ঢুকেছে, ভেঙে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বসতবাড়ির রান্নার চুলা ও টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ির চালা পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে।
এছাড়াও কক্সবাজারের টেকনাফ, চট্টগ্রামের মীরসরাই, সাতকানিয়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবে উপদ্রুত এলাকায় ফসলহানি হয়েছে, গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে গেছে। এ নিয়ে সংবাদসহ দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
অতিবৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢল প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এতে মানুষের নিয়ন্ত্রণ নেই। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে পৃথিবীজুড়েই জলবায়ু বদলে যাচ্ছে, যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে আবহাওয়ার উপর। ভারি বর্ষণ বা তাপমাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। গত জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে ভারি বর্ষণে চীনের হেনান প্রদেশে বন্যা পরিস্থির অবনতি ঘটে। সেখানে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ধারণা করা যায়, আগামীতে আমাদের এ ধরেনের দুর্যোগ বার বার মোকাবিলা করতে হবে। গত বছর দফায় দফায় বন্যা হয়েছে। এতে কৃষক তো বটেই সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমরা যথেষ্ট প্রস্তুত কিনা। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সাফল্য রয়েছে। তারপরেও আগামীদিনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে। যদিও বৈশ্বিক পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য পৃথিবীর শিল্পোউন্নত দেশগুলো বহুলাংশে দায়ী। তারপরেও বাংলাদেশকে নিজের ভূমিকা ভুললে চলবে না। অভ্যন্তরীণভাবে এসব দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য যা করণীয় তাই করতে হবে।
দখল-দূষণে অনেক নদী সংকুচিত হয়ে গেছে। দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। পলি জমে নদ-নদীগুলোর গভীরতা কমে যাওয়ায় পনির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। নদী খনন করে গভীরতা বাড়াতে হবে। তাহলে উজানের ঢলে আমাদের এত দুর্ভোগ নাও হতে পারে। সহজে পানি ভাটিতে চলে যাবে। দেশের নদ-নদীর গভীরতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের কথা শোনা যায়। কিছু কাজও হয়েছে। তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের নদ-নদীগুলো দ্রুত খনন করা দরকার।
করোনা মহামারীতে দেশের মানুষের অবস্থা এমনিতেই শোচনীয়। দফায় দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করায় মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে। এর মধ্যে এমন বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। উপদ্রুত এলাকায় এখনই পর্যাপ্ত ত্রাণ, বিশুদ্ধ পানি ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। সেগুলো যেন সঠিক সময় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বা ভুক্তভোগীদের হাতে পৌঁছায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম দুর্নীতি কাম্য নয়।
শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ও মাতামুহুরী নদীর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ। উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও চকরিয়া পৌরসভার লোকালয়ে পানি ঢুকেছে, ভেঙে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বসতবাড়ির রান্নার চুলা ও টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়ির চালা পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে।
এছাড়াও কক্সবাজারের টেকনাফ, চট্টগ্রামের মীরসরাই, সাতকানিয়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবে উপদ্রুত এলাকায় ফসলহানি হয়েছে, গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে গেছে। এ নিয়ে সংবাদসহ দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
অতিবৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢল প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এতে মানুষের নিয়ন্ত্রণ নেই। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে পৃথিবীজুড়েই জলবায়ু বদলে যাচ্ছে, যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে আবহাওয়ার উপর। ভারি বর্ষণ বা তাপমাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। গত জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে ভারি বর্ষণে চীনের হেনান প্রদেশে বন্যা পরিস্থির অবনতি ঘটে। সেখানে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ধারণা করা যায়, আগামীতে আমাদের এ ধরেনের দুর্যোগ বার বার মোকাবিলা করতে হবে। গত বছর দফায় দফায় বন্যা হয়েছে। এতে কৃষক তো বটেই সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমরা যথেষ্ট প্রস্তুত কিনা। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সাফল্য রয়েছে। তারপরেও আগামীদিনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে। যদিও বৈশ্বিক পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য পৃথিবীর শিল্পোউন্নত দেশগুলো বহুলাংশে দায়ী। তারপরেও বাংলাদেশকে নিজের ভূমিকা ভুললে চলবে না। অভ্যন্তরীণভাবে এসব দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য যা করণীয় তাই করতে হবে।
দখল-দূষণে অনেক নদী সংকুচিত হয়ে গেছে। দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। পলি জমে নদ-নদীগুলোর গভীরতা কমে যাওয়ায় পনির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। নদী খনন করে গভীরতা বাড়াতে হবে। তাহলে উজানের ঢলে আমাদের এত দুর্ভোগ নাও হতে পারে। সহজে পানি ভাটিতে চলে যাবে। দেশের নদ-নদীর গভীরতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের কথা শোনা যায়। কিছু কাজও হয়েছে। তবে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের নদ-নদীগুলো দ্রুত খনন করা দরকার।
করোনা মহামারীতে দেশের মানুষের অবস্থা এমনিতেই শোচনীয়। দফায় দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করায় মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে। এর মধ্যে এমন বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। উপদ্রুত এলাকায় এখনই পর্যাপ্ত ত্রাণ, বিশুদ্ধ পানি ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। সেগুলো যেন সঠিক সময় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বা ভুক্তভোগীদের হাতে পৌঁছায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম দুর্নীতি কাম্য নয়।