দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল যন্ত্র পারমাণবিক চুল্লিপাত্র (রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল-আরএনপিপি) স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়ার সহায়তায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন এ বিদ্যুৎকেন্দ্র একক প্রকল্প হিসেবে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প। এতে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ ধরা হয়েছে। এখান থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। সরকার আশা করছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের উন্নয়নে আরও গতি পাবে।
রূপপুর প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের পরমাণু শক্তির একটা অংশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এটা দেশের ইতিহাসে গৌরবময় এক অধ্যায়। বাংলাদেশ উন্নতি ও কল্যাণের লক্ষ্যে পরমাণু শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জ্বালানি সংকটের কার্যকর সমাধান হতে পারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লে দেশে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাড়বে, মানুষ উপকৃত হবে- সেটা আশা করা যায়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিকল্প নেই।
এই একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করেই থামতে চাইছে না সরকার। দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজে দেশের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি হয়েছে। কাজেই দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে তাদের এ প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেকের উদ্বেগ রয়েছে। এ উদ্বেগের কারণ হচ্ছে চেরনোবিল ও ফুকুশিমা দুর্ঘটনা। ১৯৮৬ সালে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটলে ৩২ জন মারা যান। বিস্ফোরণের পর বিস্তীর্ণ জায়গাজুড়ে শক্তিশালী তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়েছিল, যার প্রভাবে পরবর্তীতে হাজারও মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে জাপানোর ফুকুশিমা দাই-ইচিতে পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের কথাও মানুষ জানে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। কোন অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনার কবলে পড়লে মানুষকে চড়া মূল্য দিতে হবে। তাছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটিও সহজ নয়।
সরকার বলছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে পারমাণবিক প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএইএ) গাইড লাইন মেনে। আইএইএ প্রকল্পটি কঠোর মনিটরিং করছে। আর রাশিয়া এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার সেরা কর্মকৌশলের চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা ও বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে। তিনি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আমরা বলতে চাই, প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি পর্যায়েই সতর্ক থাকতে হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও উৎপাদন পরবর্তী পরিচালনার কাজে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি।
সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল যন্ত্র পারমাণবিক চুল্লিপাত্র (রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল-আরএনপিপি) স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়ার সহায়তায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন এ বিদ্যুৎকেন্দ্র একক প্রকল্প হিসেবে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প। এতে প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ ধরা হয়েছে। এখান থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। সরকার আশা করছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের উন্নয়নে আরও গতি পাবে।
রূপপুর প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের পরমাণু শক্তির একটা অংশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এটা দেশের ইতিহাসে গৌরবময় এক অধ্যায়। বাংলাদেশ উন্নতি ও কল্যাণের লক্ষ্যে পরমাণু শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জ্বালানি সংকটের কার্যকর সমাধান হতে পারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লে দেশে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাড়বে, মানুষ উপকৃত হবে- সেটা আশা করা যায়। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিকল্প নেই।
এই একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করেই থামতে চাইছে না সরকার। দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজে দেশের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি হয়েছে। কাজেই দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে তাদের এ প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেকের উদ্বেগ রয়েছে। এ উদ্বেগের কারণ হচ্ছে চেরনোবিল ও ফুকুশিমা দুর্ঘটনা। ১৯৮৬ সালে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটলে ৩২ জন মারা যান। বিস্ফোরণের পর বিস্তীর্ণ জায়গাজুড়ে শক্তিশালী তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ ছড়িয়ে পড়েছিল, যার প্রভাবে পরবর্তীতে হাজারও মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে জাপানোর ফুকুশিমা দাই-ইচিতে পরমাণু কেন্দ্রে বিস্ফোরণের কথাও মানুষ জানে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। কোন অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনার কবলে পড়লে মানুষকে চড়া মূল্য দিতে হবে। তাছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটিও সহজ নয়।
সরকার বলছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে পারমাণবিক প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএইএ) গাইড লাইন মেনে। আইএইএ প্রকল্পটি কঠোর মনিটরিং করছে। আর রাশিয়া এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার সেরা কর্মকৌশলের চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা ও বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে। তিনি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আমরা বলতে চাই, প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি পর্যায়েই সতর্ক থাকতে হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও উৎপাদন পরবর্তী পরিচালনার কাজে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি।