মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা টেলিগ্রাম নামক একটি মেসেজিং অ্যাপে এ সংক্রান্ত একটি পোস্টার প্রকাশ করেছে বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার বোমা হামলার পর আইএসের এ ধরনের বার্তায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ২০১৬ সালে গুলশান হামলার ঘটনায় আইএসের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেই অভিযোগের ভিত্তি পায়নি।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দেশে এখনও সন্ত্রাসবাদের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ লেগেই আছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় দেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের শিকার হয়েছে। সন্ত্রাস মোকাবিলায় সরকার সতর্ক আছে একথা জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করা যাবে না। জঙ্গিবাদ দমনে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান, জনমত সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশে আইএস আছে কিনা সেটা প্রমাণসাপেক্ষ বিষয়। তবে দেশে যে জঙ্গিবাদী বিভিন্ন গোষ্ঠীর অপতৎপরতা অব্যাহত আছে সেটা নিয়ে তর্ক নেই। অব্যাহত পুলিশি অভিযানে তাদের দমিয়ে রাখা গেলেও নির্মূল করা যায়নি। জঙ্গিবাদকে পরাস্ত করতে গণঐক্য গড়ে তোলা জরুরি। বিষয়টি সরকারও স্বীকার করেছে। আমরা চাই, সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। মানুষকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করে তুলতে হবে। জঙ্গিবাদী আদর্শকে পরাস্ত করা না গেলে জঙ্গিবাদ নতুন রূপে আবির্ভূত হতে পারে। জঙ্গিবাদী আদর্শকে পরাস্ত করা যায়নি বলেই বাংলা ভাইদের ফাঁসির পরও গুলশান হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গেও সমঝোতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কারণ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো ইতোমধ্যে আঞ্চলিক জোট গড়ে তুলেছে বলে অবস্থাদৃষ্ট প্রতীয়মান হয়। কাজেই তাদের পররাস্ত করতে হলে রাষ্ট্রগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সারা বিশ্বেই এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। সন্ত্রাসী বা জঙ্গিগোষ্ঠীর দৃশ্যমান উপস্থিতি নেই এমন দেশগুলো এক সময় নিরাপদ মনে করা হতো। ধারণা করা হতো, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দেশগুলোই শুধু জঙ্গি হামলার হুমকির মুখে রয়েছে। এমন একটি ধারণাও ছিল যে, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ শুধু উগ্রপন্থি ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ বা মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে সীমাবদ্ধ। এখন দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিদের দৃশ্যমান সাংগঠনিক তৎপরতা নেই এমন দেশেও হামলা হচ্ছে। কিছু দিন আগে নিউজিল্যান্ডে হামলা হয়েছে। সেখানকার হামলাকারী খ্রিস্টীয় উগ্রপন্থি। শ্রীলঙ্কার মুসলিম প্রধান দেশ না হলেও সেখানে ইসলামিক উগ্রপন্থার প্রসার ঘটছে। সেখানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য উগ্র ইসলামী সংগঠনকেই দায়ী করা হচ্ছে। কাজেই জঙ্গিবাদ দমনে আঞ্চলিক জোট গড়ে তোলা জরুরি।
দৈনিক সংবাদ : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, সোমবার, ৬ এর পাতায় প্রকাশিত
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৯
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা টেলিগ্রাম নামক একটি মেসেজিং অ্যাপে এ সংক্রান্ত একটি পোস্টার প্রকাশ করেছে বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার বোমা হামলার পর আইএসের এ ধরনের বার্তায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ২০১৬ সালে গুলশান হামলার ঘটনায় আইএসের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেই অভিযোগের ভিত্তি পায়নি।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দেশে এখনও সন্ত্রাসবাদের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ লেগেই আছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় দেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের শিকার হয়েছে। সন্ত্রাস মোকাবিলায় সরকার সতর্ক আছে একথা জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করা যাবে না। জঙ্গিবাদ দমনে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান, জনমত সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশে আইএস আছে কিনা সেটা প্রমাণসাপেক্ষ বিষয়। তবে দেশে যে জঙ্গিবাদী বিভিন্ন গোষ্ঠীর অপতৎপরতা অব্যাহত আছে সেটা নিয়ে তর্ক নেই। অব্যাহত পুলিশি অভিযানে তাদের দমিয়ে রাখা গেলেও নির্মূল করা যায়নি। জঙ্গিবাদকে পরাস্ত করতে গণঐক্য গড়ে তোলা জরুরি। বিষয়টি সরকারও স্বীকার করেছে। আমরা চাই, সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। মানুষকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করে তুলতে হবে। জঙ্গিবাদী আদর্শকে পরাস্ত করা না গেলে জঙ্গিবাদ নতুন রূপে আবির্ভূত হতে পারে। জঙ্গিবাদী আদর্শকে পরাস্ত করা যায়নি বলেই বাংলা ভাইদের ফাঁসির পরও গুলশান হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গেও সমঝোতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কারণ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো ইতোমধ্যে আঞ্চলিক জোট গড়ে তুলেছে বলে অবস্থাদৃষ্ট প্রতীয়মান হয়। কাজেই তাদের পররাস্ত করতে হলে রাষ্ট্রগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সারা বিশ্বেই এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। সন্ত্রাসী বা জঙ্গিগোষ্ঠীর দৃশ্যমান উপস্থিতি নেই এমন দেশগুলো এক সময় নিরাপদ মনে করা হতো। ধারণা করা হতো, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দেশগুলোই শুধু জঙ্গি হামলার হুমকির মুখে রয়েছে। এমন একটি ধারণাও ছিল যে, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ শুধু উগ্রপন্থি ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ বা মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে সীমাবদ্ধ। এখন দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিদের দৃশ্যমান সাংগঠনিক তৎপরতা নেই এমন দেশেও হামলা হচ্ছে। কিছু দিন আগে নিউজিল্যান্ডে হামলা হয়েছে। সেখানকার হামলাকারী খ্রিস্টীয় উগ্রপন্থি। শ্রীলঙ্কার মুসলিম প্রধান দেশ না হলেও সেখানে ইসলামিক উগ্রপন্থার প্রসার ঘটছে। সেখানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য উগ্র ইসলামী সংগঠনকেই দায়ী করা হচ্ছে। কাজেই জঙ্গিবাদ দমনে আঞ্চলিক জোট গড়ে তোলা জরুরি।
দৈনিক সংবাদ : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, সোমবার, ৬ এর পাতায় প্রকাশিত