মোশতাক মেহেদী
শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। এই মানুষ গড়ার কারিগররা আজ রাষ্ট্রে সবচেয়ে অবহেলিত এবং মারাত্মক বেতনবৈষম্যের শিকার। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিশেষ করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকগণ বিএড স্কেল ও উচ্চতর স্কেল। এছাড়া পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকগণের পূর্বে প্রাপ্ত ইনক্রিমেন্ট কেটে রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। যার ফলে তাদের প্রাপ্ত বেতনও অন্য শিক্ষকদের তুলনায় কমে যাচ্ছে।
দেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি, এর বেশিরভাগই আবার এমপিওভুক্ত। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে শিক্ষকদের বেতন-ভাতাদি সন্তোষজনক, সেখানে আমাদের দেশে শিক্ষকদের বেতনভাতা সরকারি অফিসের একজন ছোট পদধারির চেয়েও কম, যা দিয়ে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে চলা অত্যন্ত কষ্টকর। অথচ ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে সবস্তরের শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরকার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সেটি বাস্তবায়ন করছে না।
শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মাত্র ১০০০ টাকা, যা দিয়ে বর্তমানে একটি কুঁড়ে ঘরও ভাড়া পাওয়া যায় না। চিকিৎসাভাতা দেয়া হয় মাত্র ৫০০ টাকা অথচ বর্তমানে একজন সিনিয়র ডাক্তার দেখানো ফি জনপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা; এর সঙ্গে আছে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট, তারপর আছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ কেনা। উৎসবভাতা কর্মচারীরা পায় বেসিকের ৫০ শতাংশ আর শিক্ষকরা পায় মাত্র ২৫ শতাংশ। একই দেশে দুই ধরনের নিয়ম কেন? শিক্ষকরা যদি অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়েন, তাহলে তারা কীভাবে ক্লাসে মন দিবেন? কারণ মাথায় অর্থাভাবের চিন্তা নিয়ে পরিপূর্ণ পাঠদান করা সম্ভব নয়। দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষকদের ভালো বেতন দেয়ার বিকল্প নেই।
সুতরাং সবস্তরের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল চালু করে অবহেলিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্য বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।
[লেখক : সহকারী প্রধান শিক্ষক, বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুমারখালী, কুষ্টিয়া]
মোশতাক মেহেদী
মঙ্গলবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। এই মানুষ গড়ার কারিগররা আজ রাষ্ট্রে সবচেয়ে অবহেলিত এবং মারাত্মক বেতনবৈষম্যের শিকার। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিশেষ করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকগণ বিএড স্কেল ও উচ্চতর স্কেল। এছাড়া পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকগণের পূর্বে প্রাপ্ত ইনক্রিমেন্ট কেটে রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। যার ফলে তাদের প্রাপ্ত বেতনও অন্য শিক্ষকদের তুলনায় কমে যাচ্ছে।
দেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি, এর বেশিরভাগই আবার এমপিওভুক্ত। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে শিক্ষকদের বেতন-ভাতাদি সন্তোষজনক, সেখানে আমাদের দেশে শিক্ষকদের বেতনভাতা সরকারি অফিসের একজন ছোট পদধারির চেয়েও কম, যা দিয়ে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে চলা অত্যন্ত কষ্টকর। অথচ ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে সবস্তরের শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন কাঠামো করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সরকার আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সেটি বাস্তবায়ন করছে না।
শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মাত্র ১০০০ টাকা, যা দিয়ে বর্তমানে একটি কুঁড়ে ঘরও ভাড়া পাওয়া যায় না। চিকিৎসাভাতা দেয়া হয় মাত্র ৫০০ টাকা অথচ বর্তমানে একজন সিনিয়র ডাক্তার দেখানো ফি জনপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা; এর সঙ্গে আছে বিভিন্ন ধরনের টেস্ট, তারপর আছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ কেনা। উৎসবভাতা কর্মচারীরা পায় বেসিকের ৫০ শতাংশ আর শিক্ষকরা পায় মাত্র ২৫ শতাংশ। একই দেশে দুই ধরনের নিয়ম কেন? শিক্ষকরা যদি অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়েন, তাহলে তারা কীভাবে ক্লাসে মন দিবেন? কারণ মাথায় অর্থাভাবের চিন্তা নিয়ে পরিপূর্ণ পাঠদান করা সম্ভব নয়। দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষকদের ভালো বেতন দেয়ার বিকল্প নেই।
সুতরাং সবস্তরের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল চালু করে অবহেলিত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্য বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।
[লেখক : সহকারী প্রধান শিক্ষক, বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুমারখালী, কুষ্টিয়া]