alt

opinion » post-editorial

আন্তর্জাতিক ওজন দিবস

মাহমুদা রহমান

: বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ওজন স্তর সুরক্ষা দিবস বা বিশ্ব ওজন দিবস প্রতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে পালিত একটি সচেতনতামূলক দিবস। ওজন স্তরের ক্ষয় ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা তৈরিতে দিবসটি পালন করা হয়।

ওজন স্তর হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর; যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে অবস্থিত। বায়ুমন্ডলের এ স্তরে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজন গ্যাস থাকে। ওজন স্তরের ক্ষয়ের কারণগুলো হচ্ছে-

১. ওজন গ্যাসের রং নীল, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির উপস্থিতিতে একটি ওজন কণার সাথে একটি অক্সিজেন পরমাণুর আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ওজন ধ্বংস হয়। এ বিক্রিয়ায় ওজন কণাটি অক্সিজেন অণুতে পরিণত হয়।

২. গৃহস্থালি পণ্য, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার, বিভিন্ন ধরনের স্প্রে ইত্যাদিতে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) গ্যাস ওজন স্তর ক্ষয়ের অন্যতম কারণ।

৩. শিল্পাঞ্চলে কারখানার চিমনি থেকে নির্গত ভাসমান সালফেট এরোসল ওজন অণুকে বিয়োজিত করে অক্সিজেন অণু ও পরমাণুতে রূপান্তর ঘটায়।

যদি ওজন স্তরের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় হতে শুরু করে, তাহলে জীবজগতের জন্য ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে চলে আসবে। এটি সমগ্র জীবজগতের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। যেমন- প্রাণীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। চোখের ছানি, ত্বকের ক্যানসার এবং অন্যান্য নতুন নতুন রোগের উদ্ভব ঘটবে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ওজন স্তরের ক্ষয়ের জন্য সারা বিশ্বে ৫ লাখ লোক স্কিন ক্যানসারে ভুগবে। একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে- ১ শতাংশ অতিবেগুনি রশ্মি বৃদ্ধির ফলে সাদা চামড়ার লোকদের মধ্যে নন মেলোনোমা ত্বকের ক্যানসার বৃদ্ধি পাবে চারগুণ। প্রাণিজগতের অনেক প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে।

পৃথিবীর প্রায় ৬০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে থাকে আমেরিকা, চীন, রাশিয়া, ভারত, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। ওজন স্তর রক্ষায় এসব দেশকে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এনে বিকল্প জ্বালানির সন্ধান করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োগ কমিয়ে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন হতে পারে সূর্যশক্তি, বায়ুশক্তি, পানিশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার। পৃথিবীতে আজ সর্বত্রই প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চলেছে। দৃশ্যমান হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য সবুজ পৃথিবী রেখে যেতে হলে ওজন স্তর রক্ষায় শিল্পোন্নত দেশসমূহকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।

এ ব্যাপারে পৃথিবীর সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওজন স্তর রক্ষায় ও সামগ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

ওজন স্তর রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি), বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হ্যালোজেনেটেড হাইড্রো কার্বন, মিথাইল ব্রোমাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসগুলোর ব্যবহার রোধ করা। কার্বন মনোক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড মুক্ত করে এমন ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার হ্রাস করা। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হয়, তবে সিএফসি গ্যাস বায়ুমন্ডলে ছেড়ে যাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে। আমাদের চুল স্প্রে, রুম ফ্রেশনার ব্যবহার এড়ানো উচিত; কারণ এ পণ্যগুলো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) ছড়িয়ে থাকে। রাসায়নিক সার তৈরির সময় বেশ কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাস তৈরি হয়। সুতরাং, আমাদের কৃষিতে সারের ব্যবহার এড়ানো উচিত এবং জৈব পদার্থের ব্যবহার বাড়ানো উচিত।

[লেখক : শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

নিষিদ্ধ জালের অভিশাপে হুমকির মুখে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য

আধিপত্যবাদের শৃঙ্খল এবং পুঁজির লুন্ঠন যাদের রক্তাক্ত করে, তাদের চাই একজোটে

জার্মানি : কৃচ্ছসাধনের বোঝা জনগণের কাঁধে

tab

opinion » post-editorial

আন্তর্জাতিক ওজন দিবস

মাহমুদা রহমান

বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ওজন স্তর সুরক্ষা দিবস বা বিশ্ব ওজন দিবস প্রতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিকভাবে পালিত একটি সচেতনতামূলক দিবস। ওজন স্তরের ক্ষয় ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা তৈরিতে দিবসটি পালন করা হয়।

ওজন স্তর হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর; যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে অবস্থিত। বায়ুমন্ডলের এ স্তরে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজন গ্যাস থাকে। ওজন স্তরের ক্ষয়ের কারণগুলো হচ্ছে-

১. ওজন গ্যাসের রং নীল, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির উপস্থিতিতে একটি ওজন কণার সাথে একটি অক্সিজেন পরমাণুর আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ওজন ধ্বংস হয়। এ বিক্রিয়ায় ওজন কণাটি অক্সিজেন অণুতে পরিণত হয়।

২. গৃহস্থালি পণ্য, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার, বিভিন্ন ধরনের স্প্রে ইত্যাদিতে ব্যবহৃত ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) গ্যাস ওজন স্তর ক্ষয়ের অন্যতম কারণ।

৩. শিল্পাঞ্চলে কারখানার চিমনি থেকে নির্গত ভাসমান সালফেট এরোসল ওজন অণুকে বিয়োজিত করে অক্সিজেন অণু ও পরমাণুতে রূপান্তর ঘটায়।

যদি ওজন স্তরের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় হতে শুরু করে, তাহলে জীবজগতের জন্য ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে চলে আসবে। এটি সমগ্র জীবজগতের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। যেমন- প্রাণীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। চোখের ছানি, ত্বকের ক্যানসার এবং অন্যান্য নতুন নতুন রোগের উদ্ভব ঘটবে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ওজন স্তরের ক্ষয়ের জন্য সারা বিশ্বে ৫ লাখ লোক স্কিন ক্যানসারে ভুগবে। একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে- ১ শতাংশ অতিবেগুনি রশ্মি বৃদ্ধির ফলে সাদা চামড়ার লোকদের মধ্যে নন মেলোনোমা ত্বকের ক্যানসার বৃদ্ধি পাবে চারগুণ। প্রাণিজগতের অনেক প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে।

পৃথিবীর প্রায় ৬০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে থাকে আমেরিকা, চীন, রাশিয়া, ভারত, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। ওজন স্তর রক্ষায় এসব দেশকে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এনে বিকল্প জ্বালানির সন্ধান করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োগ কমিয়ে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন হতে পারে সূর্যশক্তি, বায়ুশক্তি, পানিশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার। পৃথিবীতে আজ সর্বত্রই প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চলেছে। দৃশ্যমান হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য সবুজ পৃথিবী রেখে যেতে হলে ওজন স্তর রক্ষায় শিল্পোন্নত দেশসমূহকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।

এ ব্যাপারে পৃথিবীর সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওজন স্তর রক্ষায় ও সামগ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

ওজন স্তর রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি), বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হ্যালোজেনেটেড হাইড্রো কার্বন, মিথাইল ব্রোমাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসগুলোর ব্যবহার রোধ করা। কার্বন মনোক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড মুক্ত করে এমন ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার হ্রাস করা। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হয়, তবে সিএফসি গ্যাস বায়ুমন্ডলে ছেড়ে যাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে। আমাদের চুল স্প্রে, রুম ফ্রেশনার ব্যবহার এড়ানো উচিত; কারণ এ পণ্যগুলো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) ছড়িয়ে থাকে। রাসায়নিক সার তৈরির সময় বেশ কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাস তৈরি হয়। সুতরাং, আমাদের কৃষিতে সারের ব্যবহার এড়ানো উচিত এবং জৈব পদার্থের ব্যবহার বাড়ানো উচিত।

[লেখক : শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top