alt

আশরাফ আহমদের কবিতা

: বুধবার, ২৩ আগস্ট ২০২৩

আশরাফ আহমদ

সরকারি লোক
নখের কামড়ে বিষ,
দাঁতেও পেত্নীর রোষ,
আর চোখ?
রক্তের পুকুরে সদ্য ডুব দিয়ে ওঠা-
জংলী চিত্র, তাই না?
না, বস্তুত ব্যতিক্রম বাদে
কথা হচ্ছে সরকারি নকর বিষয়ে,
যারা কিনা
আমাদের খায়, আর
আমাদের পাতে হাগে।

থুথু ভরছে মুখে,
গিলে নেবো?

ইয়ে

একজন ইয়ে ছিলেন আমার।
মনে হয়,
যাকে আমি ধার করে
কারো চোখ, কারো ঠোঁট, কারো বুক
প্রত্যঙ্গ-কোলাজ, মানে জোড়াপট্টি দিয়ে
শপিং মলের ডলবৎ খাঁড়া করে
বিপরীতে নতজানু হই বা ছিলাম।

ইংরেজি বলার আগে মনে মনে
বাক্য বানাই যেমন,
ঠিক তেমনি ধীরে-চিন্তে
বলতে চাই বা চাইতাম কিছু।
তোতলানো বেড়ে গিয়ে কাদাজল,
ফলে, শব্দহীনতার কাছে হাঁটু ভাঙি।

জাল ছুঁড়ে ফেলেন বা ফেলতেন তিনি,
কিন্তু তাতে মুক্তা তো দূরের কথা
একটি ঝিনুকও না!

অগত্যা নোঙর তুলে গভীর সমুদ্রগামী
জাহাজের যাত্রী একা ফিরে চলে যান।
আমার দুচোখ থেকে মাস্তুল মিলিয়ে যায়,
হাওয়ায় হারিয়ে যায় ভেঁপুর শব্দও।
হয়তো আসলে আমি কোনোদিন
উনাকে দেখিনি কিংবা দেখতে পাবো না!

অগত্যা
নিরর্থক দিন শেষে ময়লা সমুদ্র জাগে।
তাতে, সাঁতার কাটতে কাটতে স্মৃতি-ঢেউ,
একদিন সময় ছিল স্বপ্নের, চন্দনী ছিল,
মা-বাবাও ছিল।
নাবালক চোখ নিজেই দেখল
হতবাক ভেঙে পড়াগুলো,
গরিব ও নিঃস্ব হওয়া শিখলাম বাধ্য হয়ে।

পড়ে আছে কুশি কাঁটা, উল নেই, মাও নেই।
বাবাকে বকবে কে?
এক ধোয়াতেই যদি জামার রঙেরা নাই,
সবটাই দারিদ্র্যের দোষ।
খাদ্য নাই, রঙ নাই, ভবিষ্যতও নাই,
এ্যানিমিক গ্রহে তবু
বাঁচার ইচ্ছেটা মরতে পারে না বলে
হাতড়াচ্ছি অন্ধজন, অপার শূন্যতায়।

বিশ্ব-সুন্দরী
পুজো দেবে?
তবে মাটি নাও যত খুশি,
সরাও পৃথিবী এ বেশ্যার পদতল থেকে,
কেবল ভাতের টাকা-
এ-ই ছিল বিজ্ঞাপন।

কে কাকে পড়ছে আর,
উন্মাদ ব্যবস্থা অন্ধ, বিস্তৃত এতটা-ই
যে, মানবতন্ত্র কেটে শাদা রক্তস্রাব,
আর গণতন্ত্র-গণতন্ত্র জপ!
দৈত্যের ডানার ঝাঁপটা
তাকে প্রতিদিন,
মানে যুক্তিকে মাটিতে ফেলে
চেপে ধরে
যাকে বলে উপগত হওয়া।
অদমনে-শীতে-শিশ্নে, ক্ষুধা ও ক্ষুধায়
নিরন্তর ক্ষত বিনিময়
আর
বিজ্ঞাপনখ্যাত প্রিয় জগৎ-সুন্দরী
তুলো দেহে ধূলিকণা মাখে।

মনে মনে প্রজ্ঞা ও প্রকাশ্যে আরাধনা নিয়ে
প্রাণপণে ডেকেছিল-প্রভু,
নৌকা ভিড়াও।
পান বর্ণ ঠোঁট আর
কুপির কালিমা দিয়ে এঁকেছিল মোহের কাজল,
ফলে, ছোবলে ছোবলে বিশ্ব গাড়তর নীল,
তারপর নিরালোকে কেউ কিছু নেই।

না ধন, না মান
সুন্দরীর শেষাবধি ছেঁড়া কাঁথা থাকে
শুভংকর থাকে!

ছবি

এলোমেলো স্মৃতির সমরেশ মজুমদার

সাময়িকী কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

বিমল গুহের কবিতার অন্তর্জগৎ ও শিল্পৈশ্বর্য

ছবি

কবিতার সুনীল সুনীলের কবিতা

ছবি

রূপান্তরের অকথিত গল্পটা

ছবি

মানব সভ্যতার আত্মবিশ্লেষণের আয়না

ছবি

বাইরে একটা কিছু জ্বলছে

ছবি

‘কাফকার মতো হবো বলে আইন পড়েছিলাম’

ছবি

সত্যেন সেনের উপন্যাস: মিথ ও ইতিহাসলগ্ন মানুষ

ছবি

বিস্ময়ের সীমা নাই

ছবি

নগর বাউল ও ত্রিকালদর্শী সন্ত কবি শামসুর রাহমান

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ও বন্ধু আমার

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

শামসুর রাহমানের কবিতায় ‘মিথ’

ছবি

বহুমাত্রিক শামসুর রাহমান

ছবি

দূর-সময়ের সার্বভৌম কবি

ছবি

মাহফুজ আল-হোসেন-এর দশটি কবিতা

ছবি

মনোজগতের অন্বেষায়

সাময়িকী কবিতা

ছবি

এক ঘর রোদ

ছবি

দ্রোহের রম্য পঙ্ক্তিমালা

ছবি

সংবেদী রঙে ও রেখায় প্রাণের উন্মোচন

ছবি

অলস দিনের হাওয়া

ছবি

লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মর্মস্পর্শী ও দূরদর্শী সাহিত্যকর্ম

ছবি

‘ভাষার আরোপিত কারুকাজে খেই হারিয়ে ফেলি’

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জিন্দা লাশ কি প্রকৃত লাশ

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শিক্ষা দর্শন ও অলস দিনের হাওয়া

ছবি

ধ্রুপদী বোধ ও ব্যাধির কবিতা

ছবি

সুকান্তর কবিতায় বিপ্লবী চেতনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মগ্নচৈতন্যে সৌন্দর্যধ্যান

ছবি

অধুনাবাদী নিরীক্ষার অগ্রসাধক

ছবি

‘বায়ান্নর আধুনিকতা ও প্রগতিশীল ধারাকে বহন করতে চেয়েছি’

ছবি

জাতীয় চেতনার অমলিন ধারক

tab

আশরাফ আহমদের কবিতা

আশরাফ আহমদ

বুধবার, ২৩ আগস্ট ২০২৩

সরকারি লোক
নখের কামড়ে বিষ,
দাঁতেও পেত্নীর রোষ,
আর চোখ?
রক্তের পুকুরে সদ্য ডুব দিয়ে ওঠা-
জংলী চিত্র, তাই না?
না, বস্তুত ব্যতিক্রম বাদে
কথা হচ্ছে সরকারি নকর বিষয়ে,
যারা কিনা
আমাদের খায়, আর
আমাদের পাতে হাগে।

থুথু ভরছে মুখে,
গিলে নেবো?

ইয়ে

একজন ইয়ে ছিলেন আমার।
মনে হয়,
যাকে আমি ধার করে
কারো চোখ, কারো ঠোঁট, কারো বুক
প্রত্যঙ্গ-কোলাজ, মানে জোড়াপট্টি দিয়ে
শপিং মলের ডলবৎ খাঁড়া করে
বিপরীতে নতজানু হই বা ছিলাম।

ইংরেজি বলার আগে মনে মনে
বাক্য বানাই যেমন,
ঠিক তেমনি ধীরে-চিন্তে
বলতে চাই বা চাইতাম কিছু।
তোতলানো বেড়ে গিয়ে কাদাজল,
ফলে, শব্দহীনতার কাছে হাঁটু ভাঙি।

জাল ছুঁড়ে ফেলেন বা ফেলতেন তিনি,
কিন্তু তাতে মুক্তা তো দূরের কথা
একটি ঝিনুকও না!

অগত্যা নোঙর তুলে গভীর সমুদ্রগামী
জাহাজের যাত্রী একা ফিরে চলে যান।
আমার দুচোখ থেকে মাস্তুল মিলিয়ে যায়,
হাওয়ায় হারিয়ে যায় ভেঁপুর শব্দও।
হয়তো আসলে আমি কোনোদিন
উনাকে দেখিনি কিংবা দেখতে পাবো না!

অগত্যা
নিরর্থক দিন শেষে ময়লা সমুদ্র জাগে।
তাতে, সাঁতার কাটতে কাটতে স্মৃতি-ঢেউ,
একদিন সময় ছিল স্বপ্নের, চন্দনী ছিল,
মা-বাবাও ছিল।
নাবালক চোখ নিজেই দেখল
হতবাক ভেঙে পড়াগুলো,
গরিব ও নিঃস্ব হওয়া শিখলাম বাধ্য হয়ে।

পড়ে আছে কুশি কাঁটা, উল নেই, মাও নেই।
বাবাকে বকবে কে?
এক ধোয়াতেই যদি জামার রঙেরা নাই,
সবটাই দারিদ্র্যের দোষ।
খাদ্য নাই, রঙ নাই, ভবিষ্যতও নাই,
এ্যানিমিক গ্রহে তবু
বাঁচার ইচ্ছেটা মরতে পারে না বলে
হাতড়াচ্ছি অন্ধজন, অপার শূন্যতায়।

বিশ্ব-সুন্দরী
পুজো দেবে?
তবে মাটি নাও যত খুশি,
সরাও পৃথিবী এ বেশ্যার পদতল থেকে,
কেবল ভাতের টাকা-
এ-ই ছিল বিজ্ঞাপন।

কে কাকে পড়ছে আর,
উন্মাদ ব্যবস্থা অন্ধ, বিস্তৃত এতটা-ই
যে, মানবতন্ত্র কেটে শাদা রক্তস্রাব,
আর গণতন্ত্র-গণতন্ত্র জপ!
দৈত্যের ডানার ঝাঁপটা
তাকে প্রতিদিন,
মানে যুক্তিকে মাটিতে ফেলে
চেপে ধরে
যাকে বলে উপগত হওয়া।
অদমনে-শীতে-শিশ্নে, ক্ষুধা ও ক্ষুধায়
নিরন্তর ক্ষত বিনিময়
আর
বিজ্ঞাপনখ্যাত প্রিয় জগৎ-সুন্দরী
তুলো দেহে ধূলিকণা মাখে।

মনে মনে প্রজ্ঞা ও প্রকাশ্যে আরাধনা নিয়ে
প্রাণপণে ডেকেছিল-প্রভু,
নৌকা ভিড়াও।
পান বর্ণ ঠোঁট আর
কুপির কালিমা দিয়ে এঁকেছিল মোহের কাজল,
ফলে, ছোবলে ছোবলে বিশ্ব গাড়তর নীল,
তারপর নিরালোকে কেউ কিছু নেই।

না ধন, না মান
সুন্দরীর শেষাবধি ছেঁড়া কাঁথা থাকে
শুভংকর থাকে!

back to top