alt

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পরকীয়া ও এসিডমশা

শিউল মনজুর

তুমি চাইলে আসতে পারো, আবার, নাও আসতে পারো, বিকল্প আছে তোমার হাতে; চিন্তায়, ভাবনায়, সিদ্ধান্তে।

জেনে রাখা ভালো, কোনো সম্পর্কই এখন আর বৃষ্টির মতো পবিত্র নয়!

পরকীয়ার ঘোলাজল অনেকটা বিপজ্জনক এসিডমশার মতো; খুব গোপনে ভেঙে ফেলে দীর্ঘ সম্পর্কের প্লাটিলেট!

খোলা চোখে তাকালে দেখা যায়, দরোজার ফাঁকফোকর দিয়ে প্রবেশ করেছে এসিডমশা; নবনীর ছোট বোন নবনীতা!

তুমি চাইলে আসতে পারো, আবার, নাও আসতে পারো, কেননা, রাজনীতি ও রাজধানীতে এখন চলছে পরকীয়ার প্রকাশ্য মহড়া...

আরেকটি রাগ ভৈরব

বাদল বিহারী চক্রবর্তী

কেন পালাতে চাইছো?

জানি, দিবসের প্রথম প্রহরের সঙ্গীতটি

গাইতে পারোনি বলে-

অকালবোধনে তোমার পলায়নপর মনোবৃত্তি...

কিন্তু চাইলেই কি তা পারা যায়!

দ্যাখো, শাল-পিয়ালী বনে আজ

কতো পাখির গুঞ্জরন-ওরা গাইছে;

কারো সঙ্গে সুর মেলাবার ধার

ধারে না ওরা... কে জানে, কোনটি প্রেমের,

কোনটি দ্রোহের! আবার

কোনটিই বা ওদের আধ্যাত্মিকতার

আবরণে ঢাকা...

হ্যাঁ, সব প্রাণিরই রয়েছে আশাবরি

বিলাবল কিংবা অন্য কোনো ভায়রো...

ভাবছো তোমার সেটা নেই?

কিন্তু আমি তো রয়েছি; তুমি যে

ডেকে এনে একদিন আমাকে

পথের বাইরের এই কাব্য-জনারণ্যে

দাঁড় করালে... মধ্যাকাশ হতে ক্রমে

পশ্চিমে হেলে পড়া সূর্যালোকেরও

সৌন্দর্যের যে মুগ্ধতা, শান্ত হয়ে যাওয়া

কলকাকলির অবারিত স্নিগ্ধ সন্ধ্যায় সুতীব্র যে ইমনÑ

সেখান থেকেই না-হয় শুরু হোক

তোমার আরেকটি ভোরের প্রত্যাশায় আরেকটি রাগ ভৈরব...

তোমার বাড়ির পাশে

হাদিউল ইসলাম

অক্সিজেনের ঘাটতি জনিত উচাটনে

তোমার বাড়ির পাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করি

হয়তো কোনওদিন সমুখে দাঁড়াবে অ্যামাজন

হয়তো সবুজ সংকেতে উড়িয়ে দেবে হাওয়া

কুসুমে কুসুমে রেখে দেবে ইশারার সমূহ অক্ষর

তোমাকে দেখবো

পৃথিবীর সবটুকু অক্সিজেন একা ধরে আছো

লোকনিন্দার আগ্নেয়গিরির পাশে তুমি অম্লান বাগান

কোথাকার যতিচিহ্নের মতো একটু বসেই

উড়ে যাবে প্রজাপতি আলোর কটাক্ষে নান্দনিক

তোমার বাড়ির পাশে সহ¯্র গেরিলা চোখ

নষ্ট আর সন্দেহপ্রবণ,সর্বদা প্রেমের বিপক্ষে উড্ডীন

তোমার বাড়ির চারপাশে তবু ছড়ানো অমৃতলোক

যেনো বা হাঁটছি হজ্বযাত্রীর পেছনে পুণ্যাত্মা মোমিন

পোস্টমর্টেম

তুহীন বিশ্বাস

চোখের কালো দাগে দুঃখ খুঁজি;

কত নির্ঘুম রাত আছড়ে পড়ছে ওখানে,

শুকিয়ে গেছে দুঃখী নোনাজল কপোলে

আর চিন্তার ভাঁজ স্থায়ী হয়েছে কপালে।

ওই নীল ঠোঁটে ভয়ানক কষ্ট খুঁজি;

বিষাক্ত কীটের আঁচড় এঁকেছে মানচিত্র,

সময়ের নিশ্বাসে ঝরে পড়েছে দীর্ঘশ্বাস

কতটা রক্তাক্ত হলে বিলীন হয় অস্তিত্ব।

শবদেহের কাপড়ে ইতিহাস খুঁজি;

মেলানো যায় না অতিক্রান্তপ্রহরগুলো,

অসমাপ্ত জীবনাঙ্ক দ্রোহের কথা বলে

বড্ড জটিল কুটিল গাণিতিক সূত্রটা।

সভ্যতায় লুকিয়ে থাকা নষ্ট খুঁজিÑ

কলঙ্কিনীর হারানো দিনপঞ্জির পৃষ্ঠায়,

সম্পূর্ণ নিখোঁজ সভ্য মানুষের পদচিহ্ন

পোস্টমর্টেমে শুধু পশুত্বের ছাপ স্পষ্ট।

তার অবয়ব

আকন আবু বকর

সেদিন গল্পের ছলে ভেসেছিল অলকার জলে কার অবয়ব!

সেদিনের পরে;যখন জোনাকি এসে ভর করেছিল সেই যমুনার চরে

ভেসে ওঠে আজো এক অবয়ব তার এই বুকের ভেতর

ভেসে ওঠে দ্বা-দশীর চাঁদের আলোয় এই নয়নের পর।

অনেক দিনের পর যদি একদিন খুঁজে পাই সেই এক অবয়ব

সেই শিমুলের তলে; সেদিন আবার যদি মনে পড়ে সব

হাহাকার আর যত পুরাতন অভিমান নক্ষত্রের তলে

তখন ভিজিয়ে দেব তার কালো চুল সেই অলকার জলে।

দূরের যাত্রীরা হয় হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত আজ জোনাকির তরে

বাতাবী লেবুর মতো ঘ্রাণ নিয়ে জেগে থাকে যমুনার চরে

সতেজ নীড়ের দেশে নিয়ে যাবো তারে সেই সমুদ্রের পর

সেই তার অবয়ব বাস করে আজো এই বুকের ভেতর।

গহীন অরণ্যে তাই চলে আয়োজন সেই নন্দিনীর তরে

পাতার মর্মর শব্দে কার্তিকের বনে মন আনচান করে

বহুদূর অন্ধকারে সেইসব জোনাকিরা আবার যখন

শীতের মৃত্যুর পরে পরস্পরে করবে আবার আলিঙ্গন।

হয় যদি দেখা ফের তার সাথে সেদিনের পরে

হয় যদি দেখা ফের তার সাথে যমুনার চরে।

দিগম্বর

রাজিয়া সুলতানা ঈশিতা

হেমন্ত এলেই আমার ভয় হয়

চিরন্তনী কান্না পায়,

ভালোবাসা জাগে শরীরে,

ভুলতে পারি না কোনোমতে।

সেইসব দিনপঞ্জিÑ

নবান্ন আর শীতকাল

টুপটাপ শিশিরের শব্দে

পা টিপে টিপে দৌড়ঝাপ।

রাতভর আমার পংক্তিমালাদের

থরে থরে সাজানো,

যৌবনের ধাক্কা এসে কৃষ্ণচূড়া ফোটালো,

জারুল মেলে দিলো শতদল।

এমনই ঘুমঘোর মনোহরে

একদিন কেটে গেলো তান।

ভৌকাট্টা ঘুরি উড়ে গেলো কার

নিদারুণ আবেশেÑ

জানা হলো না!

সেই থেকে চেয়ে আছি নীল আকাশে

ফের যদি ভুল করে উড়ে আসে বাতাসে

সেই থেকে চোখ তার দিগম্বর।

সখি কি তা জানে?

শাহাদত হোসেন সুজন

টিপ টিপ বরষায় আজ উথলে উঠেছে নদী

পালে আজ লাগবে হাওয়া গলুইয়ে বসো যদি

ধীরে ধীরে বাইছি তরী উজান গাঙের টানে

দু’কূল জুড়ে আসুক জোয়ার তীর ভাসুক বানে...

চল আজ ভিজি দু’জন নতুন বরষার জলে

নাইতে গিয়ে পিছলে পড়ি তোমায় দেখার ছলে

ছল করিয়ে চল না সখি চাকলি বিলেতে যাই

মুঠো মুঠো শাপলা শালুক পদ্মপাতায় খাই...

চাইলে তুমি ফিরবো দু’জন নদীর বুকে ভেসে

পরবাসী মেঘ যাচ্ছে উড়ে অজানা দূর দেশে

চল না সখি আর একটু বেড়াই পালতোলা পায়ে

উঠুক তুফান মাঝ দরিয়ায় নূপুর পড়া পায়ে...

মেঘ বাড়ে বৃষ্টি বাড়ে তরী বাইছি উজান টানে

যে সখিতে মন মজেছে সে সখি কি তা জানে?

রৌদ্রের পাতা খোলে

মুজাহীদুল ইসলাম নাজিম

বৈরী সময়,বিদঘুটে অন্ধকার জীবন

অশুভ কাঁকর ফসল

কাছাকাছি কোথাও ঝিঁঝিঁপোকার উল্লাস

ইচ্ছেগুলো ক্ষতবিক্ষত শকুনের ঠোঁটে

চোখ যখন দুঃখময় নদী, তখনো এজীবন

পাতা খোলে মুখর রৌদ্রেরÑ

অনুবাদ করে অন্যদিন।

ছবি

সত্যেন সেনের উপন্যাস: মিথ ও ইতিহাসলগ্ন মানুষ

ছবি

বিস্ময়ের সীমা নাই

ছবি

নগর বাউল ও ত্রিকালদর্শী সন্ত কবি শামসুর রাহমান

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ও বন্ধু আমার

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

শামসুর রাহমানের কবিতায় ‘মিথ’

ছবি

বহুমাত্রিক শামসুর রাহমান

ছবি

দূর-সময়ের সার্বভৌম কবি

ছবি

মাহফুজ আল-হোসেন-এর দশটি কবিতা

ছবি

মনোজগতের অন্বেষায়

সাময়িকী কবিতা

ছবি

এক ঘর রোদ

ছবি

দ্রোহের রম্য পঙ্ক্তিমালা

ছবি

সংবেদী রঙে ও রেখায় প্রাণের উন্মোচন

ছবি

অলস দিনের হাওয়া

ছবি

লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মর্মস্পর্শী ও দূরদর্শী সাহিত্যকর্ম

ছবি

‘ভাষার আরোপিত কারুকাজে খেই হারিয়ে ফেলি’

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জিন্দা লাশ কি প্রকৃত লাশ

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শিক্ষা দর্শন ও অলস দিনের হাওয়া

ছবি

ধ্রুপদী বোধ ও ব্যাধির কবিতা

ছবি

সুকান্তর কবিতায় বিপ্লবী চেতনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মগ্নচৈতন্যে সৌন্দর্যধ্যান

ছবি

অধুনাবাদী নিরীক্ষার অগ্রসাধক

ছবি

‘বায়ান্নর আধুনিকতা ও প্রগতিশীল ধারাকে বহন করতে চেয়েছি’

ছবি

জাতীয় চেতনার অমলিন ধারক

ছবি

নক্ষত্রের অনন্ত যাত্রা

ছবি

আহমদ রফিক ও ভাষামুক্তি সাধনা

ছবি

কবি আসাদ চৌধুরী : ঘরে ফেরা হলো না তাঁর

ছবি

জীবনবোধের অনবদ্য চিত্ররূপ ‘স্বপ্নছোঁয়ার পদযাত্রা’

ছবি

অনালোকিত ইতিহাসের সন্ধানে

ছবি

কবিরের দোঁহা

ছবি

আকবর হোসেন ও ‘যৌবনটাই জীবন নয়’

ছবি

স্বোপার্জিত

ছবি

সংগ্রামের অগ্নিশিখা থেকে হেলাল হাফিজ

tab

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পরকীয়া ও এসিডমশা

শিউল মনজুর

তুমি চাইলে আসতে পারো, আবার, নাও আসতে পারো, বিকল্প আছে তোমার হাতে; চিন্তায়, ভাবনায়, সিদ্ধান্তে।

জেনে রাখা ভালো, কোনো সম্পর্কই এখন আর বৃষ্টির মতো পবিত্র নয়!

পরকীয়ার ঘোলাজল অনেকটা বিপজ্জনক এসিডমশার মতো; খুব গোপনে ভেঙে ফেলে দীর্ঘ সম্পর্কের প্লাটিলেট!

খোলা চোখে তাকালে দেখা যায়, দরোজার ফাঁকফোকর দিয়ে প্রবেশ করেছে এসিডমশা; নবনীর ছোট বোন নবনীতা!

তুমি চাইলে আসতে পারো, আবার, নাও আসতে পারো, কেননা, রাজনীতি ও রাজধানীতে এখন চলছে পরকীয়ার প্রকাশ্য মহড়া...

আরেকটি রাগ ভৈরব

বাদল বিহারী চক্রবর্তী

কেন পালাতে চাইছো?

জানি, দিবসের প্রথম প্রহরের সঙ্গীতটি

গাইতে পারোনি বলে-

অকালবোধনে তোমার পলায়নপর মনোবৃত্তি...

কিন্তু চাইলেই কি তা পারা যায়!

দ্যাখো, শাল-পিয়ালী বনে আজ

কতো পাখির গুঞ্জরন-ওরা গাইছে;

কারো সঙ্গে সুর মেলাবার ধার

ধারে না ওরা... কে জানে, কোনটি প্রেমের,

কোনটি দ্রোহের! আবার

কোনটিই বা ওদের আধ্যাত্মিকতার

আবরণে ঢাকা...

হ্যাঁ, সব প্রাণিরই রয়েছে আশাবরি

বিলাবল কিংবা অন্য কোনো ভায়রো...

ভাবছো তোমার সেটা নেই?

কিন্তু আমি তো রয়েছি; তুমি যে

ডেকে এনে একদিন আমাকে

পথের বাইরের এই কাব্য-জনারণ্যে

দাঁড় করালে... মধ্যাকাশ হতে ক্রমে

পশ্চিমে হেলে পড়া সূর্যালোকেরও

সৌন্দর্যের যে মুগ্ধতা, শান্ত হয়ে যাওয়া

কলকাকলির অবারিত স্নিগ্ধ সন্ধ্যায় সুতীব্র যে ইমনÑ

সেখান থেকেই না-হয় শুরু হোক

তোমার আরেকটি ভোরের প্রত্যাশায় আরেকটি রাগ ভৈরব...

তোমার বাড়ির পাশে

হাদিউল ইসলাম

অক্সিজেনের ঘাটতি জনিত উচাটনে

তোমার বাড়ির পাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করি

হয়তো কোনওদিন সমুখে দাঁড়াবে অ্যামাজন

হয়তো সবুজ সংকেতে উড়িয়ে দেবে হাওয়া

কুসুমে কুসুমে রেখে দেবে ইশারার সমূহ অক্ষর

তোমাকে দেখবো

পৃথিবীর সবটুকু অক্সিজেন একা ধরে আছো

লোকনিন্দার আগ্নেয়গিরির পাশে তুমি অম্লান বাগান

কোথাকার যতিচিহ্নের মতো একটু বসেই

উড়ে যাবে প্রজাপতি আলোর কটাক্ষে নান্দনিক

তোমার বাড়ির পাশে সহ¯্র গেরিলা চোখ

নষ্ট আর সন্দেহপ্রবণ,সর্বদা প্রেমের বিপক্ষে উড্ডীন

তোমার বাড়ির চারপাশে তবু ছড়ানো অমৃতলোক

যেনো বা হাঁটছি হজ্বযাত্রীর পেছনে পুণ্যাত্মা মোমিন

পোস্টমর্টেম

তুহীন বিশ্বাস

চোখের কালো দাগে দুঃখ খুঁজি;

কত নির্ঘুম রাত আছড়ে পড়ছে ওখানে,

শুকিয়ে গেছে দুঃখী নোনাজল কপোলে

আর চিন্তার ভাঁজ স্থায়ী হয়েছে কপালে।

ওই নীল ঠোঁটে ভয়ানক কষ্ট খুঁজি;

বিষাক্ত কীটের আঁচড় এঁকেছে মানচিত্র,

সময়ের নিশ্বাসে ঝরে পড়েছে দীর্ঘশ্বাস

কতটা রক্তাক্ত হলে বিলীন হয় অস্তিত্ব।

শবদেহের কাপড়ে ইতিহাস খুঁজি;

মেলানো যায় না অতিক্রান্তপ্রহরগুলো,

অসমাপ্ত জীবনাঙ্ক দ্রোহের কথা বলে

বড্ড জটিল কুটিল গাণিতিক সূত্রটা।

সভ্যতায় লুকিয়ে থাকা নষ্ট খুঁজিÑ

কলঙ্কিনীর হারানো দিনপঞ্জির পৃষ্ঠায়,

সম্পূর্ণ নিখোঁজ সভ্য মানুষের পদচিহ্ন

পোস্টমর্টেমে শুধু পশুত্বের ছাপ স্পষ্ট।

তার অবয়ব

আকন আবু বকর

সেদিন গল্পের ছলে ভেসেছিল অলকার জলে কার অবয়ব!

সেদিনের পরে;যখন জোনাকি এসে ভর করেছিল সেই যমুনার চরে

ভেসে ওঠে আজো এক অবয়ব তার এই বুকের ভেতর

ভেসে ওঠে দ্বা-দশীর চাঁদের আলোয় এই নয়নের পর।

অনেক দিনের পর যদি একদিন খুঁজে পাই সেই এক অবয়ব

সেই শিমুলের তলে; সেদিন আবার যদি মনে পড়ে সব

হাহাকার আর যত পুরাতন অভিমান নক্ষত্রের তলে

তখন ভিজিয়ে দেব তার কালো চুল সেই অলকার জলে।

দূরের যাত্রীরা হয় হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত আজ জোনাকির তরে

বাতাবী লেবুর মতো ঘ্রাণ নিয়ে জেগে থাকে যমুনার চরে

সতেজ নীড়ের দেশে নিয়ে যাবো তারে সেই সমুদ্রের পর

সেই তার অবয়ব বাস করে আজো এই বুকের ভেতর।

গহীন অরণ্যে তাই চলে আয়োজন সেই নন্দিনীর তরে

পাতার মর্মর শব্দে কার্তিকের বনে মন আনচান করে

বহুদূর অন্ধকারে সেইসব জোনাকিরা আবার যখন

শীতের মৃত্যুর পরে পরস্পরে করবে আবার আলিঙ্গন।

হয় যদি দেখা ফের তার সাথে সেদিনের পরে

হয় যদি দেখা ফের তার সাথে যমুনার চরে।

দিগম্বর

রাজিয়া সুলতানা ঈশিতা

হেমন্ত এলেই আমার ভয় হয়

চিরন্তনী কান্না পায়,

ভালোবাসা জাগে শরীরে,

ভুলতে পারি না কোনোমতে।

সেইসব দিনপঞ্জিÑ

নবান্ন আর শীতকাল

টুপটাপ শিশিরের শব্দে

পা টিপে টিপে দৌড়ঝাপ।

রাতভর আমার পংক্তিমালাদের

থরে থরে সাজানো,

যৌবনের ধাক্কা এসে কৃষ্ণচূড়া ফোটালো,

জারুল মেলে দিলো শতদল।

এমনই ঘুমঘোর মনোহরে

একদিন কেটে গেলো তান।

ভৌকাট্টা ঘুরি উড়ে গেলো কার

নিদারুণ আবেশেÑ

জানা হলো না!

সেই থেকে চেয়ে আছি নীল আকাশে

ফের যদি ভুল করে উড়ে আসে বাতাসে

সেই থেকে চোখ তার দিগম্বর।

সখি কি তা জানে?

শাহাদত হোসেন সুজন

টিপ টিপ বরষায় আজ উথলে উঠেছে নদী

পালে আজ লাগবে হাওয়া গলুইয়ে বসো যদি

ধীরে ধীরে বাইছি তরী উজান গাঙের টানে

দু’কূল জুড়ে আসুক জোয়ার তীর ভাসুক বানে...

চল আজ ভিজি দু’জন নতুন বরষার জলে

নাইতে গিয়ে পিছলে পড়ি তোমায় দেখার ছলে

ছল করিয়ে চল না সখি চাকলি বিলেতে যাই

মুঠো মুঠো শাপলা শালুক পদ্মপাতায় খাই...

চাইলে তুমি ফিরবো দু’জন নদীর বুকে ভেসে

পরবাসী মেঘ যাচ্ছে উড়ে অজানা দূর দেশে

চল না সখি আর একটু বেড়াই পালতোলা পায়ে

উঠুক তুফান মাঝ দরিয়ায় নূপুর পড়া পায়ে...

মেঘ বাড়ে বৃষ্টি বাড়ে তরী বাইছি উজান টানে

যে সখিতে মন মজেছে সে সখি কি তা জানে?

রৌদ্রের পাতা খোলে

মুজাহীদুল ইসলাম নাজিম

বৈরী সময়,বিদঘুটে অন্ধকার জীবন

অশুভ কাঁকর ফসল

কাছাকাছি কোথাও ঝিঁঝিঁপোকার উল্লাস

ইচ্ছেগুলো ক্ষতবিক্ষত শকুনের ঠোঁটে

চোখ যখন দুঃখময় নদী, তখনো এজীবন

পাতা খোলে মুখর রৌদ্রেরÑ

অনুবাদ করে অন্যদিন।

back to top