স্বপ্নের বন্ধন
মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল
মানুষে মানুষে জন্ম নেয় মানুষ রতন
কুপ্রবৃত্তির প্ররোচনায় হয় সে অমানুষ
ভেবেছ কি কখনো নির্জলা সত্য মেনে
নিদারুণ ওঠানামা হয় সে জীবনে
ভালোবাসা বলে কিছু নেই এ জীবনে
সবুজ কথার জালে ডুবে থাকা শুধু
নির্লজ্জ বেহায়ার মতো বুকে বাজে ঘৃণা
তবু রয়ে যায় অবাক হওয়া স্বপ্নের বন্ধন
কেন ফিরে আসে বারবার দেখেছ কি হায়
সুখ পাখিটার মতো কাঁপন জাগায় অহেতুক
যেভাবেই থাক না কেন ভালো থাকা চাই
দুর্লভ ভাবনারা মিথ্যে হয়ে যায় না যেন
অবহেলা অনাদর উপেক্ষা ঠেলে-
মনজুর শামস
অবহেলার মুখে ঝাঁমা ঘষে পাথরের গিঁটের ভেতর
শেকড় সেঁধিয়ে পোড়ো দালানের ছাদের কার্নিশে
ঝকঝকে সবুজ পাতার তুখোড় স্পর্ধায় বেড়ে উঠল
পাখির বিষ্ঠার থিকথিকে কুৎসিতে পড়ে থাকা
অচ্ছুৎ বিবাগি পরমাশ্চর্য সাহসী বটের বীজ
উপেক্ষার দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে নেতিয়ে থাকা
লজ্জাবতী পাতার কুঞ্জধাম থেকে থোকা থোকা
গাঢ় গোলাপি ফুলেরা সগৌরবে মাথা তুলে
দুলে দুলে গাইতে থাকলো জীবনের গান
অনাদরে মাঠে-ঘাটে-জলে দুঃশাসনের পি-ি
চটকাতে থাকা পোড় খাওয়া শোষিত মানুষ
তুমি কেন বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে সাম্যের
পতাকা ওড়াবে না মগেদের মুলুক জুড়ে
তোমার তো কারো কাছে হারাবার কিছু নেই
উলঙ্গ স্বরূপ
নিলয় রফিক
অর্ধমূর্খ তোতাপাখির স্কুলের শিক্ষক
মুখস্থ বিদ্যার ঢেউ রবির স্বভাব
দৌড়তে দৌড়তে ঘামে অদূরে পাড়ায়
পুকুরে ব্যাঙের নাচ নিজেকে মৈনাক
সামনে-পিছনে সারি মুখোমুখি চোখ
রথের-সড়কে পথে দু’যুগে পথিক
মেঘের সাম্পানে ঘুরে-ঘুরে পড়ন্ত বিকেল
ভিতরে ভরাট নদী শূন্যতা রোদ্দুর
চার দরজার ঘর, আঁধার জানালা
উইপোকা নৃত্যরত আরামে আয়েশ
সুন্দর দেখলে ভয়, চুনকালি শুরু
লিখে ফেলে ফেসবুকে উলঙ্গ স্বরূপ
সুর তোলে বাঙাবাঁশি নিজেই ঠাকুর
২২ শ্রাবণ ১৪৩২
খালেদ মাহবুব মোর্শেদ
রবি, আজি বাংলার ঘরে-ঘরে লাখো-লাখো
দীপ্যমান তরুণ প্রতিভা
প্রাণখুলে পড়িতেছে তোমারই কবিতা
গাইতেছে তোমার গানের জানালা খুলি
তোমারই সুরের দোলায় দুলিতেছে তরুণী-হৃদয়
সার্ধ-শতবর্ষ এমন কী সময়
তোমার আত্মা ও কলমের মুখে মেনে
সানন্দ পরাজয়!
হৃদয়ের দ্বার খুলে তোমাকেই করি আজ স্বচ্ছন্দ বরণ
কবিতা-গানের অনুগতি অমর পঙ্ক্তিতে
বাঙ্গালির সব ঘর করে যায় সানন্দে স্মরণ।
আমাদের কথা ভেবে তুমি লিখেছিলে ‘চৌদ্দশত সাল’
অনিবার্য ভালোবাসা দিয়েছ বলেই আমরা ভেঙেছি
সংশয়ের ঠুনকো দেয়াল।
মন খুলে দিয়ে যাই রবিকে প্রণাম
তাঁর কাব্য পড়ে লিখে রাখি সশ্রদ্ধ সালাম।
তোমার চরণ-চিহ্ন না পড়–ক আজ
নাইবা বাইলে তুমি পুরাতন খেয়া
আকাশে উদিত তারা প্রতি রাতে বলে:
ভোরেই উদিত হবে নির্ঝরের রবি।
হতাশা নিহত হলো আমাদের ঘরে
বাইশে শ্রাবণে পাই সালোক পুলক।
তব পদধূলি-স্পর্শে রোজ পূত হয়
বাঙ্গালির বুক ভরা হৃদয়ের সুর।
প্রাকৃতিক বিধি মেনে ফিরে না এলেও
তোমার সৃজিত ধ্বনিগুচ্ছে দুলে যায়
আমাদের অবিরাম ¯িœগ্ধ অন্তপুর।
বিজোড় কোলাহল
তানিয়া হাসান
তোমার ছুটি শেষ হয়ে এসেছিলো-
স্নানের ঝুমুর ঝুমুর আর টিউবওয়েলের কলরব
ভাসিয়ে দিয়েছিল চৌচালা ছাউনি ও
কদমতলার যত আয়োজন।
খিড়কিতে জন্ম নেওয়া হাতছানিকে
ফিরিয়ে দিতে পারেনি প্রজাতি।
পূর্বনারীর নিয়ন্ত্রিত নূপুর এড়িয়ে
হয়নি কাটা ইশারাদিঘি-
লোকাল বাসের শেষ জানালায়
বাঁধা ছিল তোমার ছুটি
অথচ হাতঘড়িটা উড়েই গেল!
কোলাহলে যুবতী বিকেল মেলতে দেয়নি দরজা
বৃহস্পতিকে তারা ভেবেই কলম উগরে দিলো বীর্য-
সমূহ চমৎকারের পাশে রোপণ করলে
চুম্বনের আদিকাহিনি ও কলাকৌশল।
অথচ ছুটিতে, তোমার চাঁদ হওয়ার কথা ছিল!
বাঁকের স্পর্শে তুমি একটা কাঁক হলে
আমার পৃথিবী থেকে কেটে দিলে প্রজাতি-
প্রস্থান
ডালিয়া চৌধুরী
এক ঝুড়ি রোদ ফেরি করে
ঘুরেছি বিক্রয় বাজারে দুয়ারে দুয়ারে।
কোনো ক্রেতা খুঁজে না পেয়ে
তোমাদের এই মেঘের শহরে
আমি দাঁড়িয়ে পড়ি বিচ্ছিন্নতাবোধে
পথে পড়ে থাকা ধুলোর সংবাদে।
অতঃপর স্বপ্নশূন্য সময়ের তরঙ্গে
রাতজাগাডাহুকটির মতন
বুকের কফিনে সমুদ্র লুকিয়ে
মুছে ফেলেছি চোখের সমস্ত নীল।
এক ঝুড়ি রোদ ফেরি করে
ঝরা পালকের উড়ন্ত অনুভবে
দীর্ঘ পথের পরিভ্রমণে পরিশ্রান্ত,
বিতাড়িত এক বিজাতি সুর আমি
মানুষ টানতে ব্যর্থ হয়ে
যে চলে যাচ্ছে শূন্যতার শাদা আশ্রমে।
এ আমারপ্রস্থান নয়
এ কেবল অপরাহ্ণ-বেলার অভিমান।
শরীরবৃত্তীয় প্রশাসন
সিদ্দিক বকর
প্রশাসন- মানুষ-শাসন-ক্ষমতা!
শরীরবৃত্তীয় প্রশাসন ভেঙে পড়লে
সাপে কাটে আইন ও কানুন
জেগে ওঠে যৌনাঙ্গচর
হামলে পড়ে পুরুষাঙ্গ মব
রাজ ও সাঁঝবাতি-
মাটিতে লুণ্ঠিত ভোরের নরোম স্তন
কানে ও মনে আগুনের প্রশাসন ভেঙে
প্রবৃত্তি প্রহরী একচেটে- সমূহ অন্ধকার
দীর্ঘ এক গানটান-
স্বরগ্রাম বাজিয়ে বেরিয়ে আসে
বাজখাঁই কান্নায়-
যে সাপ চলে গেছে তার খোলস ফেলে
যে নারী অন্তর্ধানে গেছে তার অঙ্গের ভঙ্গি রেখে
তার খোঁজ আর রাখিনি, রাখেনা কেউ
আমি ও দেশাত্মা মৃতভূকের ঠোঁটের নিচে ব্যবচ্ছেদ
ছিঁড়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে- খাবলে খাবলে খাবলে বিস্তারিত
নির্মোহ
স্বপন আদিত্য
বিষণœতার ভাষাতেই রচিত হয়েছিলো
অস্তিত্বের প্রগাঢ় কম্পন।
অন্ধকার নেমে আসা সান্ধ্য উদ্যানের তৃণে
সেইসব উৎকণ্ঠিত মায়াময় যাতায়াত শেষ হলে
এক অনিচ্ছাকৃত যাত্রাপথের রেখায়
কোথায় হারিয়েছ জানা হয় নাই আর।
মেঘময় গ্রীষ্ম সন্ধ্যা নামছে-
নির্মোহ তাকিয়ে আছি
এইসব অন্তহীনতার দিকে।
নাচঘরে ক্ষয়ে যাওয়া ঘুঙুর
নাসরিন সিমি
ঘুঙুরের শব্দ শুনি বিলুপ্ত নাচঘরের
একদা হয়তো পরেছিলাম পূর্ব জনমে
আনারকলি বেশে কোন এক সেলিম
বেঁধে দিয়েছিলো এক জোড়া ঘুঙুর
তাঁর চোখে মদিরা আমার বুকে প্রেম
খঞ্জরের আঘাতে টুকরো টুকরো হৃদয়
ছিঁড়ে পুরুষ তুমি কাকে ভুলতে চাও
অপরাহ্ন আলোয়, তোমার সা¤্রাজ্যে
বসত করে আরো যে অনেক নারী
তাদের বুকের ভেতর আগুন জ্বলে!
মেঘের ছায়া
সৈয়দ নূরুল আলম
ভর দুপুরে ভবঘুরে মেঘের ছায়া নেমে এসেছিল। জানিয়ে গেলো, ও একটু পরে আসছে। আমি রাত গুনি-দিন গুনি আর অপেক্ষায় থাকি। এক মাস একুশদিন তো বেশি সময় নয়
জানি ও ফিরে আসবে, অভিমান করে কি বেশি সময় থাকা যায়? না, কেউ থাকতে পেরেছে? হালকা হওয়ার ঝরে পড়বে ছোট ছোট অভিমান, চোখের পাতায় জমা হবে কষ্টের ছাপ। এই ছাপ গায়ে জড়িয়ে সকল রাগ, ক্ষোভ মুছে যাবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে। মাচার তল থেকে বিড়াল ঢেকে উঠবে-মিউ।
বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্বপ্নের বন্ধন
মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল
মানুষে মানুষে জন্ম নেয় মানুষ রতন
কুপ্রবৃত্তির প্ররোচনায় হয় সে অমানুষ
ভেবেছ কি কখনো নির্জলা সত্য মেনে
নিদারুণ ওঠানামা হয় সে জীবনে
ভালোবাসা বলে কিছু নেই এ জীবনে
সবুজ কথার জালে ডুবে থাকা শুধু
নির্লজ্জ বেহায়ার মতো বুকে বাজে ঘৃণা
তবু রয়ে যায় অবাক হওয়া স্বপ্নের বন্ধন
কেন ফিরে আসে বারবার দেখেছ কি হায়
সুখ পাখিটার মতো কাঁপন জাগায় অহেতুক
যেভাবেই থাক না কেন ভালো থাকা চাই
দুর্লভ ভাবনারা মিথ্যে হয়ে যায় না যেন
অবহেলা অনাদর উপেক্ষা ঠেলে-
মনজুর শামস
অবহেলার মুখে ঝাঁমা ঘষে পাথরের গিঁটের ভেতর
শেকড় সেঁধিয়ে পোড়ো দালানের ছাদের কার্নিশে
ঝকঝকে সবুজ পাতার তুখোড় স্পর্ধায় বেড়ে উঠল
পাখির বিষ্ঠার থিকথিকে কুৎসিতে পড়ে থাকা
অচ্ছুৎ বিবাগি পরমাশ্চর্য সাহসী বটের বীজ
উপেক্ষার দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে নেতিয়ে থাকা
লজ্জাবতী পাতার কুঞ্জধাম থেকে থোকা থোকা
গাঢ় গোলাপি ফুলেরা সগৌরবে মাথা তুলে
দুলে দুলে গাইতে থাকলো জীবনের গান
অনাদরে মাঠে-ঘাটে-জলে দুঃশাসনের পি-ি
চটকাতে থাকা পোড় খাওয়া শোষিত মানুষ
তুমি কেন বৈষম্যের দেয়াল ভেঙে সাম্যের
পতাকা ওড়াবে না মগেদের মুলুক জুড়ে
তোমার তো কারো কাছে হারাবার কিছু নেই
উলঙ্গ স্বরূপ
নিলয় রফিক
অর্ধমূর্খ তোতাপাখির স্কুলের শিক্ষক
মুখস্থ বিদ্যার ঢেউ রবির স্বভাব
দৌড়তে দৌড়তে ঘামে অদূরে পাড়ায়
পুকুরে ব্যাঙের নাচ নিজেকে মৈনাক
সামনে-পিছনে সারি মুখোমুখি চোখ
রথের-সড়কে পথে দু’যুগে পথিক
মেঘের সাম্পানে ঘুরে-ঘুরে পড়ন্ত বিকেল
ভিতরে ভরাট নদী শূন্যতা রোদ্দুর
চার দরজার ঘর, আঁধার জানালা
উইপোকা নৃত্যরত আরামে আয়েশ
সুন্দর দেখলে ভয়, চুনকালি শুরু
লিখে ফেলে ফেসবুকে উলঙ্গ স্বরূপ
সুর তোলে বাঙাবাঁশি নিজেই ঠাকুর
২২ শ্রাবণ ১৪৩২
খালেদ মাহবুব মোর্শেদ
রবি, আজি বাংলার ঘরে-ঘরে লাখো-লাখো
দীপ্যমান তরুণ প্রতিভা
প্রাণখুলে পড়িতেছে তোমারই কবিতা
গাইতেছে তোমার গানের জানালা খুলি
তোমারই সুরের দোলায় দুলিতেছে তরুণী-হৃদয়
সার্ধ-শতবর্ষ এমন কী সময়
তোমার আত্মা ও কলমের মুখে মেনে
সানন্দ পরাজয়!
হৃদয়ের দ্বার খুলে তোমাকেই করি আজ স্বচ্ছন্দ বরণ
কবিতা-গানের অনুগতি অমর পঙ্ক্তিতে
বাঙ্গালির সব ঘর করে যায় সানন্দে স্মরণ।
আমাদের কথা ভেবে তুমি লিখেছিলে ‘চৌদ্দশত সাল’
অনিবার্য ভালোবাসা দিয়েছ বলেই আমরা ভেঙেছি
সংশয়ের ঠুনকো দেয়াল।
মন খুলে দিয়ে যাই রবিকে প্রণাম
তাঁর কাব্য পড়ে লিখে রাখি সশ্রদ্ধ সালাম।
তোমার চরণ-চিহ্ন না পড়–ক আজ
নাইবা বাইলে তুমি পুরাতন খেয়া
আকাশে উদিত তারা প্রতি রাতে বলে:
ভোরেই উদিত হবে নির্ঝরের রবি।
হতাশা নিহত হলো আমাদের ঘরে
বাইশে শ্রাবণে পাই সালোক পুলক।
তব পদধূলি-স্পর্শে রোজ পূত হয়
বাঙ্গালির বুক ভরা হৃদয়ের সুর।
প্রাকৃতিক বিধি মেনে ফিরে না এলেও
তোমার সৃজিত ধ্বনিগুচ্ছে দুলে যায়
আমাদের অবিরাম ¯িœগ্ধ অন্তপুর।
বিজোড় কোলাহল
তানিয়া হাসান
তোমার ছুটি শেষ হয়ে এসেছিলো-
স্নানের ঝুমুর ঝুমুর আর টিউবওয়েলের কলরব
ভাসিয়ে দিয়েছিল চৌচালা ছাউনি ও
কদমতলার যত আয়োজন।
খিড়কিতে জন্ম নেওয়া হাতছানিকে
ফিরিয়ে দিতে পারেনি প্রজাতি।
পূর্বনারীর নিয়ন্ত্রিত নূপুর এড়িয়ে
হয়নি কাটা ইশারাদিঘি-
লোকাল বাসের শেষ জানালায়
বাঁধা ছিল তোমার ছুটি
অথচ হাতঘড়িটা উড়েই গেল!
কোলাহলে যুবতী বিকেল মেলতে দেয়নি দরজা
বৃহস্পতিকে তারা ভেবেই কলম উগরে দিলো বীর্য-
সমূহ চমৎকারের পাশে রোপণ করলে
চুম্বনের আদিকাহিনি ও কলাকৌশল।
অথচ ছুটিতে, তোমার চাঁদ হওয়ার কথা ছিল!
বাঁকের স্পর্শে তুমি একটা কাঁক হলে
আমার পৃথিবী থেকে কেটে দিলে প্রজাতি-
প্রস্থান
ডালিয়া চৌধুরী
এক ঝুড়ি রোদ ফেরি করে
ঘুরেছি বিক্রয় বাজারে দুয়ারে দুয়ারে।
কোনো ক্রেতা খুঁজে না পেয়ে
তোমাদের এই মেঘের শহরে
আমি দাঁড়িয়ে পড়ি বিচ্ছিন্নতাবোধে
পথে পড়ে থাকা ধুলোর সংবাদে।
অতঃপর স্বপ্নশূন্য সময়ের তরঙ্গে
রাতজাগাডাহুকটির মতন
বুকের কফিনে সমুদ্র লুকিয়ে
মুছে ফেলেছি চোখের সমস্ত নীল।
এক ঝুড়ি রোদ ফেরি করে
ঝরা পালকের উড়ন্ত অনুভবে
দীর্ঘ পথের পরিভ্রমণে পরিশ্রান্ত,
বিতাড়িত এক বিজাতি সুর আমি
মানুষ টানতে ব্যর্থ হয়ে
যে চলে যাচ্ছে শূন্যতার শাদা আশ্রমে।
এ আমারপ্রস্থান নয়
এ কেবল অপরাহ্ণ-বেলার অভিমান।
শরীরবৃত্তীয় প্রশাসন
সিদ্দিক বকর
প্রশাসন- মানুষ-শাসন-ক্ষমতা!
শরীরবৃত্তীয় প্রশাসন ভেঙে পড়লে
সাপে কাটে আইন ও কানুন
জেগে ওঠে যৌনাঙ্গচর
হামলে পড়ে পুরুষাঙ্গ মব
রাজ ও সাঁঝবাতি-
মাটিতে লুণ্ঠিত ভোরের নরোম স্তন
কানে ও মনে আগুনের প্রশাসন ভেঙে
প্রবৃত্তি প্রহরী একচেটে- সমূহ অন্ধকার
দীর্ঘ এক গানটান-
স্বরগ্রাম বাজিয়ে বেরিয়ে আসে
বাজখাঁই কান্নায়-
যে সাপ চলে গেছে তার খোলস ফেলে
যে নারী অন্তর্ধানে গেছে তার অঙ্গের ভঙ্গি রেখে
তার খোঁজ আর রাখিনি, রাখেনা কেউ
আমি ও দেশাত্মা মৃতভূকের ঠোঁটের নিচে ব্যবচ্ছেদ
ছিঁড়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে- খাবলে খাবলে খাবলে বিস্তারিত
নির্মোহ
স্বপন আদিত্য
বিষণœতার ভাষাতেই রচিত হয়েছিলো
অস্তিত্বের প্রগাঢ় কম্পন।
অন্ধকার নেমে আসা সান্ধ্য উদ্যানের তৃণে
সেইসব উৎকণ্ঠিত মায়াময় যাতায়াত শেষ হলে
এক অনিচ্ছাকৃত যাত্রাপথের রেখায়
কোথায় হারিয়েছ জানা হয় নাই আর।
মেঘময় গ্রীষ্ম সন্ধ্যা নামছে-
নির্মোহ তাকিয়ে আছি
এইসব অন্তহীনতার দিকে।
নাচঘরে ক্ষয়ে যাওয়া ঘুঙুর
নাসরিন সিমি
ঘুঙুরের শব্দ শুনি বিলুপ্ত নাচঘরের
একদা হয়তো পরেছিলাম পূর্ব জনমে
আনারকলি বেশে কোন এক সেলিম
বেঁধে দিয়েছিলো এক জোড়া ঘুঙুর
তাঁর চোখে মদিরা আমার বুকে প্রেম
খঞ্জরের আঘাতে টুকরো টুকরো হৃদয়
ছিঁড়ে পুরুষ তুমি কাকে ভুলতে চাও
অপরাহ্ন আলোয়, তোমার সা¤্রাজ্যে
বসত করে আরো যে অনেক নারী
তাদের বুকের ভেতর আগুন জ্বলে!
মেঘের ছায়া
সৈয়দ নূরুল আলম
ভর দুপুরে ভবঘুরে মেঘের ছায়া নেমে এসেছিল। জানিয়ে গেলো, ও একটু পরে আসছে। আমি রাত গুনি-দিন গুনি আর অপেক্ষায় থাকি। এক মাস একুশদিন তো বেশি সময় নয়
জানি ও ফিরে আসবে, অভিমান করে কি বেশি সময় থাকা যায়? না, কেউ থাকতে পেরেছে? হালকা হওয়ার ঝরে পড়বে ছোট ছোট অভিমান, চোখের পাতায় জমা হবে কষ্টের ছাপ। এই ছাপ গায়ে জড়িয়ে সকল রাগ, ক্ষোভ মুছে যাবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে। মাচার তল থেকে বিড়াল ঢেকে উঠবে-মিউ।