image

মুনীর চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ ও ‘কবর’ উত্তর-আধুনিক পাঠ পর্যালোচনা

রুমা আক্তার

নাটক শিল্পের আদি শাখা এবং সমাজ ও সময়ের প্রতিচিত্র। মুনীর চৌধুরী বাংলা নাট্যধারায় এক অনিবার্য নাম। তাঁর জীবনবোধ ও লেখনিশক্তি সমকালীন পাকিস্তানি রাষ্ট্রব্যবস্থার অত্যাচার, ভাষানীতি, শোষণ এবং মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নাটকীয় অভিঘাতে রূপ দেয়। রক্তাক্ত প্রান্তর (১৯৬২) ও কবর (১৯৬৬) উভয় রাজনৈতিক বাস্তবতা ও উত্তর-আধুনিকতা তাত্ত্বিক পাঠের সাথে গভীরভাবে যুক্ত। যেখানে উত্তর-আধুনিক পাঠের আলোকে দেখা যায় এ নাটকদ্বয় ঐতিহ্যিক নাট্যরীতিকে ভেঙে বহুস্বর, ব্যঙ্গ, উপহাস, প্রতীকীয়তা, ভাষার খেলাসহ নানা পোস্টমডার্ন কৌশল ব্যবহারে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে। আধুনিকতার ভাঙ্গন-সৌন্দর্য, সত্যের আপেক্ষিকতা, ভাষার বহুস্বর, মেটা-থিয়েটার, আন্তঃপাঠ, প্রতিরোধী-রাজনৈতিক কৌশল কীভাবে এ নাটকদ্বয়ে উপস্থিত তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জন্মশতবর্ষে তাঁকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি।

উত্তর-আধুনিকতাবাদ বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে একটি সংশয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আবির্ভূত হয়েছে; যা সার্বজনীন ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং আধুনিক জীবন জটিলতা ও দ্বন্দ্বগুলোকে ধারণ করে আধুনিকতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির পুননির্মাণ করে। উত্তরাধুনিকতা কোনো একটি কেন্দ্রে আস্থা রাখে না; কোনো তত্ত্বই স্বয়ংসম্পূর্ণ কিংবা পরিপূর্ণ জীবন বিধান না। আধুনিকতার মুখোশের আড়ালে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের নগ্নরূপ উন্মোচন করা উত্তরাধুনিকতার লক্ষ্য। আধুনিক চিন্তাধারা থেকে উৎসারিত সকল ব্যবস্থা সম্পর্কে সন্দেহ ও জিজ্ঞাসার ভিত্তি থেকে উত্তরাধুনিকতার চিন্তন। উত্তরাধুনিকতা প্রবণতাগুলোর মধ্যে শৃঙ্খলা কিংবা ধারাবাহিকতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। উত্তরাধুনিকতায় নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার চিহ্ন ও সুযোগ খুব সহসা দেখা মিলে। যৌক্তিক শৃঙ্খলা, স্তরবিন্যাস, কাঠামো, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এগুলো ভেঙ্গে ফেলার উন্মুক্ত বাসনা এবং এ তত্ত্বের প্রধানতম ভাবুক জ্যাঁ ফ্রাসোয়া লিওতার। তিনি মহা আখ্যানগুলো ধ্বংসের কথা বলেন: বিশেষত যেগুলো আধুনিকতার বিভিন্ন মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। পশ্চিমা চিন্তা-চেতনা, ঐতিহ্য মহা-আখ্যান সেইসব ভাবাদর্শ যা ব্যক্তিকে বিশ^াস করতে উদ্বুদ্ধ করে এবং শিকলে জড়ায়। পশ্চিমা দেশগুলো বিশ^াসের ফাঁদ পেতে সামষ্টিক মানুষকে ব্যাষ্টিক মানুষের বশে রাখে। উত্তরাধুনিকতা তত্ত্বের মাধ্যমে মহা-আখ্যানকে ধ্বংস করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আখ্যানের সৃষ্টি করে ইউরোকেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক চিন্তার অবসান ঘটানোর প্রয়াস করে। উত্তর আধুনিকতা আধুনিক-পূর্ব সময়ের মিথ, উপকথা, লোকবিশ^াস, ধর্মবিশ^াস, হাছন রাজা, লালন শাহ তাঁদের দর্শনকে সামনে রেখে পুনর্চর্চায় ব্রতী হতে সবাইকে আহ্বান করে। অর্থাৎ আধুনিকতার সকল আদর্শকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া এর মূল উদ্দেশ্য এবং এ ধারণাগুলোকে ভিত্তি করে মুনীর চৌধুরীর নাটকগুলোকে ‘পোস্টমডার্ন রিডিং’-এর আওতায় এনে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ‘কবর’ নাটকে উত্তর-আধুনিকতার উপাদান হিসেবে সময়-ধারণা ও বাস্তবতার ভাঙ্গন পর্যবসিত হয়েছে এবং এ নাটকের ঘটনাপ্রবাহ সংঘটিত হয়েছে কবরস্থানে, যেখানে মৃত ব্যক্তিরা কথা বলে। নাটকে মৃত-জীবিত ভাঙ্গন বাস্ততার প্রচলিত ধারাকে অস্বীকার করে। সময়রেখা চক্রাকারে উপস্থিত ব্যক্তিরা মরে গিয়ে আবার ফিরে আসে স্মৃতি ও ভাষার মধ্যে। কবর নাটকটি উপস্থাপন করে নাট্যকার আধুনিক সময়-রাজনীতির একরৈখিকতাকে ভেঙে দেন। নাট্যকার ত্রয়ী চরিত্রে প্রতিরোধ-সম্ভাবনা, ভয়, স্বপ্ন ও পরাজয়ের স্বর তুলে ধরেন। যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রের সত্য ও নাগরিকদের সত্য পরস্পরবিরোধী। নাট্যকার এখানে একক সত্যকে ভেঙে দেন, যা পোস্টমডার্ন বহুস্বরতত্ত্বকে নির্দেশ করে। মেটা-থিয়েটার ও ব্যঙ্গ-রীতি: মৃত ব্যক্তিদের সংলাপে নিজ মৃত্যুকে দর্শন করা মেটা-থিয়েটারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। চরিত্ররা কখনো কখনো নিজের বর্ণনা ও অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলে, যা ব্যক্তিকে আত্মসচেতন করে। মুর্দা ফকির চরিত্রটি পাগলাটে টাইপের মনে হলেও একটি রাষ্ট্রদেহের তিনি শুভবোধসম্পন্ন ব্যক্তি। তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষে নিজের চোখের সামনে একে একে আপনজনেরা মারা যায়। আত্মীয়-স্বজনদের শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খায় কিন্তু কবর দিতে পারে না। সে থেকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গোরস্থানের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান। ‘ঝুঁটা’ বলার মাধ্যমে নাটকে তার আবির্ভাব হয়েছে। হাফিজ ও নেতার দেশের সাথে ষড়যন্ত্রকে উন্মোচিত করার লক্ষ্যে তার এ আগমন। ভাষা আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন তাঁরা কেউ মৃত নন, জীবিত। এছাড়াও মুর্দা ফকির চরিত্রটির মধ্য দিয়ে নাট্যকারের স্বীয় জীবনদর্শন পরিলক্ষিত হয়েছে। মুর্দা ফকির যেন তাঁর জীবনের প্রতিভূ। মুর্দা ফকিরের কবরের অন্বেষণ নাট্যকারে জীবনের ইতিবৃত্ত। রাষ্ট্র-ক্ষমতার ডিকন্সট্রাকশন: পাকিস্তানি রাষ্ট্রযন্ত্রের ভয়াবহতা নাট্যকার নাটকে প্রতীকের মাধ্যমে তুলে ধরেন; তিনি ভয়, সন্দেহ, হাহাকার, অন্ধকারের ভাষা দিয়ে তৈরি করেন ক্ষমতার অবয়বহীন উপস্থিতি। ভাষার প্রতীকী ব্যবহার ও অবাস্তবতার প্রকাশ পেয়েছে এ নাটকে। মুর্দা ফকিরের ডাকে কবরে যেতে চায় না ভাষা শহিদেরা। হাফিজ ও নেতার সাথে তাঁদের কথোপকথনে অবাস্তবতার ভিতরে বাস্তবতার মহার্ঘ চিত্র ফুটে ওঠে।

‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকে উত্তর-আধুনিকতার উপাদান: ইতিহাসের বিনির্মাণ ও রাজনৈতিক রূপক নাটকটিতে যেমন রয়েছে ঐতিহাসিক উপাদান, মিথিক প্রতীক, রূপক তেমনি সমকালীন রাজনীতিকে মিলিয়ে তৈরি করেছে একটি প্যাস্টিশ (Pastiche)- যা পোস্টমডার্ন রচনার একটি বৈশিষ্ট্য। ইতিহাস এখানে একরৈখিক নয়; বরং ভাঙ্গা ও পুনর্গঠিত। যেখানে নাট্যকার তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধের প্রতীকে বাঙালির মুক্তির আর্তি শৈল্পিক ব্যঞ্জনায় বিধৃত করেছেন। উত্তর আধুনিতার আরেকটি বৈশিষ্ট্য অনিশ্চয়তা ও অবিশ্বাস- যা এ নাটকে নান্দনিকভাবে উপস্থিত এবং এ নাটকের প্রত্যেকটি চরিত্র- ইব্রাহিম কার্দি, আতা খাঁ, বশীর খাঁ, রহিম শেখ, জোহরা এবং হিরণবালা চরিত্রে বিদ্যমান। চরিত্ররা বারবার সত্য, বিশ্বাস ও ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। কী হবে এ যুদ্ধের পরিণতি? জোহরা ও ইব্রাহিম কার্দি কি এক হতে পারবে? এছাড়াও রাষ্ট্র ও নাগরিকের সম্পর্ক একধরনের পোস্টমডার্ন অ্যানোমির জন্ম দেয় যেখানে নায়কতত্ত্ব ভেঙে পড়ে এবং নায়িকা হয়ে ওঠে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র। মেহেদী বেগের কন্যা জোহরা যে পিতৃহননের প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর। নাটকে জোহরার রক্তক্ষরণ কিংবা প্রতিশোধস্পৃহা এক মানবিক আবেদন সৃষ্টি করে। যুদ্ধে জয়-পরাজয় যে পক্ষের হোক না কেন, প্রকৃত পরাজয় জোহরার হয়েছে। ভাষার প্রতীকী ব্যবহার ও বাস্তবতা-অবাস্তবতার সীমারেখা এ নাটকে পরিলক্ষিত হয়েছে এবং এ নাটকের ভাষা সাংকেতিক: রক্ত, প্রান্তর, কুয়াশা, ছায়া সবই বাস্তবতাকে ভেঙে ভাবগত বাস্তবতা নির্মাণ করে। ভাষার এ প্রতীকী অভিঘাত Derrida–signifier-এর অস্থিতিশীলতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। জোহরা বেগমের অন্তর্জগত ও বহির্জগতের বাস্তবতা এ নাটকে গভীর অভিক্ষেপ সৃষ্টি করেছে। যে নারী একদিকে প্রেমময়ী অপরদিকে বীরাঙ্গনা ও স্বজাতিসেবী। যার অসি চালনার শক্তি সবাইকে বিমোহিত করে। ‘বিরপনাই তুমি মুসলিম শিবিরের রত্নাস্বরূপ। এই যুদ্ধে জয়লাভে তুমি অন্যতম স্তম্ভস্বরূপ। তুমি বীর এবং মহান।’ যখন সে পুরুষ মন্নুবেগের ছদ্মবেশে বীরঙ্গনা মূর্তি ধারণ করে, সকল আয়োজন তার রূপ ও সৌন্দর্যের কাছে ব্যর্থ হয়ে যায়। প্রতিরোধী-রাজনীতির নতুন ভাষা এ নাটকে দারুণভাবে প্রকাশ পেয়েছে। চরিত্ররা যে ভাষিক প্রতিরোধ রচনা করে তা কখনো প্রতিবাদের কখনো ব্যঙ্গাত্মক, কখনো মৃদু, কখনো চিৎকারের মতো গর্জে ওঠে; যা পোস্টমডার্ন ‘মাইক্রো-রেজিস্টেন্স’-এর সফল উদাহরণ। ‘অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে নয়, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আগে শত্রুকে শেষ করবো। তারপর শত্রু শিবিরে প্রবেশ করবো।’

উভয় নাটকের তুলনামূলক পোস্টমডার্ন পাঠ: উভয় নাটকে প্রতীক ও রূপকের শৈল্পিক ব্যবহার নাটকদ্বয়কে শিল্পসফল করেছে। নাটকদ্বয়ে বাস্তব অবস্থাকে দেখানো হয়েছে রূপক ও প্রতীকে; এটি চিত্র-বাস্তবতার চেয়ে ব্যাখ্যাভিত্তিক। বাস্তবতাকে গুরুত্ব দেয়া পোস্টমডার্ন নন্দন সৌন্দর্যের একটি মূল বৈশিষ্ট্য এবং এ বাস্তবতাই ইব্রাহিম কার্দি এবং জোহরা বেগমের মিলনের অন্তরায়। চরিত্রদ্বয় বাস্তবতার কঠিন আবরণ থেকে বের হতে পারে না। চরিত্রের ভাঙ্গন ও পরিচয় সংকট যেন এ নাটকে গুরুপূর্ণ বিষয়। চরিত্ররা সম্পূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ নয়। তারা ভয়, প্রতিরোধ, হতাশা, স্মৃতি এমনকি মৃত্যুর মধ্যে ভাসমান কখনো শারীরিক কখনো বা মানসিকভাবে এবং এ ‘অপূর্ণতা; পোস্টমডার্ন সাবজেক্ট fluid, fragmented— এর পরিচায়ক। ভাষা ও ক্ষমতার দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক নাটকদ্বয়ে বিদ্যমান। নাটকদ্বয় ভাষাকে ব্যবহার করেছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে। উত্তর-আধুনিক তত্ত্ব অনুযায়ী ভাষাও যে প্রতিরোধ ও চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে এ নাটকদ্বয়ে তার বাস্তব প্রয়োগ দেখা যায়। সত্যের বহুগামিতা রাষ্ট্রযন্ত্র একটি সত্য বলে, চরিত্ররা আরেকটি সত্য বর্ণনা করে। পাঠক তার অন্য সত্য উদঘাটন করে। এভাবে Truth becomes plural— একটি স্পষ্ট পোস্টমডার্ন বৈশিষ্ট্য। মুনীর চৌধুরীর নাটকের ভাষা, রূপক, নাট্যরীতি, চরিত্র-নির্মাণ, বাস্তবতার ভাঙ্গন ও রাজনৈতিক বক্তব্যে উত্তর-আধুনিক বৈশিষ্ট্য দৃশ্যমান। এটি প্রতীয়মান হয়েছে যে টেক্সট রচয়িতার সময়-সংকট অতিক্রম করেও টেক্সটি নতুন ব্যাখ্যা কিংবা সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে; যা উত্তর-আধুনিক পাঠে নাটকদ্বয়কে গভীর অন্বেষণের সুযোগ করে দেয়।

‘কবর’ ও ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকদ্বয় রাজনৈতিক বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে রচিত হলেও, উত্তর-আধুনিক পাঠে নাটকদ্বয় কেবল রাজনৈতিক নাটক নয়; বরং ভাষার খেলায় নির্মিত বহুবাচনিক, প্রতীকী, মেটা-থিয়েটারিক এক জটিল শিল্পরূপ। মুনীর চৌধুরীর নাট্যভাষা, চরিত্রায়ণ দিকনির্দেশ করে যে কীভাবে একটি নাটক ঐতিহাসিক কিংবা সমমাময়িক প্রেক্ষাপটকে অতিক্রম করেও নতুন তত্ত্বের আলোয় নতুন অর্থ তৈরি করতে শিল্পসফল ও স্বকীয় হয়েছে। প্রবন্ধে উল্লিখিত নাট্য আবহের মধ্য দিয়ে সেই সময়কার ও সমকালীন সময়ের উপর্যুক্ত বিষয়কে উত্তর-আধুনিকতা পাঠের মাধ্যমে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

প্রাচ্য ও প্রাশ্চাত্য তত্ত্বের মিথস্ক্রিয়া বাংলা নাটককে করেছে বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত। মুনীর চৌধুরী কোনো এক বিশেষ দশক কিংবা শতকের নাট্যকার নন, তিনি বহমান সময়ে নাট্যকার। তাঁর নান্দনিকবোধ ও স্বকীয়তা তাঁকে বাংলা নাট্যধারায় মৌলিক ও স্বতন্ত্র করেছে।

সম্প্রতি