alt

বিমল গুহর একগুচ্ছ কবিতা

: শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১

(বিমল গুহ, জন্ম ২৭শে অক্টোবর, ১৯৫২ সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম ॥ ৭০তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা)

আঁধারের রূপ
সুন্দর দাঁড়িয়ে আছে সম্মুখে আমার

-জীবনই সুন্দর;

অন্ধকার বার-বার হাতছানি দেয়
কেঁপে ওঠে লহমায় সন্ত্রস্ত ঘর!

মৃত্যু পুঁতিগন্ধময় বীভৎস হাওয়া
দীর্ঘতম শ্বাস;
জীবনের কাছে যাই, ছুটে-ছুটে যাই-
বিছানার দুইপাশে বাড়ে মুথাঘাস!

জীবন সুন্দর আহা! জীবনই সুন্দর
আঁধার কুৎসিত কদাকার;
জীবনের অন্যপিঠে লিখবো কী নাম-
ড্রাগনের অগ্নিরূপ, ভীতি, অন্ধকার!

লাইফ সাপোর্ট
শুধু বালিয়াড়ি, শুধু রাশি রাশি জল
সমুদ্র সমুদ্র- চারিদিকে জলের উল্লাস;
এ রকম ঘোরের ভিতর হেঁটে যাচ্ছে আমার সময়।
শুধু বালিয়াড়ি শুধু জল
ভেতরে শৈশবনৃত্য- শুধু কোলাহল!

কোথায় কী হলো আজ- আগুনের মতো
সৈকতে তীর্যক রোদ এসে পড়েছে এক্ষণে,
পাশে নৃত্যরত ঢেউ জলের উল্লাস-
ভেতরে ভেতরে সব ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাচ্ছে মনে হয়;
আগুনের মতো লেলিহান
ছিটকে পড়েছে সবখানে- পুড়ে যাচ্ছে মোহ
সমুদ্রের জলও কি টের পায় কিছু?
চারদিকে বালিয়াড়ি শুধু কোলাহল: এ রকম লাগে-
মৃত্যুপূর্বে লাইফসাপোর্ট নিয়ে যারা বাঁচে।

অধিবাস্তবতা
সত্যি বলছি, এ ক’দিন গৃহবন্দি থেকে
অভ্যন্তরে জমা হলো ক্রোধের বারুদ:
সকাল-সন্ধ্যা প্রতিদিন- সময়কে মুঠে পুরি
আমি আর ফারুক মাহমুদ!
ঘুণাক্ষরে বুঝি নাই
ফুসফুস প্রণালী হবে ক্ষীণ;
হতাশার ছন্দগাথা যখন দুজন পাঠ করি
পৃথিবীকে মনে হলো- সুখদ মসৃণ?
সারাক্ষণ চোখে ভাসে ধাবমান আগুনের গোলা
অক্ষিকোটর জুড়ে অসংলগ্ন চাপ!
তবে কি নিঃশেষ হতে চলেছে অন্তরা;
কানে বাজে অশুভ সংলাপ?
শেষপাতা ঝরে গেলে কল্পরূপ বৃক্ষের মতন
শীর্ণকা- দাঁড়ানোই প্রকৃতি সম্মত;
অভ্যন্তরে জমা হলে ক্রোধ-
শীর্ণবুকে আঁকা হয় অগ্নি-লাল ক্ষত!

জন্মঋণ
সময়ক্ষেপণ কোনো চারুকর্ম নয়;
গ্রন্থসুধা নিয়ে যারা থাকে
জলেস্থলে নভোনীলে
তাদের মুখের অবয়বে আঁকা হয় পৃথিবীর ছায়া।
দেখো দেখো পরিত্যক্ত মাঠের কিনারে
আকাশ নেমেছে কত নিচে; মেঘমালা ছুঁয়ে আছে
দিগন্তরেখা। বোধিসত্ত্বমূলে আজো
প্রকৃতিবিদ্যার পাঠ হয়-
আমরা এতকাল যাকে পাঠশালা বলতে শিখেছি।
সময়ক্ষেপণ আদৌ ঠিক কাজ নয়-
জন্মঋণ শোধ দিতে দিতে
দিগন্তের সীমানা অবধি চলে যাবো, একা একা।

ছবি

সত্যেন সেনের উপন্যাস: মিথ ও ইতিহাসলগ্ন মানুষ

ছবি

বিস্ময়ের সীমা নাই

ছবি

নগর বাউল ও ত্রিকালদর্শী সন্ত কবি শামসুর রাহমান

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ও বন্ধু আমার

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

শামসুর রাহমানের কবিতায় ‘মিথ’

ছবি

বহুমাত্রিক শামসুর রাহমান

ছবি

দূর-সময়ের সার্বভৌম কবি

ছবি

মাহফুজ আল-হোসেন-এর দশটি কবিতা

ছবি

মনোজগতের অন্বেষায়

সাময়িকী কবিতা

ছবি

এক ঘর রোদ

ছবি

দ্রোহের রম্য পঙ্ক্তিমালা

ছবি

সংবেদী রঙে ও রেখায় প্রাণের উন্মোচন

ছবি

অলস দিনের হাওয়া

ছবি

লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মর্মস্পর্শী ও দূরদর্শী সাহিত্যকর্ম

ছবি

‘ভাষার আরোপিত কারুকাজে খেই হারিয়ে ফেলি’

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জিন্দা লাশ কি প্রকৃত লাশ

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শিক্ষা দর্শন ও অলস দিনের হাওয়া

ছবি

ধ্রুপদী বোধ ও ব্যাধির কবিতা

ছবি

সুকান্তর কবিতায় বিপ্লবী চেতনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মগ্নচৈতন্যে সৌন্দর্যধ্যান

ছবি

অধুনাবাদী নিরীক্ষার অগ্রসাধক

ছবি

‘বায়ান্নর আধুনিকতা ও প্রগতিশীল ধারাকে বহন করতে চেয়েছি’

ছবি

জাতীয় চেতনার অমলিন ধারক

ছবি

নক্ষত্রের অনন্ত যাত্রা

ছবি

আহমদ রফিক ও ভাষামুক্তি সাধনা

ছবি

কবি আসাদ চৌধুরী : ঘরে ফেরা হলো না তাঁর

ছবি

জীবনবোধের অনবদ্য চিত্ররূপ ‘স্বপ্নছোঁয়ার পদযাত্রা’

ছবি

অনালোকিত ইতিহাসের সন্ধানে

ছবি

কবিরের দোঁহা

ছবি

আকবর হোসেন ও ‘যৌবনটাই জীবন নয়’

ছবি

স্বোপার্জিত

ছবি

সংগ্রামের অগ্নিশিখা থেকে হেলাল হাফিজ

tab

বিমল গুহর একগুচ্ছ কবিতা

(বিমল গুহ, জন্ম ২৭শে অক্টোবর, ১৯৫২ সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম ॥ ৭০তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা)

শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১

আঁধারের রূপ
সুন্দর দাঁড়িয়ে আছে সম্মুখে আমার

-জীবনই সুন্দর;

অন্ধকার বার-বার হাতছানি দেয়
কেঁপে ওঠে লহমায় সন্ত্রস্ত ঘর!

মৃত্যু পুঁতিগন্ধময় বীভৎস হাওয়া
দীর্ঘতম শ্বাস;
জীবনের কাছে যাই, ছুটে-ছুটে যাই-
বিছানার দুইপাশে বাড়ে মুথাঘাস!

জীবন সুন্দর আহা! জীবনই সুন্দর
আঁধার কুৎসিত কদাকার;
জীবনের অন্যপিঠে লিখবো কী নাম-
ড্রাগনের অগ্নিরূপ, ভীতি, অন্ধকার!

লাইফ সাপোর্ট
শুধু বালিয়াড়ি, শুধু রাশি রাশি জল
সমুদ্র সমুদ্র- চারিদিকে জলের উল্লাস;
এ রকম ঘোরের ভিতর হেঁটে যাচ্ছে আমার সময়।
শুধু বালিয়াড়ি শুধু জল
ভেতরে শৈশবনৃত্য- শুধু কোলাহল!

কোথায় কী হলো আজ- আগুনের মতো
সৈকতে তীর্যক রোদ এসে পড়েছে এক্ষণে,
পাশে নৃত্যরত ঢেউ জলের উল্লাস-
ভেতরে ভেতরে সব ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাচ্ছে মনে হয়;
আগুনের মতো লেলিহান
ছিটকে পড়েছে সবখানে- পুড়ে যাচ্ছে মোহ
সমুদ্রের জলও কি টের পায় কিছু?
চারদিকে বালিয়াড়ি শুধু কোলাহল: এ রকম লাগে-
মৃত্যুপূর্বে লাইফসাপোর্ট নিয়ে যারা বাঁচে।

অধিবাস্তবতা
সত্যি বলছি, এ ক’দিন গৃহবন্দি থেকে
অভ্যন্তরে জমা হলো ক্রোধের বারুদ:
সকাল-সন্ধ্যা প্রতিদিন- সময়কে মুঠে পুরি
আমি আর ফারুক মাহমুদ!
ঘুণাক্ষরে বুঝি নাই
ফুসফুস প্রণালী হবে ক্ষীণ;
হতাশার ছন্দগাথা যখন দুজন পাঠ করি
পৃথিবীকে মনে হলো- সুখদ মসৃণ?
সারাক্ষণ চোখে ভাসে ধাবমান আগুনের গোলা
অক্ষিকোটর জুড়ে অসংলগ্ন চাপ!
তবে কি নিঃশেষ হতে চলেছে অন্তরা;
কানে বাজে অশুভ সংলাপ?
শেষপাতা ঝরে গেলে কল্পরূপ বৃক্ষের মতন
শীর্ণকা- দাঁড়ানোই প্রকৃতি সম্মত;
অভ্যন্তরে জমা হলে ক্রোধ-
শীর্ণবুকে আঁকা হয় অগ্নি-লাল ক্ষত!

জন্মঋণ
সময়ক্ষেপণ কোনো চারুকর্ম নয়;
গ্রন্থসুধা নিয়ে যারা থাকে
জলেস্থলে নভোনীলে
তাদের মুখের অবয়বে আঁকা হয় পৃথিবীর ছায়া।
দেখো দেখো পরিত্যক্ত মাঠের কিনারে
আকাশ নেমেছে কত নিচে; মেঘমালা ছুঁয়ে আছে
দিগন্তরেখা। বোধিসত্ত্বমূলে আজো
প্রকৃতিবিদ্যার পাঠ হয়-
আমরা এতকাল যাকে পাঠশালা বলতে শিখেছি।
সময়ক্ষেপণ আদৌ ঠিক কাজ নয়-
জন্মঋণ শোধ দিতে দিতে
দিগন্তের সীমানা অবধি চলে যাবো, একা একা।

back to top