alt

সারাদেশ

বোরো ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের ফরিয়াদ : এই মুহূর্তে যেন বৃষ্টি না হয়

প্রতিনিধি, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) : শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

সারাদেশে প্রচণ্ড দাবদাহে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠলেও কৃষকরা ক্ষেতের ধান নিরাপদে ঘরে তুলতে এখনই বৃষ্টি চাচ্ছেন না তারা।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি জন্য ইস্তিসকার নামাজ শেষে মোনাজাত করছে সাধারণ লোকজন। এর ব্যতিক্রম দেখা দিয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার কৃষকদের মাঝে। এখানে ২৬,৮০৪ জন কৃষক জমির পাকা ধানের ৪০ ভাগ ঘরে তুললেও বাকি ৬০ ভাগ আধা-পাকা ধান এখনও জমিতে রয়েছে। অব্যাহত দাবদাহে জমির ধান তুলতে কৃষকদের কষ্ট বৃদ্ধি পেলেও আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তারা বৃষ্টি চাচ্ছেন না।

আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ক্ষেতে বাম্পার ফলন হলেও উদপাদিত ফসল ঘরে তুলতে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় ভুগছেন কৃষকরা। ফুল্লশ্রী গ্রামের খোকন হাওলাদার ৬০ শতাংশ জমি ১২ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে বাকপাড়া ব্লকে বোরো চাষাবাদ করেছেন।

জমিতে ফসল ভালো হয়েছে। ধানকাটা শ্রমিক না পাওয়ায় স্ত্রী সেহরন বেগমকে নিয়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও ধান কাটছেন। কৃষক ভবরঞ্জন বিশ্বাস তিনজন শ্রমিক দিয়ে নিজের ৮০শতাংশ জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তাকে একাজে সহযোগিতা করছেন স্ত্রী কল্পনা রানী। চাষি হেমায়েত ফকির ৫ একর জমির পাকা ধান ঘরে তুলতে শ্রমিক নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন।

তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলেন, হে আল্লাহ এই মূহুর্তে আমাদের এলাকায় বৃষ্টি দিওনা। চাষি রামপ্রসাদ দাসের ৪০ শতাংশ জমির ধান পাকলেও শ্রমিক না পাওয়ায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় নিজেই ধান কাটতে শুরু করেছেন।

বাকাল এলাকার চাষি রমণী বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ২ একর জমির বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে ধান কাটা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। একজন শ্রমিক সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ধানকাটা মজুরি দিতে হয় ৮০০ টাকা। আমরা কষ্ট করে জমিতে বাম্পার ফলন ফলিয়েছি। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে জমিতে পানি জমবে। ফলে জমির ধান তুলছে কষ্ট হবে এবং কোনো শ্রমিক পাওয়া যাবে না।

বাকাল গ্রামের চাষি সুশীল হালদার বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে জমি থেকে পাকা ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। দাবদাহের কারণে ধান কাটতে গিয়ে অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পরেছে। ধান কাটার শ্রমিকদের নিরাপদে রাখতে খাবারের পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি ও খাবার স্যালাইনের দেয়া হচ্ছে। তারপরেও আমরা ধান ঘরে তুলতে আরো কষ্ট করতে রাজি আছি। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে আমার মত শতশত চাষি ধান তুলতে ভোগান্তিতে পরবে।

খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা থেকে নির্মল দাসের নেতৃত্বে ১৯ জনের একটি দল ধান কাটার জন্য বসুন্ডা এলাকায় আসার পরে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন গ্রুপে ধান কাটছেন।

তারা জানান, আমরা মালিকদের কাছ থেকে ছয় ভাগায় ধান কাটতেছি। তবে বৃষ্টি হলে ক্ষেতে পানি জমে আমাদের ধান কাটতে কষ্ট হবে। ঝালকাঠি জেলা থেকে রিপন হাওলাদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি ধান কাটা শ্রমিকের দল আগৈলঝাড়া উপজেলার জোবারপাড় গ্রামে এসেছে।

রিপন জানান, আমরা এখানে একমাস ধান কেটে জনপ্রতি ২০ মণ করে ধান নেয়ার টার্গেট করেছি। এতে আমাদের পরিবারের ৬ মাসের খাবার হবে। বৃষ্টি হলে জমিতে পানি জমলে আমারে টার্গেট পূরণ হবেনা। আমরা আগামী ১৫-২০ দিনে বৃষ্টি চাইনা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা থেকে ধানকাটা হারভেস্টার মেশিন নিয়ে বড়মগরা গ্রামে এসেছেন ওবায়দুল্লাহ খলিল।

তিনি প্রতি শতাংশ জমির ধানকাটা ও মাড়াই বাবদ ১০০ টাকা করে নেন। যদি এখন বৃষ্টি হয় তাহলে জমিতে পানি জমলে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা সম্ভব হবে না। তাই এই মুহূর্তে আমাদের বৃষ্টির কোনো প্রয়োজন নেই।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পীযুষ রায় জানান, এই উপজেলায় ৯,৪৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। খেতের ৫০ ভাগের বেশি আধা-পাকা ধান এখনও জমিতে রয়েছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে ২৭ হাজার কৃষক তাদের জমির ধান তুলতে চরম ভোগান্তিতে পরবেন।

ছবি

চাঁদপুরে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ বাস্তবায়নে বিশেষ অভিযান শুরু

নরসিংদীতে বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু

ধান শুকানোর কাজ করতে গিয়ে গাজীপুরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল নারীর

ছবি

চট্টগ্রামে লরির ধাক্কায় শিশুসহ ২ জন নিহত

ছবি

কেএনএফের আঞ্চলিক নারী সমন্বয়ক গ্রেপ্তার

ছবি

মদিনায় এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু

ছবি

চট্টগ্রামে লরির ধাক্কায় পুকুরে পড়ে ১ শিশু নিখোঁজ, আহত ৩

ছবি

ট্রাফিক পুলিশ লোহার পাইপে দিয়ে পিঠিয়ে পা ভাঙলো রিকশা চালককের

ছবি

টেকনাফে দুই কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস জব্দ করল বিজিবি

ছবি

বেনাপোল বন্দরে ৫ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

ছবি

কুমিল্লায় যাত্রীবাহী বাস উল্টে নিহত ৫

ছবি

কিশোরগঞ্জে শ্রেণিকক্ষে ২৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ

ছবি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কাজের সময় গ্যাস লাইনে লিকেজ

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর

ছবি

চাঁদপুরে দুই ইটভাটার মালিককে ৪ লাখ টাকা জরিমানা

ছবি

দেশে কোরবানির জন্য প্রস্তুত এক কোটি ২৯ লাখ পশু

ছবি

হোসেনপুরে গরমে ক্লাসেই অসুস্থ ৩০ প্রাইমারী শিক্ষার্থী

ছবি

রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের আম পাড়া শুরু

ছবি

বিলীনের পথে জলকদর খাল

ছবি

উখিয়ায় বাসা থেকে এনজিও কর্মীর লাশ উদ্ধার

ছবি

গাজীপুরে টিনশেড মার্কেট ও বসতবাড়িতে আগুন

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস থেকে ‘নগর উন্নয়ন মাশুল’ চান :মেয়র

বাংলাদেশি রোগীদের জন্য আসামের গুয়াহাটিতে মানসম্মত চিকিৎসাসেবার উদ্যোগ

ছবি

নতুন দুই জাতের শিম উদ্ভাবন

মৌলভীবাজারে এ ধর্ষন ও হত্যা মামলায় দুই আসামী মৃত্যুদন্ডের রায়

ছবি

রাজশাহীতে যুবককে হত্যায় দুইজনের ফাঁসি

ছবি

ফরিদপুরে আইসক্রিম তৈরির কারখানায় অভিযান ও জরিমানা

ছবি

সব ইটভাটা বন্ধ না করায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের ব্যাখ্যা তলব: হাইকোর্ট

ছবি

গৃহকর্মীকে নির্যাতন মামলায় গৃহকর্ত্রীর বিচার শুরু

ছবি

আচরণবিধি লঙ্ঘন : শ্রীপুরের এক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করল ইসি

ছবি

রাতভর টহলে পেরেশান তিতাস গ্যাস, আবাসিকে সংযোগ চালু করার সুপারিশ

ছবি

জাহাজে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ১২ ডাকাত আটক

ছবি

৬৪ দিনের উৎকণ্ঠার অবসান : স্বজনদের কাছে ফিরলেন ২৩ নাবিক

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকির মুখে বাঁশখালীর ৩৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ

ছবি

পাহাড়ে আরসার আস্তানা, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি

tab

সারাদেশ

বোরো ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের ফরিয়াদ : এই মুহূর্তে যেন বৃষ্টি না হয়

প্রতিনিধি, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

সারাদেশে প্রচণ্ড দাবদাহে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠলেও কৃষকরা ক্ষেতের ধান নিরাপদে ঘরে তুলতে এখনই বৃষ্টি চাচ্ছেন না তারা।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি জন্য ইস্তিসকার নামাজ শেষে মোনাজাত করছে সাধারণ লোকজন। এর ব্যতিক্রম দেখা দিয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার কৃষকদের মাঝে। এখানে ২৬,৮০৪ জন কৃষক জমির পাকা ধানের ৪০ ভাগ ঘরে তুললেও বাকি ৬০ ভাগ আধা-পাকা ধান এখনও জমিতে রয়েছে। অব্যাহত দাবদাহে জমির ধান তুলতে কৃষকদের কষ্ট বৃদ্ধি পেলেও আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তারা বৃষ্টি চাচ্ছেন না।

আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ক্ষেতে বাম্পার ফলন হলেও উদপাদিত ফসল ঘরে তুলতে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় ভুগছেন কৃষকরা। ফুল্লশ্রী গ্রামের খোকন হাওলাদার ৬০ শতাংশ জমি ১২ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে বাকপাড়া ব্লকে বোরো চাষাবাদ করেছেন।

জমিতে ফসল ভালো হয়েছে। ধানকাটা শ্রমিক না পাওয়ায় স্ত্রী সেহরন বেগমকে নিয়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও ধান কাটছেন। কৃষক ভবরঞ্জন বিশ্বাস তিনজন শ্রমিক দিয়ে নিজের ৮০শতাংশ জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তাকে একাজে সহযোগিতা করছেন স্ত্রী কল্পনা রানী। চাষি হেমায়েত ফকির ৫ একর জমির পাকা ধান ঘরে তুলতে শ্রমিক নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন।

তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলেন, হে আল্লাহ এই মূহুর্তে আমাদের এলাকায় বৃষ্টি দিওনা। চাষি রামপ্রসাদ দাসের ৪০ শতাংশ জমির ধান পাকলেও শ্রমিক না পাওয়ায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় নিজেই ধান কাটতে শুরু করেছেন।

বাকাল এলাকার চাষি রমণী বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, ২ একর জমির বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে ধান কাটা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। একজন শ্রমিক সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ধানকাটা মজুরি দিতে হয় ৮০০ টাকা। আমরা কষ্ট করে জমিতে বাম্পার ফলন ফলিয়েছি। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে জমিতে পানি জমবে। ফলে জমির ধান তুলছে কষ্ট হবে এবং কোনো শ্রমিক পাওয়া যাবে না।

বাকাল গ্রামের চাষি সুশীল হালদার বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে জমি থেকে পাকা ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। দাবদাহের কারণে ধান কাটতে গিয়ে অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পরেছে। ধান কাটার শ্রমিকদের নিরাপদে রাখতে খাবারের পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি ও খাবার স্যালাইনের দেয়া হচ্ছে। তারপরেও আমরা ধান ঘরে তুলতে আরো কষ্ট করতে রাজি আছি। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে আমার মত শতশত চাষি ধান তুলতে ভোগান্তিতে পরবে।

খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা থেকে নির্মল দাসের নেতৃত্বে ১৯ জনের একটি দল ধান কাটার জন্য বসুন্ডা এলাকায় আসার পরে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন গ্রুপে ধান কাটছেন।

তারা জানান, আমরা মালিকদের কাছ থেকে ছয় ভাগায় ধান কাটতেছি। তবে বৃষ্টি হলে ক্ষেতে পানি জমে আমাদের ধান কাটতে কষ্ট হবে। ঝালকাঠি জেলা থেকে রিপন হাওলাদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি ধান কাটা শ্রমিকের দল আগৈলঝাড়া উপজেলার জোবারপাড় গ্রামে এসেছে।

রিপন জানান, আমরা এখানে একমাস ধান কেটে জনপ্রতি ২০ মণ করে ধান নেয়ার টার্গেট করেছি। এতে আমাদের পরিবারের ৬ মাসের খাবার হবে। বৃষ্টি হলে জমিতে পানি জমলে আমারে টার্গেট পূরণ হবেনা। আমরা আগামী ১৫-২০ দিনে বৃষ্টি চাইনা। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা থেকে ধানকাটা হারভেস্টার মেশিন নিয়ে বড়মগরা গ্রামে এসেছেন ওবায়দুল্লাহ খলিল।

তিনি প্রতি শতাংশ জমির ধানকাটা ও মাড়াই বাবদ ১০০ টাকা করে নেন। যদি এখন বৃষ্টি হয় তাহলে জমিতে পানি জমলে হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা সম্ভব হবে না। তাই এই মুহূর্তে আমাদের বৃষ্টির কোনো প্রয়োজন নেই।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পীযুষ রায় জানান, এই উপজেলায় ৯,৪৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। খেতের ৫০ ভাগের বেশি আধা-পাকা ধান এখনও জমিতে রয়েছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টি হলে ২৭ হাজার কৃষক তাদের জমির ধান তুলতে চরম ভোগান্তিতে পরবেন।

back to top