দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) : জাহাজ কাটছেন শ্রমিকরা -সংবাদ
বিশ্ব ব্যাংকের নানাভাবে চাপ সৃষ্টি, স্ক্র্যাপ জাহাজের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকট, পরিবেশ-মানবাধিকার সংগঠনের নামে মিকদের উসকানি, এলসি খুলতে ব্যাংকের কঠিন শর্ত, বিদেশি স্ক্র্যাপ জাহাজ বিক্রিতে অনীহা প্রকাশসহ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সমুদ্র উপকূল গড়ে উঠা দেশের একমাত্র শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। শিল্পটি বন্ধ হলে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে সরকার। পাশাপাশি এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দুই লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বেন।
বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রি-সাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) সূত্রে জানা যায়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বদৌলতে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। যেসব যাত্রীবাহী বা পণ্যবাহী জাহাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, জাহাজ মালিকরা সেগুলো উন্নয়শীল দেশ বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিক্রি করে দেয়। বিক্রির পর জাহাজ কাটার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে। তারই ধারাবাহিকতায় জাহাজ ভাঙা শিল্পকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ড উপকূলজুড়েই গড়ে উঠে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড।
সীতাকুণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ২০ কিলোমিটার উপকূলে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সংখ্যা ১৮০টি হলেও বর্তমানে সচল রয়েছে মাত্র ২২টি। আর এই জাহাজ ভাঙা শিল্পে হাড়ভাঙ্গা খাঁটুনি খেটেই জীবন চালাচ্ছেন অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক। বর্তমানে ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল ৫০ শতাংশ যোগানদাতা এই শিপব্রেকিং ইয়ার্ড। এই ইস্পাত কারখানাগুলো শিপ ব্রেকিং লৌহজাত কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাবনাময় ইস্পাত খাত পড়েছে সংকটে।
শিপ ইয়ার্ডের মালিকরা জানান, বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা সম্ভাবনাময় জাহাজ ভাঙা শিল্পটি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগে দেশি-বিদেশি চক্র। তারা ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও সংস্থাও পরিবেশের দোহাই দিয়ে বিদোশি প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেছে। বাংলাদেশ ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জাহাজ ভাঙা শিল্প প্রথম স্থানে ছিল। এই শিল্প থেকে ১২শ থেকে ১৫শ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব অর্জিত হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সালের পর থেকে র্যাংঙ্কিং নামতে নামতে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে এখন বাংলাদেশের নামই নেই।
তারা আরও জানান, এই শিল্পের সঙ্গে জর্জরিত অধিকাংশ শিপ ইয়ার্ড ব্যবসায়ী ব্যাংকের ঋণখেলাপি হয়ে দেউলিয়া আবার অনেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। কারণ জাহাজ আমদানীতে এলসি করতে ব্যাংকের কঠিন শর্ত, বিশ্ব ব্যাংকের নানাভাবে চাপ সৃষ্টি, শ্রমিকদের উসকানি, সীতাকু- থেকে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড সরিয়ে ফেলাসহ নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে পুরাতন জাহাজের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় ব্যবসায়ীরা জাহাজ আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই পরিস্থিতির কারণে ইতোমধ্যে ছোট ব্যবসায়ীরা ঝরে পড়েছেন। তারা ইয়ার্ডগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিএ) সূত্রে জানা যায়, জাহাজভাঙা শিল্প ঘিরে সীতাকুণ্ডের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। একটি জাহাজ থেকে হাজারো পণ্য পাওয়া যায়। ইস্পাত খাতের কাঁচামাল থেকে শুরু করে সুঁই সবই মেলে এই খাতে। শিল্পের কাঁচামাল ও বাণিজ্যিক পণ্য ঘিরে এখানে অসংখ্য দোকান ও প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রপ্তানিও হচ্ছে জাহাজভাঙা শিল্পের নানা পণ্য।
প্রতি বছর সীতাকুণ্ডে ২০০ থেকে ২৫০টি জাহাজ ভাঙা হয়। এই শিল্প থেকে প্রায় ৩০ লাখ টন স্টিল রিসাইক্লিং করা হয়। দেশের ৪৫০ স্টিল রি-রোলিং মিলের মধ্যে ৮০ ভাগই ছোট আকারের এবং তাদের কাঁচামালের জন্য এই শিল্পের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।
শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের ব্যবসায়ীরা জানানা, এই শিল্পকে ধ্বংস করতে গত কয়েক বছর ধরে একটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। এই চক্রান্তের কারণে গত বছর শিপ ব্রেকিং ব্যবসার কার্যক্রম কয়েক মাস বন্ধ ছিল। এ ঘটনার পর বিভিন্ন ধরনের কঠিন শর্ত পূরণ করে যখন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো তে জাহাজ ভাঙা শুরু হয়, তখন চক্রটি অন্য একটি ইস্যু নিয়ে আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
জাহাজ ভাঙা শিল্প ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দেশের একমাত্র জাহাজ ভাঙা শিল্প প্রতিনিয়ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে। অথচ এ শিল্প আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ ও পরিবেশসন্মত। হংকং কনভেশনের আলোকে শিপ ইর্য়াডগুলো ক্রমান্বয়ে গ্রিন শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। সাতটি শিপ ইয়ার্ড ইতোমধ্যে গ্রিন ইয়ার্ড হিসেবে সনদ লাভ করেছে। তারপরও এ শিল্পকে নিয়ে নানা অপবাদ ও মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে যার কারণে পুরোনো জাহাজ আমদানি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমরা এ ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অবসান চাই।
বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রি-সাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সাবেক কার্যকরী সদস্য ও মাদার স্টিল লি.
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাস্টার আবুল কাশেম বলেন, অধিকাংশ শিপ ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত এক লাখ লোক বেকার হয়ে পড়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বর্তমানে মাত্র সাতটি শিপইয়ার্ডকে গ্রিন শিপ ইয়ার্ডে হিসাবে ঘোষনা দেয়া। প্রতিটি গ্রিন শিপইয়ার্ড করতে ১০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। সরকারিভাবে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা দিলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারবে।
শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং সি-শোর ইন্টারন্যাশনালের মালিক আলহাজ কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত এক দশকে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে চলছে জাহাজ ভাঙা শিল্প। এর মধ্যে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের কার্যক্রম। কখনও অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ, কখনও আন্তর্জাতিক বাজারে লোহার মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিপুল লোকসানের শিকার হয়েছেন মালিকরা। ব্যবসা বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। কিন্তু এলসির বিপরীতে ব্যাংক লোন পরিশোধ বন্ধ ছিল না। আয় বন্ধ কিন্তু ব্যয় চলমান থাকায় লোকসানে পড়েন মালিকরা।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) : জাহাজ কাটছেন শ্রমিকরা -সংবাদ
রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
বিশ্ব ব্যাংকের নানাভাবে চাপ সৃষ্টি, স্ক্র্যাপ জাহাজের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকট, পরিবেশ-মানবাধিকার সংগঠনের নামে মিকদের উসকানি, এলসি খুলতে ব্যাংকের কঠিন শর্ত, বিদেশি স্ক্র্যাপ জাহাজ বিক্রিতে অনীহা প্রকাশসহ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সমুদ্র উপকূল গড়ে উঠা দেশের একমাত্র শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। শিল্পটি বন্ধ হলে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে সরকার। পাশাপাশি এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দুই লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বেন।
বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রি-সাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) সূত্রে জানা যায়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বদৌলতে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। যেসব যাত্রীবাহী বা পণ্যবাহী জাহাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, জাহাজ মালিকরা সেগুলো উন্নয়শীল দেশ বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিক্রি করে দেয়। বিক্রির পর জাহাজ কাটার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে। তারই ধারাবাহিকতায় জাহাজ ভাঙা শিল্পকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ড উপকূলজুড়েই গড়ে উঠে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড।
সীতাকুণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ২০ কিলোমিটার উপকূলে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের সংখ্যা ১৮০টি হলেও বর্তমানে সচল রয়েছে মাত্র ২২টি। আর এই জাহাজ ভাঙা শিল্পে হাড়ভাঙ্গা খাঁটুনি খেটেই জীবন চালাচ্ছেন অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক। বর্তমানে ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল ৫০ শতাংশ যোগানদাতা এই শিপব্রেকিং ইয়ার্ড। এই ইস্পাত কারখানাগুলো শিপ ব্রেকিং লৌহজাত কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাবনাময় ইস্পাত খাত পড়েছে সংকটে।
শিপ ইয়ার্ডের মালিকরা জানান, বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা সম্ভাবনাময় জাহাজ ভাঙা শিল্পটি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগে দেশি-বিদেশি চক্র। তারা ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও সংস্থাও পরিবেশের দোহাই দিয়ে বিদোশি প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেছে। বাংলাদেশ ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জাহাজ ভাঙা শিল্প প্রথম স্থানে ছিল। এই শিল্প থেকে ১২শ থেকে ১৫শ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব অর্জিত হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সালের পর থেকে র্যাংঙ্কিং নামতে নামতে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে এখন বাংলাদেশের নামই নেই।
তারা আরও জানান, এই শিল্পের সঙ্গে জর্জরিত অধিকাংশ শিপ ইয়ার্ড ব্যবসায়ী ব্যাংকের ঋণখেলাপি হয়ে দেউলিয়া আবার অনেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন। কারণ জাহাজ আমদানীতে এলসি করতে ব্যাংকের কঠিন শর্ত, বিশ্ব ব্যাংকের নানাভাবে চাপ সৃষ্টি, শ্রমিকদের উসকানি, সীতাকু- থেকে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড সরিয়ে ফেলাসহ নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে পুরাতন জাহাজের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় ব্যবসায়ীরা জাহাজ আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এই পরিস্থিতির কারণে ইতোমধ্যে ছোট ব্যবসায়ীরা ঝরে পড়েছেন। তারা ইয়ার্ডগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিএ) সূত্রে জানা যায়, জাহাজভাঙা শিল্প ঘিরে সীতাকুণ্ডের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। একটি জাহাজ থেকে হাজারো পণ্য পাওয়া যায়। ইস্পাত খাতের কাঁচামাল থেকে শুরু করে সুঁই সবই মেলে এই খাতে। শিল্পের কাঁচামাল ও বাণিজ্যিক পণ্য ঘিরে এখানে অসংখ্য দোকান ও প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রপ্তানিও হচ্ছে জাহাজভাঙা শিল্পের নানা পণ্য।
প্রতি বছর সীতাকুণ্ডে ২০০ থেকে ২৫০টি জাহাজ ভাঙা হয়। এই শিল্প থেকে প্রায় ৩০ লাখ টন স্টিল রিসাইক্লিং করা হয়। দেশের ৪৫০ স্টিল রি-রোলিং মিলের মধ্যে ৮০ ভাগই ছোট আকারের এবং তাদের কাঁচামালের জন্য এই শিল্পের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।
শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের ব্যবসায়ীরা জানানা, এই শিল্পকে ধ্বংস করতে গত কয়েক বছর ধরে একটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। এই চক্রান্তের কারণে গত বছর শিপ ব্রেকিং ব্যবসার কার্যক্রম কয়েক মাস বন্ধ ছিল। এ ঘটনার পর বিভিন্ন ধরনের কঠিন শর্ত পূরণ করে যখন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো তে জাহাজ ভাঙা শুরু হয়, তখন চক্রটি অন্য একটি ইস্যু নিয়ে আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
জাহাজ ভাঙা শিল্প ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, দেশের একমাত্র জাহাজ ভাঙা শিল্প প্রতিনিয়ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে। অথচ এ শিল্প আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ ও পরিবেশসন্মত। হংকং কনভেশনের আলোকে শিপ ইর্য়াডগুলো ক্রমান্বয়ে গ্রিন শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। সাতটি শিপ ইয়ার্ড ইতোমধ্যে গ্রিন ইয়ার্ড হিসেবে সনদ লাভ করেছে। তারপরও এ শিল্পকে নিয়ে নানা অপবাদ ও মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে যার কারণে পুরোনো জাহাজ আমদানি বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমরা এ ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অবসান চাই।
বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রি-সাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সাবেক কার্যকরী সদস্য ও মাদার স্টিল লি.
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাস্টার আবুল কাশেম বলেন, অধিকাংশ শিপ ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত এক লাখ লোক বেকার হয়ে পড়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বর্তমানে মাত্র সাতটি শিপইয়ার্ডকে গ্রিন শিপ ইয়ার্ডে হিসাবে ঘোষনা দেয়া। প্রতিটি গ্রিন শিপইয়ার্ড করতে ১০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। সরকারিভাবে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা দিলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারবে।
শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং সি-শোর ইন্টারন্যাশনালের মালিক আলহাজ কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিগত এক দশকে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে চলছে জাহাজ ভাঙা শিল্প। এর মধ্যে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের কার্যক্রম। কখনও অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ, কখনও আন্তর্জাতিক বাজারে লোহার মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিপুল লোকসানের শিকার হয়েছেন মালিকরা। ব্যবসা বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। কিন্তু এলসির বিপরীতে ব্যাংক লোন পরিশোধ বন্ধ ছিল না। আয় বন্ধ কিন্তু ব্যয় চলমান থাকায় লোকসানে পড়েন মালিকরা।