alt

সারাদেশ

মেহেরপুরের ঘরে ঘরে গরুর খামার

প্রতিনিধি, মেহেরপুর : রোববার, ১১ মে ২০২৫

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যেমন গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মেহেরপুর জেলার গরুর খামারি ও গেরস্তরা। তেমনি গরুর বায়না দিতে গ্রাম চষে বেড়াচ্ছেন ব্যাপারীরা। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গেরস্তদের কাছে পছন্দের গরুটির বায়না দিচ্ছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় তুলবেন গরু। ততদিন পর্যন্ত গেরস্তের বাড়িতে রাখার সুযোগ পাবেন ব্যাপারীরা। তবে গেরস্তের দাবি, ব্যাপারীরা দাম হাঁকছেন কম আর ব্যাপারীরা বলছেন, পশু অনুযায়ী গেরস্তরা দাম চাচ্ছেন বেশি। তবে এবার ভারতীয় গরু আমদানীর শংকা নেই সবারই মনে। তাই কাক্সিক্ষত দাম পাবেন বলেও আশা করছেন গেরস্ত ও ব্যাপারীরা।

জেলার গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পশু পালনে বাড়তি মনোযোগী হয়েছেন খামারি ও গেরস্তরা। সর্বক্ষণ পশুকে পর্যবেক্ষণে রাখছেন। করছেন বাড়তি যতœ। গোসল দেয়া, কাঁচা ঘাস সংগ্রহ ও পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা যেন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসা দিচ্ছেন তারা। তবে গোখাদ্যের পাশাপাশি চিকিৎসা খরচ, ওষধ ও পালন ব্যয় আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিচ্ছেন বেপারীরা। তারা সুযোগ বুঝে বায়না করছেন। ঈদের কয়েকদিন আগে ঢাকার কোরবানির হাটে তুলবেন পশুগুলো। পশু পালনকারীরা জানান, অনেক কষ্ট করে সব কিছু বাড়তি দামে কিনে পশু পালন করছেন তারা। ন্যায্য মূল্য না পেলে অনেকেই পথে বসবেন।

গাংনীর হেমায়েতপুরের পশু পালনকারী আনারুল জানান, তিনি দুবছর ধরে একটি এঁড়ে গরু পালছেন। নেপালি জাতের এ গরুগুলো প্রতিটি গরু ৮৫ হাজার টাকা করে কিনেছেন। দুবছর অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন বাড়িতে এসে ব্যাপারীরা প্রতিটি গরুর দাম বলছেন দুই লাখ টাকা। এতে তেমন লাভ হচ্ছে না। তবে আরও একটু দাম বেশি হলে বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি।

বালিয়াঘাটের গৃহস্ত মোয়াজ্জেম জানান, তাদের তিন ভায়ের ১৫টি গরু আছে। গেল কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি করে বাছুর লালন পালন করছেন তারা। একেকটি বাছুর ৩৫ হাজার টাকা করে কিনে পালছেন। এখন ব্যাপারীরা একেকটি গরুর দাম বলছে দেড় লাখ টাকা। রাত দিন সমানে ব্যাপারীরা আসছেন। ব্যাপারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরুর অগ্রিম দাম দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে ঈদের আগ পর্যন্ত গরুর খাবারের দামও দিচ্ছেন তারা।

কুঞ্জনগরের গৃহবধূ ফজিলা জানান, তিনি গত কোরবানির পর ৬০ হাজার টাকা করে দুটি বাছুর গরু কেনেন। লালন পালনে খরচ গেছে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে তার প্রতিটি গরুর দাম উঠেছে দেড় লাখ টাকা। তিনি সরকারিভাবে তাদের মতো গরু পালনকারীদের জন্য প্রণোদনা দাবি করেন। একই কথা জানিয়েছেন সহগলপুরের গৃহবধূ হাবিবা। তিনি এবার সমিতি থেকে লোন নিয়ে তিনটি গরু পালছেন। এবার দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

গরুর ব্যাপারী সহড়াবাড়িয়ার শহীদুল ও চাঁদপুর গ্রামের রেজাউল জানান, গেল ঈদের সময় দেড় কোটি টাকার গরু বিক্রি করেছেন। এবারও তারা কয়েক কোটি টাকার গরু ঢাকাতে নিয়ে যাবেন। তারা জানান, অনেক সময় গেরস্তদের কিছু টাকা অগ্রিম দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়া হয়। বিক্রি শেষে টাকা পরিশোধ করা যায়। পরিচর্যার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। আবার সব গরু কেনাও যায় না। দেখে শুনে কিনতে হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করা গরু কিনছেন তিনি।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোত্তালিব আলী চলতি মৌসুমে ৩০হাজার ২৮০টি ষাঁড়, ২ হাজার ৫৮০টি বলদ, ৩৮৫টি মহিষ মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। নেপালি, অস্ট্রেলিয়ান, ফ্রিজিয়ান, হরিয়ানাসহ নানা জাতের গরু ছাড়াও দেশী জাতের গরু পালন করছেন গেরস্তরা। দরিদ্র কৃষকের বাড়িতেও দুয়েকটি করে গরু। সচ্ছলদের খামারগুলো গরুতে ভরা। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা। প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সজাগ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে দেড় লক্ষ কোরবানির পশু জেলার তিনটি উপজেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বড়বড় কোরবানির হাটে বিক্রয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হবে।

ছবি

আওয়ামী লীগ কার্যালয় দখলের ঘটনায় এনসিপি নেতাদের ভিন্নমত, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত শিগগির

ছবি

তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাঝে গরু বিতরণে অনিয়ম

রাজশাহীতে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে আত্মহত্যার সংখ্যা

ছবি

থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত একই পরিবারের তিন শিশু

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বিনোদনের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

রাণীনগরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার

ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

একসঙ্গে ছয় সন্তান জন্ম দিলেন গৃহবধূ

তুচ্ছ ঘটনায় দিনমজুরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

ছবি

প্রকাশ্যে বেল্ট দিয়ে নির্যাতন, মূল অভিযুক্ত জিহাদ গ্রেপ্তার

হবিগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ধানের গুদাম

ছবি

বীরগঞ্জে কৃষকের করলা, ঝিঙ্গা গাছ কেটে দিল দুর্বৃত্তরা

সীমান্ত সচেতনতা নিয়ে মতবিনিময়

ছবি

মাধবপুর সীমান্তে বিজিবির ২ স্তরের নিরাপত্তা বলয়

চান্দিনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

রাণীনগরে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশ্যে বেল্ট দিয়ে নির্যাতন, মূল অভিযুক্ত জিহাদ গ্রেপ্তার

ছবি

চাঁদপুরে বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি

কক্সবাজারে পাচারকারীর হাত থেকে ১৪ জন উদ্ধার

খাগড়াছড়িতে দুর্র্র্র্বল রবি এয়ারটেল নেটওয়ার্ক, সমস্যায় ভুগছে গ্রাহক

ছবি

কোরবানি উপলক্ষে দুমকিতে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা

ছাত্রদল নেতা হত্যার প্রধান আসামি কুষ্টিয়ায় গ্রেপ্তার

ছবি

রায়পুরে তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ খেটে-খাওয়া মানুষ

রাউজানে বসতঘর পুড়ে ছাই : অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি

প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বৃদ্ধার মৃত্যু

হবিগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনে ৪ জনের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ২

হাটহাজারীতে আম গাছ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু

হবিগঞ্জে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ছবি

সীতাকুণ্ডে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্ক্র্যাপবাহী পরিবহন, ঘটছে দুর্ঘটনা

ছবি

ডিমলায় ভুট্টার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে চাষিরা ক্ষুব্ধ

শেরপুরের ১৩৮৬ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার

ভৈরবে অবৈধ বালু উত্তোলন তিন ড্রেজার, এক নৌকা আটক

ছবি

সিরাজগঞ্জে দাবদাহে প্রাণিকুল অতিষ্ঠ-খামারিরা বিপাকে

ছবি

ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ছয় মাসে ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০০ টন চাল আমদানি

ভৈরবে ৩ প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ভ্রাম্যমাণ আদালতের

নদীর পাড়ে রক্তাক্ত অজ্ঞাত মরদেহ

tab

সারাদেশ

মেহেরপুরের ঘরে ঘরে গরুর খামার

প্রতিনিধি, মেহেরপুর

রোববার, ১১ মে ২০২৫

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে যেমন গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মেহেরপুর জেলার গরুর খামারি ও গেরস্তরা। তেমনি গরুর বায়না দিতে গ্রাম চষে বেড়াচ্ছেন ব্যাপারীরা। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গেরস্তদের কাছে পছন্দের গরুটির বায়না দিচ্ছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় তুলবেন গরু। ততদিন পর্যন্ত গেরস্তের বাড়িতে রাখার সুযোগ পাবেন ব্যাপারীরা। তবে গেরস্তের দাবি, ব্যাপারীরা দাম হাঁকছেন কম আর ব্যাপারীরা বলছেন, পশু অনুযায়ী গেরস্তরা দাম চাচ্ছেন বেশি। তবে এবার ভারতীয় গরু আমদানীর শংকা নেই সবারই মনে। তাই কাক্সিক্ষত দাম পাবেন বলেও আশা করছেন গেরস্ত ও ব্যাপারীরা।

জেলার গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পশু পালনে বাড়তি মনোযোগী হয়েছেন খামারি ও গেরস্তরা। সর্বক্ষণ পশুকে পর্যবেক্ষণে রাখছেন। করছেন বাড়তি যতœ। গোসল দেয়া, কাঁচা ঘাস সংগ্রহ ও পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা যেন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসা দিচ্ছেন তারা। তবে গোখাদ্যের পাশাপাশি চিকিৎসা খরচ, ওষধ ও পালন ব্যয় আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিচ্ছেন বেপারীরা। তারা সুযোগ বুঝে বায়না করছেন। ঈদের কয়েকদিন আগে ঢাকার কোরবানির হাটে তুলবেন পশুগুলো। পশু পালনকারীরা জানান, অনেক কষ্ট করে সব কিছু বাড়তি দামে কিনে পশু পালন করছেন তারা। ন্যায্য মূল্য না পেলে অনেকেই পথে বসবেন।

গাংনীর হেমায়েতপুরের পশু পালনকারী আনারুল জানান, তিনি দুবছর ধরে একটি এঁড়ে গরু পালছেন। নেপালি জাতের এ গরুগুলো প্রতিটি গরু ৮৫ হাজার টাকা করে কিনেছেন। দুবছর অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন বাড়িতে এসে ব্যাপারীরা প্রতিটি গরুর দাম বলছেন দুই লাখ টাকা। এতে তেমন লাভ হচ্ছে না। তবে আরও একটু দাম বেশি হলে বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি।

বালিয়াঘাটের গৃহস্ত মোয়াজ্জেম জানান, তাদের তিন ভায়ের ১৫টি গরু আছে। গেল কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি করে বাছুর লালন পালন করছেন তারা। একেকটি বাছুর ৩৫ হাজার টাকা করে কিনে পালছেন। এখন ব্যাপারীরা একেকটি গরুর দাম বলছে দেড় লাখ টাকা। রাত দিন সমানে ব্যাপারীরা আসছেন। ব্যাপারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরুর অগ্রিম দাম দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে ঈদের আগ পর্যন্ত গরুর খাবারের দামও দিচ্ছেন তারা।

কুঞ্জনগরের গৃহবধূ ফজিলা জানান, তিনি গত কোরবানির পর ৬০ হাজার টাকা করে দুটি বাছুর গরু কেনেন। লালন পালনে খরচ গেছে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে তার প্রতিটি গরুর দাম উঠেছে দেড় লাখ টাকা। তিনি সরকারিভাবে তাদের মতো গরু পালনকারীদের জন্য প্রণোদনা দাবি করেন। একই কথা জানিয়েছেন সহগলপুরের গৃহবধূ হাবিবা। তিনি এবার সমিতি থেকে লোন নিয়ে তিনটি গরু পালছেন। এবার দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

গরুর ব্যাপারী সহড়াবাড়িয়ার শহীদুল ও চাঁদপুর গ্রামের রেজাউল জানান, গেল ঈদের সময় দেড় কোটি টাকার গরু বিক্রি করেছেন। এবারও তারা কয়েক কোটি টাকার গরু ঢাকাতে নিয়ে যাবেন। তারা জানান, অনেক সময় গেরস্তদের কিছু টাকা অগ্রিম দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়া হয়। বিক্রি শেষে টাকা পরিশোধ করা যায়। পরিচর্যার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। আবার সব গরু কেনাও যায় না। দেখে শুনে কিনতে হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করা গরু কিনছেন তিনি।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোত্তালিব আলী চলতি মৌসুমে ৩০হাজার ২৮০টি ষাঁড়, ২ হাজার ৫৮০টি বলদ, ৩৮৫টি মহিষ মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। নেপালি, অস্ট্রেলিয়ান, ফ্রিজিয়ান, হরিয়ানাসহ নানা জাতের গরু ছাড়াও দেশী জাতের গরু পালন করছেন গেরস্তরা। দরিদ্র কৃষকের বাড়িতেও দুয়েকটি করে গরু। সচ্ছলদের খামারগুলো গরুতে ভরা। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা। প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সজাগ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে দেড় লক্ষ কোরবানির পশু জেলার তিনটি উপজেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বড়বড় কোরবানির হাটে বিক্রয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হবে।

back to top