বৈশাখের তীব্র তাপদহে দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্ট এবং ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বৈশাখের তীব্র গরমের কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। অপরদিকে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে ভর্তি রোগীসহ বহির বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক এবং নার্সদেরকে। গত ১৫ দিনে ৭০ তেকে ৮০ জন রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে। ডায়রিয়া রোগীদের স্যালাইন, সঠিক চিকিৎসা এবং পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকসহ নার্সরা। সরেজমিনে গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) সকালে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সব বেডেই রোগী ভর্তি হয়ে আছেন। এছাড়াও গরমে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫০ শ্যযার এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৬০ জন রোগী। বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অনেক রোগীরা। অপরদিকে, গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মোতাবেক বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন বয়সের ৩৪৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১১০ জন, নারী ১৭৩ জন এবং শিশু ৬৩ জন। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে, গত ১২ মে (সোমবার) হাসপাতালে নতুন ভর্তিসহ মোট ৬০ জন ভর্তি ছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়েছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে ভর্তি হয়ে থাকা রোগী হাসনা বেগম বলেন, গত ২ দিন আগে হঠাৎ করে আমার ছেলের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বেড না থাকায় মেঝেতে বেড তৈরি করে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন বর্তমানে অনেকটা সুস্থ। অপর আরেকজন রোগী বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে ইরি ধান কাটা মারায় এর কাজ করছি। হঠাৎ বৃহস্পতিবার(১৫-০৫-২০২৫) থেকে আমার পেটের ব্যাথা ও পাতলা পায়খানা। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে স্যালাইন ও চিকিৎসা নেওয়ার পরে বর্তমানে একটু সুস্থ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হওয়া এক শিশুর অভিভাবক বলেন, গত ২-৩ আগে আমার এবং আমার বাচ্চার শ্বাসকষ্ট সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করার পর বর্তমানে আমরা দুই জনই সুস্থ আছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্স মাহফুজা খাতুন জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ জন করে ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে। কিন্তু গত কয়েকদিনে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রতিদিন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৮ থেকে ১০ জন করে রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশু এবং বয়স্করা রয়েছেন। হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং বৈশাখের তীব্র গরমের কারণে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ৭০ থেকে ৮০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর হিলি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে হাসপাতালে বেশ কিছুদিন থেকে ডায়রিয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তন এবং তীব্র গরমের কারণে মা, শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া রোগে ভুগছে বলে মনে করছি। তবে আমাদের হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকায় এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কনসাল্টেন্ট, সার্জন এবং মেডিকেল অফিসারসহ মোট ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২ জন। ফলে ভর্তি এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদেরকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। বেশ কিছুদিন থেকে মাষ্টার রোলে কিছু নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। ইতোমধ্যে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। চাহিদা মোতাবেক চিকিৎসক পেলে সেবার মান আরও বেড়ে যাবে। আবার পর্যাপ্ত পরিমাণে বেড না থাকায় অনেক সময় রোগীরা মেঝেতে বেড করে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। অনেক রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, এই গরমে ভাজা পোড়া খাবার কম খেতে হবে। খাবারের আগে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধৌত করতে হবে এবং অবশিষ্ট খাবার ভালো ভাবে ঢেকে রাখতে হবে। তীব্র গরমে বেশি বেশি পানি ও খাবার স্যালাইন খেতে হবে। সেই সাথে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে এসে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
বৈশাখের তীব্র তাপদহে দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্ট এবং ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বৈশাখের তীব্র গরমের কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। অপরদিকে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে ভর্তি রোগীসহ বহির বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক এবং নার্সদেরকে। গত ১৫ দিনে ৭০ তেকে ৮০ জন রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে। ডায়রিয়া রোগীদের স্যালাইন, সঠিক চিকিৎসা এবং পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকসহ নার্সরা। সরেজমিনে গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) সকালে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সব বেডেই রোগী ভর্তি হয়ে আছেন। এছাড়াও গরমে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫০ শ্যযার এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৬০ জন রোগী। বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অনেক রোগীরা। অপরদিকে, গত ১৩ মে (মঙ্গলবার) হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মোতাবেক বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন বয়সের ৩৪৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১১০ জন, নারী ১৭৩ জন এবং শিশু ৬৩ জন। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে, গত ১২ মে (সোমবার) হাসপাতালে নতুন ভর্তিসহ মোট ৬০ জন ভর্তি ছিলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়েছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেতে ভর্তি হয়ে থাকা রোগী হাসনা বেগম বলেন, গত ২ দিন আগে হঠাৎ করে আমার ছেলের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বেড না থাকায় মেঝেতে বেড তৈরি করে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন বর্তমানে অনেকটা সুস্থ। অপর আরেকজন রোগী বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে ইরি ধান কাটা মারায় এর কাজ করছি। হঠাৎ বৃহস্পতিবার(১৫-০৫-২০২৫) থেকে আমার পেটের ব্যাথা ও পাতলা পায়খানা। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে স্যালাইন ও চিকিৎসা নেওয়ার পরে বর্তমানে একটু সুস্থ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হওয়া এক শিশুর অভিভাবক বলেন, গত ২-৩ আগে আমার এবং আমার বাচ্চার শ্বাসকষ্ট সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করার পর বর্তমানে আমরা দুই জনই সুস্থ আছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্স মাহফুজা খাতুন জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ জন করে ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে। কিন্তু গত কয়েকদিনে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রতিদিন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৮ থেকে ১০ জন করে রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশু এবং বয়স্করা রয়েছেন। হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং বৈশাখের তীব্র গরমের কারণে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ৭০ থেকে ৮০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর হিলি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে হাসপাতালে বেশ কিছুদিন থেকে ডায়রিয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তন এবং তীব্র গরমের কারণে মা, শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া রোগে ভুগছে বলে মনে করছি। তবে আমাদের হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকায় এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কনসাল্টেন্ট, সার্জন এবং মেডিকেল অফিসারসহ মোট ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২ জন। ফলে ভর্তি এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদেরকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। বেশ কিছুদিন থেকে মাষ্টার রোলে কিছু নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। ইতোমধ্যে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। চাহিদা মোতাবেক চিকিৎসক পেলে সেবার মান আরও বেড়ে যাবে। আবার পর্যাপ্ত পরিমাণে বেড না থাকায় অনেক সময় রোগীরা মেঝেতে বেড করে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। অনেক রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, এই গরমে ভাজা পোড়া খাবার কম খেতে হবে। খাবারের আগে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধৌত করতে হবে এবং অবশিষ্ট খাবার ভালো ভাবে ঢেকে রাখতে হবে। তীব্র গরমে বেশি বেশি পানি ও খাবার স্যালাইন খেতে হবে। সেই সাথে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে এসে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।