ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার ১৫নং বাহেংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ধুকে ধুকে। গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির অবস্থা এখন অতি করুণ। কাগজে কলমে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৪৩ জন থাকলেও বাস্তবে আছে ৫০/৬০ জন। তাও আবার গড় হাজির বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। নিয়মিত প্রধান শিক্ষক নেই প্রায় ১৫বছর ধরে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষাদানে মনোযোগি না হওয়াসহ বিস্তর অভিযোগ এলাকাবাসীর। এক সময়ের জাঁকজমকপূর্ণ বিদ্যালয়টির করুণ অবস্থা থেকে উত্তোরণের প্রচেষ্টায় এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকসহ ১৭৫ জন স্বাক্ষর করে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, বাহেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মুক্তাগাছা ও জামালপুর জেলা সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। এক সময় বিদ্যালয়টি খুবই জাঁকজমকভাবে পরিচালিত হতো। এখান থেকে পাঠ নিয়ে উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিন যাবৎ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাই। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ বছর যাবৎ একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তার দায়িত্ব পালনের চাইতে এলাকায় দেন-দরবার নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। মোট পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে ৩ জনের বাড়ি স্থানীয় এলাকায় হওয়ায় তারা নিজের ইচ্ছে মতো চলেন। বিদ্যালয়ে ক্লাস করানোর জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ নাই। পুরাতন বিল্ডিং পরিত্যক্ত দেখিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একটি পুরনো বিল্ডিং ও একটি টিন সেট ঘরে ক্লাস করানো হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এলাকারবাসীর অভিযোগ তিনি ক্লাস না করিয়ে দোকানে বসে আড্ডা দিয়ে থাকেন। নিজ এলাকায় দীর্ঘদিন চাকুরি করায় তিনি নিজেকে যাচ্ছেতাই মনে করে চলেন। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে স্কুলে দপ্তরি নিয়োগ করার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ক্লাস না নিয়ে চায়ের দোকান ঘরে বসে আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন বেশি সময়, স্কুলে সময় মতো আসেন না। নিজের স্বার্থরক্ষায় তিনি স্কুলের মাঠের জমি ছেড়ে দিয়েছেন এতে স্কুল তথা সরকারিভাবে ক্ষতি সম্মুখীন। অত্র স্কুলের ১৫ বছর যাবৎ আধিপত্য ও এলাকার প্রভাব বিস্তার করে রেখেছেন। তার অনিয়মের জন্য তাকে পূর্বে একবার শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল। প্রভাব খাটিয়ে ৩ দিনের মাথায় পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে আসেন। তার সাথে এলাকার সাধারণ মানুষসহ ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের সম্পর্কে ভালো না। এছাড়া স্কুলের পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে কোনো সহযোগিতা করেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমান। ছাত্র ও অভিভাবকদের সচেতন করতে স্কুলে কোনো মা সমাবেশ বা অভিভাবক সমাবেশ করনেনি কখনো।
এলাকার সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন, স্থানীয় রফিকুল ইসলাম, চাঁনমিয়া, মো. গিয়াস উদ্দিনসহ প্রায় ১৫/২০ জন স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বললে তারা জানান স্থানীয় শিক্ষকরা এলাকার কোনো মোটিভেশনাল কাজ করেন না, ছাত্র-ছাত্রীরা আসবে কীভাবে। শিক্ষকরা স্কুল ছেড়ে চায়ের দোকানে আড্ডা দেন। নিয়মিত শিক্ষকদের স্কুলে উপস্থিতি ও লেখাপড়া করার মতো মনমানসিকতা নাই। যদি থাকতো তাহলে সুন্দর ও পরিছন্ন বিদ্যালয়টি এমন অরক্ষিত থাকতো না। এলাকাবাসীর দাবী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় শিক্ষকদের বদলীর ব্যবস্থা করে নতুনভাবে শিক্ষক আসলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে এবং অভিভাবকরা তাদের ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে পাঠাবে। মূলত এলাকাবাসীর ক্ষোভ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের প্রতি। তার প্রতি এলাকাবাসীর বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী তার বদলী এবং তদন্ত পূর্বক শাস্তির দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে আসতে চায় না। তারা মাদরাসায় চলে যাচ্ছে। আমাদের কিছুই করার নাই। আমার পঞ্চম শ্রেণিতে দুইজন ছাত্রী একজন আসে না, অন্যজন একা হয়ে গেছে। সেও আসতে চায় না। আমি কি করতে পারি।
সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার ১৫নং বাহেংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ধুকে ধুকে। গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির অবস্থা এখন অতি করুণ। কাগজে কলমে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৪৩ জন থাকলেও বাস্তবে আছে ৫০/৬০ জন। তাও আবার গড় হাজির বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। নিয়মিত প্রধান শিক্ষক নেই প্রায় ১৫বছর ধরে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষাদানে মনোযোগি না হওয়াসহ বিস্তর অভিযোগ এলাকাবাসীর। এক সময়ের জাঁকজমকপূর্ণ বিদ্যালয়টির করুণ অবস্থা থেকে উত্তোরণের প্রচেষ্টায় এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকসহ ১৭৫ জন স্বাক্ষর করে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, বাহেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি মুক্তাগাছা ও জামালপুর জেলা সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। এক সময় বিদ্যালয়টি খুবই জাঁকজমকভাবে পরিচালিত হতো। এখান থেকে পাঠ নিয়ে উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিন যাবৎ স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাই। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ বছর যাবৎ একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তার দায়িত্ব পালনের চাইতে এলাকায় দেন-দরবার নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। মোট পাঁচজন শিক্ষকের মধ্যে ৩ জনের বাড়ি স্থানীয় এলাকায় হওয়ায় তারা নিজের ইচ্ছে মতো চলেন। বিদ্যালয়ে ক্লাস করানোর জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ নাই। পুরাতন বিল্ডিং পরিত্যক্ত দেখিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একটি পুরনো বিল্ডিং ও একটি টিন সেট ঘরে ক্লাস করানো হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এলাকারবাসীর অভিযোগ তিনি ক্লাস না করিয়ে দোকানে বসে আড্ডা দিয়ে থাকেন। নিজ এলাকায় দীর্ঘদিন চাকুরি করায় তিনি নিজেকে যাচ্ছেতাই মনে করে চলেন। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে স্কুলে দপ্তরি নিয়োগ করার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ক্লাস না নিয়ে চায়ের দোকান ঘরে বসে আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন বেশি সময়, স্কুলে সময় মতো আসেন না। নিজের স্বার্থরক্ষায় তিনি স্কুলের মাঠের জমি ছেড়ে দিয়েছেন এতে স্কুল তথা সরকারিভাবে ক্ষতি সম্মুখীন। অত্র স্কুলের ১৫ বছর যাবৎ আধিপত্য ও এলাকার প্রভাব বিস্তার করে রেখেছেন। তার অনিয়মের জন্য তাকে পূর্বে একবার শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল। প্রভাব খাটিয়ে ৩ দিনের মাথায় পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে আসেন। তার সাথে এলাকার সাধারণ মানুষসহ ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের সম্পর্কে ভালো না। এছাড়া স্কুলের পূর্নমিলনী অনুষ্ঠানে কোনো সহযোগিতা করেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমান। ছাত্র ও অভিভাবকদের সচেতন করতে স্কুলে কোনো মা সমাবেশ বা অভিভাবক সমাবেশ করনেনি কখনো।
এলাকার সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন, স্থানীয় রফিকুল ইসলাম, চাঁনমিয়া, মো. গিয়াস উদ্দিনসহ প্রায় ১৫/২০ জন স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বললে তারা জানান স্থানীয় শিক্ষকরা এলাকার কোনো মোটিভেশনাল কাজ করেন না, ছাত্র-ছাত্রীরা আসবে কীভাবে। শিক্ষকরা স্কুল ছেড়ে চায়ের দোকানে আড্ডা দেন। নিয়মিত শিক্ষকদের স্কুলে উপস্থিতি ও লেখাপড়া করার মতো মনমানসিকতা নাই। যদি থাকতো তাহলে সুন্দর ও পরিছন্ন বিদ্যালয়টি এমন অরক্ষিত থাকতো না। এলাকাবাসীর দাবী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ স্থানীয় শিক্ষকদের বদলীর ব্যবস্থা করে নতুনভাবে শিক্ষক আসলে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে এবং অভিভাবকরা তাদের ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে পাঠাবে। মূলত এলাকাবাসীর ক্ষোভ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের প্রতি। তার প্রতি এলাকাবাসীর বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী তার বদলী এবং তদন্ত পূর্বক শাস্তির দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাকফিজুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে আসতে চায় না। তারা মাদরাসায় চলে যাচ্ছে। আমাদের কিছুই করার নাই। আমার পঞ্চম শ্রেণিতে দুইজন ছাত্রী একজন আসে না, অন্যজন একা হয়ে গেছে। সেও আসতে চায় না। আমি কি করতে পারি।