alt

চা-বাগানে গোলমরিচ চাষের নতুন সম্ভাবনা

প্রতিনিধি শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চায়ের স্বর্গরাজ্য মৌলভীবাজার জেলার বিস্তীর্ণ চা-বাগান শুধু চা উৎপাদনেই নয়, ধীরে ধীরে বহুমুখী কৃষি উদ্যোগের ক্ষেত্রেও পরিচিত হয়ে ওঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন চা-বাগানে চায়ের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে গোলমরিচ চাষ শুরু হয়েছে। পাহাড়ি উঁচু-নিচু জমি, উর্বর মাটি এবং আর্দ্র আবহাওয়া গোলমরিচ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় স্থানীয়ভাবে এ নিয়ে আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে।

গোলমরিচ একটি লতানো উদ্ভিদ, যা সাধারণত বড় গাছকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। চা-বাগানের ছায়াদানকারী গাছগুলো এ জন্য আদর্শ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারণত আগস্ট মাস থেকে গাছে ফল ধরতে শুরু করে এবং কয়েক মাসের মধ্যে তা সংগ্রহযোগ্য হয়। ফেব্রুয়ারির দিকে ফল পরিপূর্ণভাবে পাকে। প্রতিটি পূর্ণবয়স্ক লতা থেকে গড়ে চার থেকে পাঁচ কেজি গোলমরিচ পাওয়া যায়। সংগ্রহের পর ফলগুলো ফুটন্ত পানিতে সেদ্ধ করে শুকাতে হয়। এক সপ্তাহ রোদে শুকানোর পর বাজারজাতের উপযোগী হয় কালো বা সাদা গোলমরিচ।

জেলার শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, কমলগঞ্জ এবং বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানে সীমিত আকারে গোলমরিচ চাষ হচ্ছে। চা-বাগানের বাংলো এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এই মসলার চাষ হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে প্রদর্শনী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার ফলে চাষের প্রতি নতুন করে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন চা-বাগান ও গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে গোলমরিচ চাষ করা হচ্ছে। গোলমরিচ দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মসলা। রান্নায় স্বাদ ও ঘ্রাণ বৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য। বর্তমানে দেশের চাহিদার প্রায় পুরো অংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি হলে তা শুধু আমদানি নির্ভরতা কমাবে না, বরং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়েও সহায়ক হবে।

বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি কালো গোলমরিচের দাম প্রায় ১,২০০ টাকা এবং সাদা গোলমরিচের দাম প্রায় ১,৬০০ টাকা। অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা সাথি ফসল হিসেবে এর চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছেন। চা-বাগানের অবকাঠামো গোলমরিচ চাষের জন্য উপযোগী। বাগানের ছায়া প্রদানকারী গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবে লতাগাছের আশ্রয় হিসেবে কাজ করছে। ফলে অতিরিক্ত জমি বা অবকাঠামো ছাড়াই সহজে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ মনে করছে, পাহাড়ি এলাকার মাটি ও মৌলভীবাজারের জলবায়ু এই মসলাজাতীয় ফসলের জন্য আদর্শ। সঠিক পরিকল্পনা ও কৃষি সম্প্রসারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে গোলমরিচ চাষকে বাণিজ্যিকভাবে প্রসারিত করা সম্ভব। এতে জেলার কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। মৌলভীবাজারে গোলমরিচ চাষ সেই বহুমুখীকরণের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। এটি কেবল অতিরিক্ত আয়ের উৎস নয়, বরং দেশের মসলা উৎপাদন ও স্বনির্ভরতার পথকেও শক্তিশালী করতে পারে। স্থানীয়রা মনে করেন,সঠিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া গেলে মৌলভীবাজারের চা-বাগানগুলোতে গোলমরিচ চাষ আগামী দিনে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারে।

ছবি

নেত্রকোনার খালিয়াজুরিতে পীরের আস্তানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

ছবি

মুকসুদপুরে দীর্ঘ ৯০ বছর পর থানার বেদখল জমি উদ্ধার

ছবি

ডেঙ্গু: আরও ৬৬৪ জন হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যু ১

ছবি

ভোটাভুটিতে সিপিবি’র ৪৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি

ছবি

টঙ্গিতে দগ্ধ হওয়া ফায়ার ফাইটার শামীম হার মানলেন মৃত্যুর কাছে

ছবি

সাতশ’ মণ্ডপ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বললো সনাতনী জোট, সিসি ক্যামেরার পরামর্শ ধর্ম উপদেষ্টার

ছবি

মহাখালীতে পেট্রোল পাম্পে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৭

ছবি

শরণখোলায় বিরল সুন্ধি কচ্ছপ উদ্ধার

শরণখোলায় বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক,২ দিনে কুকুরের কামড়ে আহত ১৪ শিশু,হাসপাতালে নেই ভ্যাকসিন

ছবি

রংপুরের হারাটি উচ্চবিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় ৫০ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

ছবি

আলোচনা সভায় বক্তারা, ব্যক্তিগত গাড়ি কমাতে মানসম্পন্ন গণপরিবহন বাড়াতে হবে

ছবি

গোয়ালন্দে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

ছবি

গজারিয়ায় বাস-ট্রলির সংঘর্ষে নিহত ১

ছবি

নিখোঁজের ৩ দিন পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

তারাগঞ্জে মাংস ব্যবসায়ী-প্রশাসনের আলোচনা

ছবি

কালীগঞ্জকে ‘জঙ্গল’ বলায় মুফতি নাসিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

ছবি

একই রশিতে স্বামী ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর আত্মহত্যা

ছবি

পুঠিয়ায় সারের কৃত্রিম সংকট, কৃষকের হাহাকার

ছবি

সিংগাইরে কর্মস্থলে থাকেন না আবাসিক মেডিকেল অফিসার

ছবি

রেশম প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

দোহারে জব্দ করা তিনটি ড্রেজার পুড়িয়ে ধ্বংস

ছবি

ওএমএসের চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

হরিণের দেখা মিলেছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে

ছবি

প্রশিক্ষণের গাড়ি পানিতে ডুবে নিহত ১

ছবি

দেবহাটার দুর্গাপূজার আগে রাস্তা সংস্কারের দাবি

ছবি

প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণের দায়ে বৃদ্ধের যাবজ্জীবন

ছবি

দশমিনায় রাসায়নিকের ব্যবহারে শাপলা এখন অস্তিত্ব সংকটে

ছবি

ওমানে ছাদ থেকে পড়ে চুনারুঘাটের যুবকের মৃত্যু

ছবি

নোয়াখালীতে পানিতে ডুবে একদিনে তিন শিশুর মৃত্য

ছবি

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে চা দোকানীর মৃত্যু

ছবি

শার্শায় পেট্রলপাম্প দখলের চেষ্টা বিএনপির নেতা বহিষ্কার

ছবি

দামুড়হুদায় ওএমএসের বিক্রয় কেন্দ্রে আটার পরিমান বৃদ্ধির দাবি

ছবি

চান্দিনা উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান

ছবি

আবারো পদ্মায় ভাঙন, ছোট হয়ে যাচ্ছে লৌহজংয়ের মানচিত্র

ছবি

কীটনাশক প্রয়োগে নষ্ট হচ্ছে মাটির উর্বরতা

ছবি

কোটচাঁদপুরে নকল পোল্ট্রি ফিডের ব্যবসা জমজমাট

tab

চা-বাগানে গোলমরিচ চাষের নতুন সম্ভাবনা

প্রতিনিধি শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চায়ের স্বর্গরাজ্য মৌলভীবাজার জেলার বিস্তীর্ণ চা-বাগান শুধু চা উৎপাদনেই নয়, ধীরে ধীরে বহুমুখী কৃষি উদ্যোগের ক্ষেত্রেও পরিচিত হয়ে ওঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন চা-বাগানে চায়ের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে গোলমরিচ চাষ শুরু হয়েছে। পাহাড়ি উঁচু-নিচু জমি, উর্বর মাটি এবং আর্দ্র আবহাওয়া গোলমরিচ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় স্থানীয়ভাবে এ নিয়ে আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে।

গোলমরিচ একটি লতানো উদ্ভিদ, যা সাধারণত বড় গাছকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। চা-বাগানের ছায়াদানকারী গাছগুলো এ জন্য আদর্শ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারণত আগস্ট মাস থেকে গাছে ফল ধরতে শুরু করে এবং কয়েক মাসের মধ্যে তা সংগ্রহযোগ্য হয়। ফেব্রুয়ারির দিকে ফল পরিপূর্ণভাবে পাকে। প্রতিটি পূর্ণবয়স্ক লতা থেকে গড়ে চার থেকে পাঁচ কেজি গোলমরিচ পাওয়া যায়। সংগ্রহের পর ফলগুলো ফুটন্ত পানিতে সেদ্ধ করে শুকাতে হয়। এক সপ্তাহ রোদে শুকানোর পর বাজারজাতের উপযোগী হয় কালো বা সাদা গোলমরিচ।

জেলার শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, কমলগঞ্জ এবং বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানে সীমিত আকারে গোলমরিচ চাষ হচ্ছে। চা-বাগানের বাংলো এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এই মসলার চাষ হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে প্রদর্শনী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার ফলে চাষের প্রতি নতুন করে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন চা-বাগান ও গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে গোলমরিচ চাষ করা হচ্ছে। গোলমরিচ দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মসলা। রান্নায় স্বাদ ও ঘ্রাণ বৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য। বর্তমানে দেশের চাহিদার প্রায় পুরো অংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি হলে তা শুধু আমদানি নির্ভরতা কমাবে না, বরং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়েও সহায়ক হবে।

বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি কালো গোলমরিচের দাম প্রায় ১,২০০ টাকা এবং সাদা গোলমরিচের দাম প্রায় ১,৬০০ টাকা। অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা সাথি ফসল হিসেবে এর চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছেন। চা-বাগানের অবকাঠামো গোলমরিচ চাষের জন্য উপযোগী। বাগানের ছায়া প্রদানকারী গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবে লতাগাছের আশ্রয় হিসেবে কাজ করছে। ফলে অতিরিক্ত জমি বা অবকাঠামো ছাড়াই সহজে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ মনে করছে, পাহাড়ি এলাকার মাটি ও মৌলভীবাজারের জলবায়ু এই মসলাজাতীয় ফসলের জন্য আদর্শ। সঠিক পরিকল্পনা ও কৃষি সম্প্রসারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে গোলমরিচ চাষকে বাণিজ্যিকভাবে প্রসারিত করা সম্ভব। এতে জেলার কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। মৌলভীবাজারে গোলমরিচ চাষ সেই বহুমুখীকরণের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। এটি কেবল অতিরিক্ত আয়ের উৎস নয়, বরং দেশের মসলা উৎপাদন ও স্বনির্ভরতার পথকেও শক্তিশালী করতে পারে। স্থানীয়রা মনে করেন,সঠিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া গেলে মৌলভীবাজারের চা-বাগানগুলোতে গোলমরিচ চাষ আগামী দিনে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারে।

back to top