রায়পুরা (নরসিংদী) : ওএমএসের কার্ডধারীরা চাল না পেয়ে হতাশ -সংবাদ
নরসিংদী রায়পুরায় খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি (ওএমএস) এর চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগ রয়েছে সেখানকার ডিলার দুলালের কাছে কার্ডধারী ক্রেতারা চাল চাইলে তিনি নানা অযুহাতে ক্রেতাদের চাল দিতে অস্বীকার করেন। ফলে চাল না নিয়েই বাড়িতে চলে আসে ক্রেতারা।
এ ঘটনার পর গত রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট হতদরিদ্রদের চাল আত্মসাৎ এবং কেন্দ্র অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের ৩ নং ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন।
চাঁনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে ঘটনা সত্যতা নিশ্চিতে মাঝেরচর গ্রামে সাংবাদিকরা গেলে ভিড় করে ভুক্তভোগীরা।
জিয়াসমিন বেগম নামে এক নারী জানান, গত বছরের ৫ তারিখের আগে আমি চাল পেতাম। গত মাসে শুনছি চাল আসছে চাল দিবে সেজন্য মাঝেরচর থেকে কালিকাপুর যাই। কিন্তু সেখানে গেলে আমাকে তারা চাল দেয় না। আমার আইডি কার্ডে নাকি সমস্যা। আরো কি কি সব বলে। আমি চাল দিতে অনেক সুপারিশ করি কিন্তু দেয় না।
কারিমা নামে একজন জানান, আগে আমরা চাল পেতাম কিন্তু এখন পাই না। চাল নিতে গেলে নানা তাল বাহানা করে।
জিয়াসমিন ও কারিমার মতো ওই গ্রামে এমন আরো প্রায় ১০-১৫ জন নারী গত মাসে ওএমএস এর চাল না পাওয়ার অভিযোগ জানান।
চাঁনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাফিউদ্দিন জানান, মাঝেরচর থেকে কালিকাপুর যাতায়াতে একজন ব্যক্তির প্রায় ১০০ টাকা করে খরচ হয়। তারা গরীব মানুষ সেজন্য তো তারা ১৫টাকা কেজি দরে চাল খাচ্ছে। তার উপর যদি তাদের আরো অতিরিক্ত ১০০ টাকা খরচ হয় সেটা তাদের জন্য জুলুম। গরীব মানুষেরা টাকা খরচ করেও চাল পায়নি এটা অতন্ত দুঃখজনক। তাছাড়া মাঝেরচর ৩নং ওয়ার্ডে তো কেন্দ্র রয়েছে। তারা সেখানে চাল গুলো বিতরণ করলেই তো কাজ শেষ হয়ে যায়।
চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর গ্রামের ৩নং ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি গত ১৫ দিনে ওএমএস এর ডিলারের বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। তারা কার্ড থাকা শর্তেও ক্রেতাদের চাল দেয়নি। চাল দেওয়ার আগে দফায় দফায় ডিলার দুলাল ও তার সহযোগী রায়পুরা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগরের সাথে কথা হয়েছে। তারা আমার আমাকে নির্ধারিত স্থানে চাল দেওয়ার প্রতিশ্র্যুতি দিয়েছিলো কিন্তু তারা কথা রাখেনি। তারা কালিকাপুরে চাল বিতরণ করেছে। এখন আমার কথা হলো যাদের কার্ড থাকার পরও চাল পায়নি সে চাল গুলো কোথায়..! সে চাল কি ডিলার গোডাউনে জমা দিয়েছে কিনা সেটা প্রশাসনের খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। তবে আমি যতদূর খোঁজ নিয়ে দেখেছি চাল সে গোডাউনে জমা দেয়নি। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডিলার দুলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করে নি। ফলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
ডিলার দুলালের ট্যাগ অফিসার শাহনেওয়াজ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, প্রথমবার চাল আনার পর ডিলার আমাকে কিছু জানায় নি। পরে আমি খবর পেয়ে সেখানে যাই, পরে তারা আমাকে দিয়ে কিছু মানুষকে চাল দেওয়ায় তার কিছুক্ষণ পর আমি চলে আসি। এবারও নাকি চাল এনেছে তারা কিন্তু আমাকে কিছু জানায়নি। ট্যাগ অফিসার হিসেবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোন সৎউত্তর দিতে পারে নি। এছাড়া কত টন চাল এসেছে এবং ডিলার কত গুলো চাল দিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন রেখে দেন।
অন্যদিকে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শিখা আক্তারকে অফিসে না পেয়ে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি জানান অসুস্থতা জনিত কারণে তিনি ডাক্তারের কাছে আছেন। আর ডিলারের চালের অনিয়ম, স্থান পরিবর্তন বা অন্যান্য বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা পেলে অভিযুক্তের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।
রায়পুরা (নরসিংদী) : ওএমএসের কার্ডধারীরা চাল না পেয়ে হতাশ -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নরসিংদী রায়পুরায় খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি (ওএমএস) এর চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগ রয়েছে সেখানকার ডিলার দুলালের কাছে কার্ডধারী ক্রেতারা চাল চাইলে তিনি নানা অযুহাতে ক্রেতাদের চাল দিতে অস্বীকার করেন। ফলে চাল না নিয়েই বাড়িতে চলে আসে ক্রেতারা।
এ ঘটনার পর গত রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট হতদরিদ্রদের চাল আত্মসাৎ এবং কেন্দ্র অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের ৩ নং ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন।
চাঁনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে ঘটনা সত্যতা নিশ্চিতে মাঝেরচর গ্রামে সাংবাদিকরা গেলে ভিড় করে ভুক্তভোগীরা।
জিয়াসমিন বেগম নামে এক নারী জানান, গত বছরের ৫ তারিখের আগে আমি চাল পেতাম। গত মাসে শুনছি চাল আসছে চাল দিবে সেজন্য মাঝেরচর থেকে কালিকাপুর যাই। কিন্তু সেখানে গেলে আমাকে তারা চাল দেয় না। আমার আইডি কার্ডে নাকি সমস্যা। আরো কি কি সব বলে। আমি চাল দিতে অনেক সুপারিশ করি কিন্তু দেয় না।
কারিমা নামে একজন জানান, আগে আমরা চাল পেতাম কিন্তু এখন পাই না। চাল নিতে গেলে নানা তাল বাহানা করে।
জিয়াসমিন ও কারিমার মতো ওই গ্রামে এমন আরো প্রায় ১০-১৫ জন নারী গত মাসে ওএমএস এর চাল না পাওয়ার অভিযোগ জানান।
চাঁনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাফিউদ্দিন জানান, মাঝেরচর থেকে কালিকাপুর যাতায়াতে একজন ব্যক্তির প্রায় ১০০ টাকা করে খরচ হয়। তারা গরীব মানুষ সেজন্য তো তারা ১৫টাকা কেজি দরে চাল খাচ্ছে। তার উপর যদি তাদের আরো অতিরিক্ত ১০০ টাকা খরচ হয় সেটা তাদের জন্য জুলুম। গরীব মানুষেরা টাকা খরচ করেও চাল পায়নি এটা অতন্ত দুঃখজনক। তাছাড়া মাঝেরচর ৩নং ওয়ার্ডে তো কেন্দ্র রয়েছে। তারা সেখানে চাল গুলো বিতরণ করলেই তো কাজ শেষ হয়ে যায়।
চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝেরচর গ্রামের ৩নং ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি গত ১৫ দিনে ওএমএস এর ডিলারের বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। তারা কার্ড থাকা শর্তেও ক্রেতাদের চাল দেয়নি। চাল দেওয়ার আগে দফায় দফায় ডিলার দুলাল ও তার সহযোগী রায়পুরা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগরের সাথে কথা হয়েছে। তারা আমার আমাকে নির্ধারিত স্থানে চাল দেওয়ার প্রতিশ্র্যুতি দিয়েছিলো কিন্তু তারা কথা রাখেনি। তারা কালিকাপুরে চাল বিতরণ করেছে। এখন আমার কথা হলো যাদের কার্ড থাকার পরও চাল পায়নি সে চাল গুলো কোথায়..! সে চাল কি ডিলার গোডাউনে জমা দিয়েছে কিনা সেটা প্রশাসনের খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। তবে আমি যতদূর খোঁজ নিয়ে দেখেছি চাল সে গোডাউনে জমা দেয়নি। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডিলার দুলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করে নি। ফলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
ডিলার দুলালের ট্যাগ অফিসার শাহনেওয়াজ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, প্রথমবার চাল আনার পর ডিলার আমাকে কিছু জানায় নি। পরে আমি খবর পেয়ে সেখানে যাই, পরে তারা আমাকে দিয়ে কিছু মানুষকে চাল দেওয়ায় তার কিছুক্ষণ পর আমি চলে আসি। এবারও নাকি চাল এনেছে তারা কিন্তু আমাকে কিছু জানায়নি। ট্যাগ অফিসার হিসেবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোন সৎউত্তর দিতে পারে নি। এছাড়া কত টন চাল এসেছে এবং ডিলার কত গুলো চাল দিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন রেখে দেন।
অন্যদিকে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শিখা আক্তারকে অফিসে না পেয়ে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি জানান অসুস্থতা জনিত কারণে তিনি ডাক্তারের কাছে আছেন। আর ডিলারের চালের অনিয়ম, স্থান পরিবর্তন বা অন্যান্য বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা পেলে অভিযুক্তের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।