ফায়ার সার্ভিসের অন্য দুইজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন
অগ্নিকাণ্ডসহ যে কোনো দুর্যোগে সবার আগে সাড়া দেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। নিজের জীবন বাজি রেখে রক্ষা করেন অন্যের প্রাণ ও সম্পদ। ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজে প্রায়ই ঝড়ে যায় ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের প্রাণ। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলো- ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদের (৪২) নাম। গাজীপুর টঙ্গীর কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হন তিনি। মঙ্গলবার,(২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুর ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান শামীম। এ নিয়ে গত ১০ বছরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ফায়ার সার্ভিসের ২৪ জন সদস্য।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, শরীরের শতভাগ পুড়ে যাওয়া শামীমকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানেই তিনি মারা গেছেন। এদিকে মৃত শামীমের বড় ভাই রুহুল আমিন জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতী গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল হামিদ। স্ত্রী মনি আক্তার ও ৩ সন্তান নিয়ে টঙ্গীতে থাকতেন শামীম। রুহুল আমিন আরও জানান, আনুমানিক ২০ বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন শামীম। সম্প্রতি লিডার পদে পদন্নোতি পেয়েছিলেন। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার মাগরিবের পর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে শামীমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায় স্বজনরা।
এদিকে, আগুন লাগার ঘটনায় দগ্ধ ফায়ার কর্মীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের খোঁজ নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ওই ঘটনায় চারজন দগ্ধ হয়েছে এর মধ্যে দুইজনের পরিমাণ খুবই বেশি। আপনারা জানেন এটা একটা আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। চিকিৎসার মান খুবই ভালো। এরপরেও সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। কোনো অবহেলা করা হবে না। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করা হবে।’
রাসায়নিক গোডাউন অপসারণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘পুরান ঢাকায় যখন কেমিক্যাল দুর্ঘটনা ঘটে এরপর সেই গোডাউনগুলো মুন্সিগঞ্জের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। টঙ্গীর ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনা।’
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, ‘তাদের ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ হওয়ায় সবাই আশঙ্কাজনক। তাদের হাই-ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে। ‘দগ্ধ রোগীদের দেশের বাইরে নিয়ে গেলে ভালোও হতে পারে, আবার খারাপও হতে পারে। এজন্য আমরা সমন্বিতভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
টঙ্গীর এই ঘটনায় আল আমিন হোসেন বাবু নামে ফায়ার সার্ভিসের আরও একজন কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। আল আমিনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে টঙ্গী বিসিক এলাকায় সাহারা সুপার মার্কেটের পাশে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের খবর পেয়ে সেখানে যায় ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট। আগুন নির্বাপনের কাজ করার সময় হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ হলে দগ্ধ হন ৪ ফায়ার ফাইটারসহ আরও কয়েকজন। ফায়ার সার্ভিসের চারজনের মধ্যে জয় হাসান নামে একজনের শরীরের ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া নুরুল হুদা ও শামীম আহমেদের শ্বাসনালিসহ শরীরের প্রায় শতভাগ অংশ পুড়ে যায়। আর ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের ৪২ শতাংশ পুড়ে গেছে। জান্নাতুল নাঈম ও নুরুল হুদার অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ফায়ার সার্ভিসের অন্য দুইজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অগ্নিকাণ্ডসহ যে কোনো দুর্যোগে সবার আগে সাড়া দেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। নিজের জীবন বাজি রেখে রক্ষা করেন অন্যের প্রাণ ও সম্পদ। ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজে প্রায়ই ঝড়ে যায় ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের প্রাণ। এবার এই তালিকায় যুক্ত হলো- ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদের (৪২) নাম। গাজীপুর টঙ্গীর কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হন তিনি। মঙ্গলবার,(২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুর ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান শামীম। এ নিয়ে গত ১০ বছরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ফায়ার সার্ভিসের ২৪ জন সদস্য।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, শরীরের শতভাগ পুড়ে যাওয়া শামীমকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানেই তিনি মারা গেছেন। এদিকে মৃত শামীমের বড় ভাই রুহুল আমিন জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতী গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল হামিদ। স্ত্রী মনি আক্তার ও ৩ সন্তান নিয়ে টঙ্গীতে থাকতেন শামীম। রুহুল আমিন আরও জানান, আনুমানিক ২০ বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন শামীম। সম্প্রতি লিডার পদে পদন্নোতি পেয়েছিলেন। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার মাগরিবের পর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে শামীমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায় স্বজনরা।
এদিকে, আগুন লাগার ঘটনায় দগ্ধ ফায়ার কর্মীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের খোঁজ নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ওই ঘটনায় চারজন দগ্ধ হয়েছে এর মধ্যে দুইজনের পরিমাণ খুবই বেশি। আপনারা জানেন এটা একটা আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। চিকিৎসার মান খুবই ভালো। এরপরেও সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। কোনো অবহেলা করা হবে না। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করা হবে।’
রাসায়নিক গোডাউন অপসারণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘পুরান ঢাকায় যখন কেমিক্যাল দুর্ঘটনা ঘটে এরপর সেই গোডাউনগুলো মুন্সিগঞ্জের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। টঙ্গীর ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনা।’
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, ‘তাদের ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ হওয়ায় সবাই আশঙ্কাজনক। তাদের হাই-ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে। ‘দগ্ধ রোগীদের দেশের বাইরে নিয়ে গেলে ভালোও হতে পারে, আবার খারাপও হতে পারে। এজন্য আমরা সমন্বিতভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
টঙ্গীর এই ঘটনায় আল আমিন হোসেন বাবু নামে ফায়ার সার্ভিসের আরও একজন কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। আল আমিনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে টঙ্গী বিসিক এলাকায় সাহারা সুপার মার্কেটের পাশে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের খবর পেয়ে সেখানে যায় ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট। আগুন নির্বাপনের কাজ করার সময় হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ হলে দগ্ধ হন ৪ ফায়ার ফাইটারসহ আরও কয়েকজন। ফায়ার সার্ভিসের চারজনের মধ্যে জয় হাসান নামে একজনের শরীরের ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া নুরুল হুদা ও শামীম আহমেদের শ্বাসনালিসহ শরীরের প্রায় শতভাগ অংশ পুড়ে যায়। আর ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের ৪২ শতাংশ পুড়ে গেছে। জান্নাতুল নাঈম ও নুরুল হুদার অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।