চাঁদপুর : বন্ধ মাদক নিরাময় কেন্দ্র -সংবাদ
নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে চাঁদপুর মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘অর্পণ’ বন্ধ করে দিয়েছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
চাঁদপুর জেলার একমাত্র মাদক নিরাময় কেন্দ্রের নানা অবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এর ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়েছে ২৭ রোগী। কেন্দ্রের বাকি রোগীরা বলছেন, পরিচালকদের নির্যাতন নিপিড়নের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই পালিয়েছে তারা । নিরাময় কেন্দ্রের স্টাফরা জানিয়েছেন, এর দায়িত্বরত পরিচালকদের অমানবিক আচরণ করায় রোগীরা রুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে পালিয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কেন্দ্রটি বন্ধ করার উদ্যোগসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তারা। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার চাঁদপুর শহরের ওয়াপদা গেইটে অবস্থিত কেন্দ্রটিতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গেলো ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর ১০ বেডের অনুমোদন নিয়ে অনেকটা অনারাম্ভরভাবেই চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের খলিশাডুলী ওয়াপদা গেইটে রোগীর পুনর্বাসন চিকিৎসা শুরু করে অর্পণ মাদকাসক্তি চিকিৎসা পুনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্রটি। যদিও অনুমোদনের অনেক পূর্বেই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসার নামে নানা অপচিকিৎসা করে সমালোচনায় পড়েন কেন্দ্রটির সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু যেকোনভাবেই হউক না কেনো, কেন্দ্রটি অনুমোদনের পরেও এর দায়িত্বশীল মিতাত ও তুষার নামে দুজন পূর্বের মতোই রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে তামাশা শুরু করে।
ভর্তিকৃত রোগীরা জানান, এখানে ১০ জন রোগী ভর্তির কথা হলেও রোগী ভর্তি রাখা হতো অর্ধশতাধিকেরও বেশি। ২ তলা বিশিষ্ট ভাড়া বাসায় মাত্র ৪টি কক্ষে একত্রে গাদাগাদি করে এসব রোগীদের আটকে রেখে চালানো হতো শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। আর এ কাজে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কুমিল্লার তুষারের নাম রোগীদের মুখে মুখে।
কেন্দ্রের স্টাফ সুফিয়ান জানান, কেন্দ্রটিতে ছিলো না অনুমোদনের শর্তসাপেক্ষের প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ লোকবল। যার কারনে মোটা দাগে রোগীর স্বজনদের থেকে এককালীন ও মাসে মাসে টাকা নিয়ে রোগী ভর্তি নিলেও কেন্দ্রের ভেতরের চার দেয়ালে রোগীদের আটকে রেখে দিনের পর চালানো হতো অমানুষিক নির্যাতন। শুধু তাই নয়, দিনভর নির্যাতনের পর রোগীদের ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করা হতোই না, এমনকি দেয়া হতোনা ঠিকমতো খাবারও। মাসে মাসে রোগীরা টাকা দেয়ার পরও এতো নিপীড়ন অপমান লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে কেন্দ্রটিতে ভাঙচুর চালিয়ে এবং এর স্টাফদের মারধর করে এর ২য় তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার পলিয়ে যায় ২৭ রোগী। এতে আমিও নিজের রোগীদের হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছি।
রোগীর স্বজনরা বলেন, অনুমোদনের মাত্র বছর না পেরোতেই রোগীদের লাফিয়ে পালানোর ঘটনা ও উত্তেজনা সামাল দিতে কেন্দ্রের ভেন্টিলেটর ভেঙে লাফিয়ে পলিয়ে যায় এর দায়িত্বশীল তুষার। আর এ ঘটনা জানা জানির পরই রোগীর স্বজনরা ছুটে আসে ওয়াপদা গেইটের এই কেন্দ্রটিতে। তাই ৩ মাসের চুক্তিতে নেয়া রোগীদের অর্থ ফেরত, রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে প্রতারণা এবং অনুমোদনের শর্তভঙ্গের কারণে এই কেন্দ্রটির মিতাত ও তুষারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.মিজানুর রহমান বলেন, ১০ বেডের অনুমোদিত এই কেন্দ্রে এ ঘটনার পর ২৭ জন পালানোর তথ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। পরবর্তীতে পালিয়ে যাওয়া ২৭ জনের তথ্য সংগ্রহের পর কেন্দ্রে থাকা আরও ২৩ রোগীকে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় তুলে দেই। একই সাথে এ কেন্দ্রটি চুড়ান্তভাবে বন্ধ এবং এরসাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চাঁদপুর : বন্ধ মাদক নিরাময় কেন্দ্র -সংবাদ
শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে চাঁদপুর মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘অর্পণ’ বন্ধ করে দিয়েছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
চাঁদপুর জেলার একমাত্র মাদক নিরাময় কেন্দ্রের নানা অবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এর ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়েছে ২৭ রোগী। কেন্দ্রের বাকি রোগীরা বলছেন, পরিচালকদের নির্যাতন নিপিড়নের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই পালিয়েছে তারা । নিরাময় কেন্দ্রের স্টাফরা জানিয়েছেন, এর দায়িত্বরত পরিচালকদের অমানবিক আচরণ করায় রোগীরা রুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে পালিয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কেন্দ্রটি বন্ধ করার উদ্যোগসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তারা। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার চাঁদপুর শহরের ওয়াপদা গেইটে অবস্থিত কেন্দ্রটিতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গেলো ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর ১০ বেডের অনুমোদন নিয়ে অনেকটা অনারাম্ভরভাবেই চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের খলিশাডুলী ওয়াপদা গেইটে রোগীর পুনর্বাসন চিকিৎসা শুরু করে অর্পণ মাদকাসক্তি চিকিৎসা পুনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্রটি। যদিও অনুমোদনের অনেক পূর্বেই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসার নামে নানা অপচিকিৎসা করে সমালোচনায় পড়েন কেন্দ্রটির সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু যেকোনভাবেই হউক না কেনো, কেন্দ্রটি অনুমোদনের পরেও এর দায়িত্বশীল মিতাত ও তুষার নামে দুজন পূর্বের মতোই রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে তামাশা শুরু করে।
ভর্তিকৃত রোগীরা জানান, এখানে ১০ জন রোগী ভর্তির কথা হলেও রোগী ভর্তি রাখা হতো অর্ধশতাধিকেরও বেশি। ২ তলা বিশিষ্ট ভাড়া বাসায় মাত্র ৪টি কক্ষে একত্রে গাদাগাদি করে এসব রোগীদের আটকে রেখে চালানো হতো শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন। আর এ কাজে কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কুমিল্লার তুষারের নাম রোগীদের মুখে মুখে।
কেন্দ্রের স্টাফ সুফিয়ান জানান, কেন্দ্রটিতে ছিলো না অনুমোদনের শর্তসাপেক্ষের প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ লোকবল। যার কারনে মোটা দাগে রোগীর স্বজনদের থেকে এককালীন ও মাসে মাসে টাকা নিয়ে রোগী ভর্তি নিলেও কেন্দ্রের ভেতরের চার দেয়ালে রোগীদের আটকে রেখে দিনের পর চালানো হতো অমানুষিক নির্যাতন। শুধু তাই নয়, দিনভর নির্যাতনের পর রোগীদের ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করা হতোই না, এমনকি দেয়া হতোনা ঠিকমতো খাবারও। মাসে মাসে রোগীরা টাকা দেয়ার পরও এতো নিপীড়ন অপমান লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে কেন্দ্রটিতে ভাঙচুর চালিয়ে এবং এর স্টাফদের মারধর করে এর ২য় তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার পলিয়ে যায় ২৭ রোগী। এতে আমিও নিজের রোগীদের হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছি।
রোগীর স্বজনরা বলেন, অনুমোদনের মাত্র বছর না পেরোতেই রোগীদের লাফিয়ে পালানোর ঘটনা ও উত্তেজনা সামাল দিতে কেন্দ্রের ভেন্টিলেটর ভেঙে লাফিয়ে পলিয়ে যায় এর দায়িত্বশীল তুষার। আর এ ঘটনা জানা জানির পরই রোগীর স্বজনরা ছুটে আসে ওয়াপদা গেইটের এই কেন্দ্রটিতে। তাই ৩ মাসের চুক্তিতে নেয়া রোগীদের অর্থ ফেরত, রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে প্রতারণা এবং অনুমোদনের শর্তভঙ্গের কারণে এই কেন্দ্রটির মিতাত ও তুষারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.মিজানুর রহমান বলেন, ১০ বেডের অনুমোদিত এই কেন্দ্রে এ ঘটনার পর ২৭ জন পালানোর তথ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। পরবর্তীতে পালিয়ে যাওয়া ২৭ জনের তথ্য সংগ্রহের পর কেন্দ্রে থাকা আরও ২৩ রোগীকে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় তুলে দেই। একই সাথে এ কেন্দ্রটি চুড়ান্তভাবে বন্ধ এবং এরসাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।