alt

দুই শত বছরের ঐতিহ্যে বীরগঞ্জে আদিবাসীদের মিলনমেলা

প্রতিনিধি, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) : শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর): গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তরুণীরা রঙের উৎসবে মেতে ওঠেছে -সংবাদ

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। গতকাল শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই মাঠটি রঙ্গে আলোয় মুখরিত হয়ে ওঠে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা হাজারো মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে চারদিক। কাঁচের চুড়ির টুংটাং শব্দ, ঢাক-ঢোলের বাজনা আর মাইক থেকে ভেসে আসা আদিবাসী গানের সুরে মেতে ওঠে চারপাশ। এ যেন দুই শত বছরেরও পুরনো এক উৎসব, যা সবার কাছে পরিচিত ‘বাসিয়া হাটি মেলা’ নামে। প্রতিবছর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর পরদিন এ মেলা বসে। দূর-দূরান্ত থেকে সাঁওতালসহ নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ভিড় জমায় এখানে। শুধু ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্ঠীই নয়, হিন্দু-মুসলিমসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষও অংশ নেন মিলনমেলায়। রঙিন শাড়ি, মাথায় ফুল, হাতে কাঁচের চুড়ি আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিকে তরুণীরা যেন রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন। মেলার মাঠে দোকানিদের পসরা, চুড়ি, ফিতা, ঝিনুক, মাটির পাত্র, দা-কুড়াল থেকে শুরু করে হাঁড়ি-পাতিল সবই থাকে একসাথে।

মেলা কেবল কেনাকাটার জায়গা নয়; এটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের এক সামাজিক উৎসব ও পারিবারিক মিলনমেলা। দিনভর চলে নাচ-গান, দলগত পরিবেশনা আর তরুণ-তরুণীদের প্রাণখোলা আড্ডা। এত মানুষের ভিড়ে অনেক সময় মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করতে হিমশিম খায়।

শতবর্ষ ধরে এ মেলাকে ঘিরে আরেকটি বিশেষ ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল যুবক-যুবতীরা এখানে জীবনসঙ্গী বেছে নিত। একে অপরকে পছন্দ হলে পরিবারগুলোর আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন হতো। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সেই প্রচলন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।

আদিবাসী তরুণী এঞ্জিলিনা মার্ডি বলেন, শুনেছি একসময় এই মেলায় জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার রীতি ছিল। তবে এখন আর আগের মতো নেই। সময় বদলেছে, সেই সাথে বদলেছে আমাদের জীবনযাত্রাও।

আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহ্বায়ক জোসেফ হেমরম জানান, আমাদের পূর্বপুরুষেরা এ মেলা শুরু করেছিলেন। আমরা কেবল তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করছি। কবে থেকে শুরু হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, তবে আনুমানিক কয়েক শত বছর ধরে চলছে। বিয়ের রীতিটি আগের মতো নেই, তবে মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সহযোগিতা করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মনজুরুল ইসলাম মনজু বলেন, এই মেলা আমাদের দীর্ঘ দিনের সম্প্রীতির নিদর্শন। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসাথে মিলিত হয়। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ভালোবাসার বন্ধনের প্রতীক।

ছবি

বিজিবির অভিযান: ভেস্তে গেল ‘মানব পাচারের ছক’, আটক ৬

ছবি

নির্ধারিত যাত্রাবিরতি ছাড়াই লাকসাম ছাড়লো ট্রেন, টিকেটধারী যাত্রীরা বিপাকে

ছবি

স্থলবন্দর: টানা এক সপ্তাহ ছুটি শেষে আবার আমদানি-রপ্তানি শুরু

ছবি

ইসলামী ব্যাংকে চাকরিচ্যুতদের সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

ইইডির দুই প্রকৌশলীর অধীনেই পাঁচ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাজ

ছবি

অ্যানথ্রাক্স: গাইবান্ধায় নতুন শনাক্ত ৭

ছবি

ডেঙ্গু: অক্টোবরে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা

ছবি

রংপুরে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে আড়াইশ’

ছবি

চলতি মাসে তিনটি লঘুচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা

ছবি

চান্দিনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে যুবকের মৃত্যু

ছবি

দশমিনায় দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে

ছবি

সিলেট বিভাগের যাত্রীদের আতংক ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের যানজট

ছবি

নরসিংদীতে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি

ছবি

টানা ৮ দিন ছুটিশেষে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

ছবি

অনিন্দ্য সুন্দর বাইদ বন সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক অরণ্যের মধুপুর গড়

ছবি

ডিমলায় ব্রিজ দেবে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ

ছবি

খানাখন্দে বেহাল দশায় নরসিংদী শহর, ভোগান্তিতে পৌরবাসী

ছবি

রাজশাহীতে কাঁচা মরিচের দাম ৩২০ টাকা

ছবি

‘পিআর পদ্ধতির কথা বলে নির্বাচন বানচালের পায়তারা’

ছবি

শার্শায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ছবি

মহাদেবপুরে ডুবুরিদের ব্যর্থ চেষ্টার পর মরদেহ উদ্ধার করলেন জেলে

ছবি

সুন্দরগঞ্জে অজ্ঞত রোগে ১১ জন আক্রান্ত, আতঙ্কে গ্রামবাসী

ছবি

ঝড় বাতাসে টিকতে না পেরে ইলিশ শূন্য শতশত ট্রলার ফিরেছে উপকূলে

ছবি

শেরপুরে বাজারে আগুন, ১৪০ বেগুন ও কাঁচা মরিচ ৩২০ টাকা কেজি

ছবি

রায়গঞ্জে অসহায় জোসনার পাশে দাঁড়ালেন মামুন বিশ্বাস

ছবি

বারবাকিয়া-রাজাখালী সংযোগ সেতুর কাজ বন্ধ, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

ছবি

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে কারাদণ্ড

ছবি

কোম্পানীগঞ্জে পানিতে ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু

ছবি

গজারিয়ায় অপহরণকারী শাওন ও সহযোগী আলমগীর গ্রেপ্তার

ছবি

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎতের রিডিং মারপ্যাঁচে দিশেহারা গ্রাহক

ছবি

রূপগঞ্জে ওয়ান থাউজেন্ড প্রকল্পের আওতায় নারীরা এখন স্বাবলম্বী

ছবি

বাগেরহাটে হায়াতের হত্যকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়লো জীবিকার একমাত্র সম্বল গাড়ি

ছবি

সৈয়দপুর রেলকারখানায় সরঞ্জাম সংকটে উৎপাদন বন্ধের শঙ্কা

ছবি

নরসিংদীতে পুলিশের কাছ থেকে ‘চাঁদাবাজ’ ছিনতাই

চট্টগ্রামে ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ ইসলামী ব্যাংক কর্মীদের

tab

দুই শত বছরের ঐতিহ্যে বীরগঞ্জে আদিবাসীদের মিলনমেলা

প্রতিনিধি, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর)

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর): গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তরুণীরা রঙের উৎসবে মেতে ওঠেছে -সংবাদ

শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। গতকাল শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই মাঠটি রঙ্গে আলোয় মুখরিত হয়ে ওঠে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা হাজারো মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে চারদিক। কাঁচের চুড়ির টুংটাং শব্দ, ঢাক-ঢোলের বাজনা আর মাইক থেকে ভেসে আসা আদিবাসী গানের সুরে মেতে ওঠে চারপাশ। এ যেন দুই শত বছরেরও পুরনো এক উৎসব, যা সবার কাছে পরিচিত ‘বাসিয়া হাটি মেলা’ নামে। প্রতিবছর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর পরদিন এ মেলা বসে। দূর-দূরান্ত থেকে সাঁওতালসহ নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ভিড় জমায় এখানে। শুধু ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্ঠীই নয়, হিন্দু-মুসলিমসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষও অংশ নেন মিলনমেলায়। রঙিন শাড়ি, মাথায় ফুল, হাতে কাঁচের চুড়ি আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিকে তরুণীরা যেন রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন। মেলার মাঠে দোকানিদের পসরা, চুড়ি, ফিতা, ঝিনুক, মাটির পাত্র, দা-কুড়াল থেকে শুরু করে হাঁড়ি-পাতিল সবই থাকে একসাথে।

মেলা কেবল কেনাকাটার জায়গা নয়; এটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের এক সামাজিক উৎসব ও পারিবারিক মিলনমেলা। দিনভর চলে নাচ-গান, দলগত পরিবেশনা আর তরুণ-তরুণীদের প্রাণখোলা আড্ডা। এত মানুষের ভিড়ে অনেক সময় মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করতে হিমশিম খায়।

শতবর্ষ ধরে এ মেলাকে ঘিরে আরেকটি বিশেষ ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল যুবক-যুবতীরা এখানে জীবনসঙ্গী বেছে নিত। একে অপরকে পছন্দ হলে পরিবারগুলোর আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন হতো। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সেই প্রচলন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।

আদিবাসী তরুণী এঞ্জিলিনা মার্ডি বলেন, শুনেছি একসময় এই মেলায় জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার রীতি ছিল। তবে এখন আর আগের মতো নেই। সময় বদলেছে, সেই সাথে বদলেছে আমাদের জীবনযাত্রাও।

আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহ্বায়ক জোসেফ হেমরম জানান, আমাদের পূর্বপুরুষেরা এ মেলা শুরু করেছিলেন। আমরা কেবল তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করছি। কবে থেকে শুরু হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, তবে আনুমানিক কয়েক শত বছর ধরে চলছে। বিয়ের রীতিটি আগের মতো নেই, তবে মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সহযোগিতা করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মনজুরুল ইসলাম মনজু বলেন, এই মেলা আমাদের দীর্ঘ দিনের সম্প্রীতির নিদর্শন। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসাথে মিলিত হয়। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ভালোবাসার বন্ধনের প্রতীক।

back to top