বীরগঞ্জ (দিনাজপুর): গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তরুণীরা রঙের উৎসবে মেতে ওঠেছে -সংবাদ
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। গতকাল শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই মাঠটি রঙ্গে আলোয় মুখরিত হয়ে ওঠে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা হাজারো মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে চারদিক। কাঁচের চুড়ির টুংটাং শব্দ, ঢাক-ঢোলের বাজনা আর মাইক থেকে ভেসে আসা আদিবাসী গানের সুরে মেতে ওঠে চারপাশ। এ যেন দুই শত বছরেরও পুরনো এক উৎসব, যা সবার কাছে পরিচিত ‘বাসিয়া হাটি মেলা’ নামে। প্রতিবছর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর পরদিন এ মেলা বসে। দূর-দূরান্ত থেকে সাঁওতালসহ নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ভিড় জমায় এখানে। শুধু ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্ঠীই নয়, হিন্দু-মুসলিমসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষও অংশ নেন মিলনমেলায়। রঙিন শাড়ি, মাথায় ফুল, হাতে কাঁচের চুড়ি আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিকে তরুণীরা যেন রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন। মেলার মাঠে দোকানিদের পসরা, চুড়ি, ফিতা, ঝিনুক, মাটির পাত্র, দা-কুড়াল থেকে শুরু করে হাঁড়ি-পাতিল সবই থাকে একসাথে।
মেলা কেবল কেনাকাটার জায়গা নয়; এটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের এক সামাজিক উৎসব ও পারিবারিক মিলনমেলা। দিনভর চলে নাচ-গান, দলগত পরিবেশনা আর তরুণ-তরুণীদের প্রাণখোলা আড্ডা। এত মানুষের ভিড়ে অনেক সময় মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করতে হিমশিম খায়।
শতবর্ষ ধরে এ মেলাকে ঘিরে আরেকটি বিশেষ ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল যুবক-যুবতীরা এখানে জীবনসঙ্গী বেছে নিত। একে অপরকে পছন্দ হলে পরিবারগুলোর আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন হতো। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সেই প্রচলন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।
আদিবাসী তরুণী এঞ্জিলিনা মার্ডি বলেন, শুনেছি একসময় এই মেলায় জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার রীতি ছিল। তবে এখন আর আগের মতো নেই। সময় বদলেছে, সেই সাথে বদলেছে আমাদের জীবনযাত্রাও।
আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহ্বায়ক জোসেফ হেমরম জানান, আমাদের পূর্বপুরুষেরা এ মেলা শুরু করেছিলেন। আমরা কেবল তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করছি। কবে থেকে শুরু হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, তবে আনুমানিক কয়েক শত বছর ধরে চলছে। বিয়ের রীতিটি আগের মতো নেই, তবে মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সহযোগিতা করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মনজুরুল ইসলাম মনজু বলেন, এই মেলা আমাদের দীর্ঘ দিনের সম্প্রীতির নিদর্শন। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসাথে মিলিত হয়। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ভালোবাসার বন্ধনের প্রতীক।
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর): গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তরুণীরা রঙের উৎসবে মেতে ওঠেছে -সংবাদ
শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। গতকাল শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই মাঠটি রঙ্গে আলোয় মুখরিত হয়ে ওঠে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা হাজারো মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে চারদিক। কাঁচের চুড়ির টুংটাং শব্দ, ঢাক-ঢোলের বাজনা আর মাইক থেকে ভেসে আসা আদিবাসী গানের সুরে মেতে ওঠে চারপাশ। এ যেন দুই শত বছরেরও পুরনো এক উৎসব, যা সবার কাছে পরিচিত ‘বাসিয়া হাটি মেলা’ নামে। প্রতিবছর দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর পরদিন এ মেলা বসে। দূর-দূরান্ত থেকে সাঁওতালসহ নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ ভিড় জমায় এখানে। শুধু ক্ষুদ্র্র নৃগোষ্ঠীই নয়, হিন্দু-মুসলিমসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষও অংশ নেন মিলনমেলায়। রঙিন শাড়ি, মাথায় ফুল, হাতে কাঁচের চুড়ি আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিকে তরুণীরা যেন রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন। মেলার মাঠে দোকানিদের পসরা, চুড়ি, ফিতা, ঝিনুক, মাটির পাত্র, দা-কুড়াল থেকে শুরু করে হাঁড়ি-পাতিল সবই থাকে একসাথে।
মেলা কেবল কেনাকাটার জায়গা নয়; এটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের এক সামাজিক উৎসব ও পারিবারিক মিলনমেলা। দিনভর চলে নাচ-গান, দলগত পরিবেশনা আর তরুণ-তরুণীদের প্রাণখোলা আড্ডা। এত মানুষের ভিড়ে অনেক সময় মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করতে হিমশিম খায়।
শতবর্ষ ধরে এ মেলাকে ঘিরে আরেকটি বিশেষ ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল যুবক-যুবতীরা এখানে জীবনসঙ্গী বেছে নিত। একে অপরকে পছন্দ হলে পরিবারগুলোর আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে বিয়ের আয়োজন হতো। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সেই প্রচলন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে।
আদিবাসী তরুণী এঞ্জিলিনা মার্ডি বলেন, শুনেছি একসময় এই মেলায় জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার রীতি ছিল। তবে এখন আর আগের মতো নেই। সময় বদলেছে, সেই সাথে বদলেছে আমাদের জীবনযাত্রাও।
আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আহ্বায়ক জোসেফ হেমরম জানান, আমাদের পূর্বপুরুষেরা এ মেলা শুরু করেছিলেন। আমরা কেবল তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করছি। কবে থেকে শুরু হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়, তবে আনুমানিক কয়েক শত বছর ধরে চলছে। বিয়ের রীতিটি আগের মতো নেই, তবে মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সহযোগিতা করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মনজুরুল ইসলাম মনজু বলেন, এই মেলা আমাদের দীর্ঘ দিনের সম্প্রীতির নিদর্শন। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসাথে মিলিত হয়। এটি শুধু একটি উৎসব নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ভালোবাসার বন্ধনের প্রতীক।