কেশবপুর (যশোর): ঘানিতে সরিলার তেল মাড়াই হচ্ছে -সংবাদ
যশোরের কেশবপুরের জনগণ উদ্ভিজ্জ ভোজ্যতেল হিসেবে সয়াবিনের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে পর্যায়ক্রমে সরিষায় ফিরে যাচ্ছেন। এতে ভিড় বাড়ছে শহরের একমাত্র ঘানিতে সরিষার তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জনতা অয়েল মিলে। কিন্তু এউপজেলায় যে পরিমান সরিষা উৎপাদন হয় তাদিয়ে মোট চাহিদার ৪০ ভাগও পূরণ সম্ভব হয় না। এঅবস্থায় অবশিষ্ট তেলের জন্যে জনগণ খাদ্য তালিকায় সয়াবিন, পামঅয়েল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ রাইস ব্রান অয়েল ভোজ্য তেলে অন্তর্ভূক্ত করতে বাধ্য হচ্ছে।
জানা যায়, বর্তমান দেশীয় ও বৈদেশিক বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে কোনোভাবেই আমাদের নির্দিষ্ট কোনো একটি তেলের ওপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। খাদ্য তালিকাতে সরিষা, সয়াবিন, সূর্যমুখী, তিল সবটাকেই স্থান দিতে হবে। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিজ্জ ভোজ্যতেল যেমন- সরিষার, সয়াবিন, রাইস ব্রান অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, পামঅয়েলসহ বিভিন্ন তেল পাওয়া যায়। এরমধ্যে এ উপজেলার জনগণ সয়াবিন, পামঅয়েল ও সরিষার তেল ভোজ্যতেল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। বর্তমান বাজারে সরিষার দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরিষা আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, গত বছর এউপজেলায় ১৫৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। যা থেকে ২০৮৭ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৮ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যা থেকে মোট চাহিদার ৪০ ভাগও পূরণ হয় না। অবশিষ্ট ভোজ্য তেলের জন্যে আমাদের বাজারে প্রচলিত ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। দাম বেশি থাকায় বারি উদ্ভাবিত সরিষার আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। বারি সরিষা-১৮ হেক্টরে ৪১ মন ও বিঘায় সাড়ে ৫ মন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এতে কৃষক বেশি লাভবান হবেন।
মধ্যকুল গ্রামের সরিষা চাষী শাহীনুর রহমান জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভোজ্য তেল হিসেবে সয়াবিন তেল ব্যবহার করতেন। কিন্তু শুনেছি এ তেলের গুণগত মান ভালো না এবং হৃদরোগের ঝুূঁকি বাড়ায়। যে কারণে এখন নিজের উৎপাদিত সরিষা ঘানিতে মাড়াই করে সেই তেল খাওয়া শুরু করেছি। এখন বাজারে প্রতিমন সরিষা ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এব্যাপারে কেশবপুর শহরের হাসপাতাল মোড়ে অবস্থিত একমাত্র ঘানিতে সরিষার তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জনতা অয়েল মিলের মালিক রাজকুমার সাহা বলেন, তার মিলে ৫০ বছর ধরে ঘানিতে সরিষা, তিল, নারিকেলসহ বিভিন্ন তেল মাড়াই করা হয়ে থাকে। তার মিলে ৪ পিয়ারের ৮টি ঘানি রয়েছে। তেল ও খৈল উৎপাদনকারী অ্যাসপিলার রয়েছে ৩টি। এউপজেলার জনগণ দিনে দিনে সরিষায় ঝুঁকে পড়ছে। আগের তুলনায় এখন ঘানিতে বেশি সরিষা মাড়াই হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, সরিষার তেলে মনোআনসেচুরেটেড ও পলিআনসেচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকায় উক্ত তেল সেবনে রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরিষার তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদিক বিবেচনা করে বারি উদ্ভাবিত বারি সরিষা- ১৮ জাতের সরিষার বীজ উৎপাদন করে কৃষকদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কেশবপুর (যশোর): ঘানিতে সরিলার তেল মাড়াই হচ্ছে -সংবাদ
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
যশোরের কেশবপুরের জনগণ উদ্ভিজ্জ ভোজ্যতেল হিসেবে সয়াবিনের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে পর্যায়ক্রমে সরিষায় ফিরে যাচ্ছেন। এতে ভিড় বাড়ছে শহরের একমাত্র ঘানিতে সরিষার তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জনতা অয়েল মিলে। কিন্তু এউপজেলায় যে পরিমান সরিষা উৎপাদন হয় তাদিয়ে মোট চাহিদার ৪০ ভাগও পূরণ সম্ভব হয় না। এঅবস্থায় অবশিষ্ট তেলের জন্যে জনগণ খাদ্য তালিকায় সয়াবিন, পামঅয়েল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ রাইস ব্রান অয়েল ভোজ্য তেলে অন্তর্ভূক্ত করতে বাধ্য হচ্ছে।
জানা যায়, বর্তমান দেশীয় ও বৈদেশিক বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে কোনোভাবেই আমাদের নির্দিষ্ট কোনো একটি তেলের ওপর নির্ভরশীল হওয়া যাবে না। খাদ্য তালিকাতে সরিষা, সয়াবিন, সূর্যমুখী, তিল সবটাকেই স্থান দিতে হবে। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিজ্জ ভোজ্যতেল যেমন- সরিষার, সয়াবিন, রাইস ব্রান অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, পামঅয়েলসহ বিভিন্ন তেল পাওয়া যায়। এরমধ্যে এ উপজেলার জনগণ সয়াবিন, পামঅয়েল ও সরিষার তেল ভোজ্যতেল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। বর্তমান বাজারে সরিষার দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরিষা আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, গত বছর এউপজেলায় ১৫৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। যা থেকে ২০৮৭ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৮ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যা থেকে মোট চাহিদার ৪০ ভাগও পূরণ হয় না। অবশিষ্ট ভোজ্য তেলের জন্যে আমাদের বাজারে প্রচলিত ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। দাম বেশি থাকায় বারি উদ্ভাবিত সরিষার আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। বারি সরিষা-১৮ হেক্টরে ৪১ মন ও বিঘায় সাড়ে ৫ মন পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এতে কৃষক বেশি লাভবান হবেন।
মধ্যকুল গ্রামের সরিষা চাষী শাহীনুর রহমান জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভোজ্য তেল হিসেবে সয়াবিন তেল ব্যবহার করতেন। কিন্তু শুনেছি এ তেলের গুণগত মান ভালো না এবং হৃদরোগের ঝুূঁকি বাড়ায়। যে কারণে এখন নিজের উৎপাদিত সরিষা ঘানিতে মাড়াই করে সেই তেল খাওয়া শুরু করেছি। এখন বাজারে প্রতিমন সরিষা ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এব্যাপারে কেশবপুর শহরের হাসপাতাল মোড়ে অবস্থিত একমাত্র ঘানিতে সরিষার তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জনতা অয়েল মিলের মালিক রাজকুমার সাহা বলেন, তার মিলে ৫০ বছর ধরে ঘানিতে সরিষা, তিল, নারিকেলসহ বিভিন্ন তেল মাড়াই করা হয়ে থাকে। তার মিলে ৪ পিয়ারের ৮টি ঘানি রয়েছে। তেল ও খৈল উৎপাদনকারী অ্যাসপিলার রয়েছে ৩টি। এউপজেলার জনগণ দিনে দিনে সরিষায় ঝুঁকে পড়ছে। আগের তুলনায় এখন ঘানিতে বেশি সরিষা মাড়াই হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, সরিষার তেলে মনোআনসেচুরেটেড ও পলিআনসেচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকায় উক্ত তেল সেবনে রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরিষার তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদিক বিবেচনা করে বারি উদ্ভাবিত বারি সরিষা- ১৮ জাতের সরিষার বীজ উৎপাদন করে কৃষকদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।