ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন (ভিজিডি) প্রকল্পের কার্ডধারী হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে দেওয়া ৩ জন হতদরিদ্রের চাউল দুই বছর ধরে উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে।
সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য আফরোজা বেগম নিজেই স্বাক্ষর করে চাউল উত্তোলন করে আসছেন মর্মে অভিযোগ। দুই বছর মেয়াদের চাউল বিতরণ শেষ হলে নতুন করে সরকার পুনরায় হতদরিদ্রদের জন্য চাউল বরাদ্দের ব্যবস্থা করলে সেটি উত্তোলন করতে এনআইডি কার্ড দেখানো এবং হতদরিদ্রের নিজের উপস্থিত থেকে চাউল উত্তোলনের জন্য পরিষদ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়। এনআইডি কার্ড ছাড়াই ইউপি সদস্য আফরোজা খাতুন আগের মতই নিজে স্বাক্ষর করে চাউল উত্তোলন করতে গেলে সেটি আটকে দেন ইউনিয়ন পরিষদ সচিব।
আফরোজা বেগম নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের (৪,৫,৬) নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ও বারইপারা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
তথ্যানুসন্ধানে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবিয়া জামান, আফসা খাতুন ও ইসমতারা নামের তিনজন ভিজিডি কার্ডধারীর নাম ব্যবহার করে তাদের নিজের অজান্তেই দীর্ঘ ২ বছর ধরে নিয়মিতভাবে কার্ডগুলোর ৩০ কেজি করে চাউল উত্তোলন করে আসছেন আফরোজা বেগম। দুই বছরে ওই মেম্বর তিনটি কার্ডের ২১৬০ কেজি চাউল কার্ডধারীদের না জানিয়ে নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।
পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব কার্ডধারীদের বাড়িতে যোগাযোগ করেন এবং জানতে পারেন কার্ডধারীরা তাদের কার্ডের বিষয়ে কিছুই জানেনা এবং তারা কার্ডের বিষয়ে কোনদিন পরিষদে আবেদনই করেনি এমনকি তারা দুই বছর কোন চাউলই উত্তোলন করেনি বলে তারা আরও জানান। চাউল দেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বর্তমান সরকার নতুন করে প্রত্যেক কার্ডধারীদের অতিরিক্ত ৬ বস্তা করে চাউল বরাদ্দ দেন। প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সচিবরা প্রত্যেক কার্ডধারীদের নিজেদের চাউল নিজেদের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে পরিষদ থেকে তাদের চাউল গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আফরোজা বেগম আগের মত স্বাক্ষর করে ফের চাউল উত্তোলনের চেষ্টা করলে চাউল আটকে দেন ইউপি সচিব। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় হৈ-চৈ শুরু হয়।
ঘটনাটি জানার পর কার্ডধারী রুবিয়া জামান মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহীনুর আক্তারের নিকট মহিলা মেম্বারের চাউল আত্মসাতের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও ওই মহিলা মেম্বারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত আইনগত কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন এবং নহাটা ৪ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কামরুল ইসলাম ও রজিবুল বলেন, মহিলা মেম্বর আফরোজা বেগম কার্ডধারীদের না জানিয়ে গোপনে তাদের নাম এবং ছবি ব্যবহার করে দীর্ঘ দুই বছর ধরে তাদের নামের চাউল নিজেই স্বাক্ষর করে উত্তোলন করেন। নতুন করে আসা চাউল কার্ডধারী না আসায় সেই চাউল এখন ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখা হয়েছে। এছাড়া ওই মেম্বার যেসব কার্ডধারীদের নামে চাউল উঠিয়ে আত্মসাৎ করে আসছেন তাদেরকে সাংবাদিকদের নিকট তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার তথ্য না দিতে অনুরোধ করছেন বলে তারা আরও জানান।
রুবিয়া জামান বলেন, আমার নামে কার্ড হয়েছে কিনা আমি নিজেই জানিনা এছাড়া আমি কাডের জন্য কোন আবেদনই করিনাই কারো কাছে। আল্লাহ পাক আমাকে অনেক ভালোই রেখেছেন আমার কাডের কোন দরকার নেই। আমাকে না জানিয়ে আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে মহিলা মেম্বর কার্ড বানিয়ে সারা বছর চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন বেআইনীভাবে। ইউএনও মহোদয়ের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েও আমি কোন প্রতিকার পায়নি। আমি ওই মেম্বারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
নহাটা ইউপি সচিব মো. খুরশিদ সাগর এ প্রতিবেদককে বলেন, চাউল উত্তোলনের বিষয়টি সত্য, তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
নহাটা ইউনিয়নের ১নং ফুলবাড়ী-চাকুলিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. খালিদ হাসান টোকন বলেন, মহিলা মেম্বার আফরোজা বেগম ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের পরিষদের দুই বছরের ৩ জন কার্ডধারীর চাউল আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের সথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযুক্ত সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আফরোজা বেগম চাউল আত্বসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। উপজেলা আইসিটি অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহম্মদপুর নহাটা ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসক মো. রফিককুল ইসলাম বলেন, চাউল আত্মসাতের বিষয়টি জেনেছি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে অভিযুক্ত মহিলা মেম্বরের বিষয়ে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন (ভিজিডি) প্রকল্পের কার্ডধারী হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে দেওয়া ৩ জন হতদরিদ্রের চাউল দুই বছর ধরে উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে।
সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য আফরোজা বেগম নিজেই স্বাক্ষর করে চাউল উত্তোলন করে আসছেন মর্মে অভিযোগ। দুই বছর মেয়াদের চাউল বিতরণ শেষ হলে নতুন করে সরকার পুনরায় হতদরিদ্রদের জন্য চাউল বরাদ্দের ব্যবস্থা করলে সেটি উত্তোলন করতে এনআইডি কার্ড দেখানো এবং হতদরিদ্রের নিজের উপস্থিত থেকে চাউল উত্তোলনের জন্য পরিষদ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়। এনআইডি কার্ড ছাড়াই ইউপি সদস্য আফরোজা খাতুন আগের মতই নিজে স্বাক্ষর করে চাউল উত্তোলন করতে গেলে সেটি আটকে দেন ইউনিয়ন পরিষদ সচিব।
আফরোজা বেগম নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের (৪,৫,৬) নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ও বারইপারা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
তথ্যানুসন্ধানে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবিয়া জামান, আফসা খাতুন ও ইসমতারা নামের তিনজন ভিজিডি কার্ডধারীর নাম ব্যবহার করে তাদের নিজের অজান্তেই দীর্ঘ ২ বছর ধরে নিয়মিতভাবে কার্ডগুলোর ৩০ কেজি করে চাউল উত্তোলন করে আসছেন আফরোজা বেগম। দুই বছরে ওই মেম্বর তিনটি কার্ডের ২১৬০ কেজি চাউল কার্ডধারীদের না জানিয়ে নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।
পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব কার্ডধারীদের বাড়িতে যোগাযোগ করেন এবং জানতে পারেন কার্ডধারীরা তাদের কার্ডের বিষয়ে কিছুই জানেনা এবং তারা কার্ডের বিষয়ে কোনদিন পরিষদে আবেদনই করেনি এমনকি তারা দুই বছর কোন চাউলই উত্তোলন করেনি বলে তারা আরও জানান। চাউল দেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বর্তমান সরকার নতুন করে প্রত্যেক কার্ডধারীদের অতিরিক্ত ৬ বস্তা করে চাউল বরাদ্দ দেন। প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সচিবরা প্রত্যেক কার্ডধারীদের নিজেদের চাউল নিজেদের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে পরিষদ থেকে তাদের চাউল গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আফরোজা বেগম আগের মত স্বাক্ষর করে ফের চাউল উত্তোলনের চেষ্টা করলে চাউল আটকে দেন ইউপি সচিব। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় হৈ-চৈ শুরু হয়।
ঘটনাটি জানার পর কার্ডধারী রুবিয়া জামান মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহীনুর আক্তারের নিকট মহিলা মেম্বারের চাউল আত্মসাতের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও ওই মহিলা মেম্বারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত আইনগত কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন এবং নহাটা ৪ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কামরুল ইসলাম ও রজিবুল বলেন, মহিলা মেম্বর আফরোজা বেগম কার্ডধারীদের না জানিয়ে গোপনে তাদের নাম এবং ছবি ব্যবহার করে দীর্ঘ দুই বছর ধরে তাদের নামের চাউল নিজেই স্বাক্ষর করে উত্তোলন করেন। নতুন করে আসা চাউল কার্ডধারী না আসায় সেই চাউল এখন ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখা হয়েছে। এছাড়া ওই মেম্বার যেসব কার্ডধারীদের নামে চাউল উঠিয়ে আত্মসাৎ করে আসছেন তাদেরকে সাংবাদিকদের নিকট তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার তথ্য না দিতে অনুরোধ করছেন বলে তারা আরও জানান।
রুবিয়া জামান বলেন, আমার নামে কার্ড হয়েছে কিনা আমি নিজেই জানিনা এছাড়া আমি কাডের জন্য কোন আবেদনই করিনাই কারো কাছে। আল্লাহ পাক আমাকে অনেক ভালোই রেখেছেন আমার কাডের কোন দরকার নেই। আমাকে না জানিয়ে আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে মহিলা মেম্বর কার্ড বানিয়ে সারা বছর চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন বেআইনীভাবে। ইউএনও মহোদয়ের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েও আমি কোন প্রতিকার পায়নি। আমি ওই মেম্বারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
নহাটা ইউপি সচিব মো. খুরশিদ সাগর এ প্রতিবেদককে বলেন, চাউল উত্তোলনের বিষয়টি সত্য, তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
নহাটা ইউনিয়নের ১নং ফুলবাড়ী-চাকুলিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. খালিদ হাসান টোকন বলেন, মহিলা মেম্বার আফরোজা বেগম ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের পরিষদের দুই বছরের ৩ জন কার্ডধারীর চাউল আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের সথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযুক্ত সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আফরোজা বেগম চাউল আত্বসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। উপজেলা আইসিটি অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহম্মদপুর নহাটা ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসক মো. রফিককুল ইসলাম বলেন, চাউল আত্মসাতের বিষয়টি জেনেছি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে অভিযুক্ত মহিলা মেম্বরের বিষয়ে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।