ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির। নয়তো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি। বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ব্যতিক্রমী মশাল মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সদস্য এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। মশাল মিছিলে তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ ছাড়াও নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা পরিষ্কারভাবে হুঁশিয়ারি দেন, নভেম্বরের মধ্যেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। অন্যথায় নদীপারের মানুষেরা লাগাতার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
মশাল মিছিলের প্রধান অতিথি ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান বলেন, ‘২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। আমরা তাই আর কোনো প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না, এখন আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজের দৃশ্যমান শুরু দেখতে চাই।’ তিনি এটিকে নদীপারের প্রায় দুই কোটি মানুষের প্রাণের দাবি হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, তিস্তার ভয়াবহ ভাঙন ও বন্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিঃস্ব হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা কেবলই বাড়ছে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে স্যাটেলাইট টাউন তৈরি হবে, শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠবে এবং আবাদী জমি রক্ষা পাবে। ফলস্বরূপ উত্তরাঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে রাজীব প্রধান বলেন, এর আগে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। নতুন করে ৩ দিনের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালেই এবং নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ দৃশ্যমান না হলে কঠোর লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘স্বৈরাচারী পতিত হাসিনা সরকার কথা দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার স্বপ্নতরী তিস্তার তীরে নিয়ে এসে ডুবিয়ে দিয়েছিল।’ তিনি দাবি জানান, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোষাগারের টাকা দিয়েই নভেম্বরে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হোক।
পরিকল্পনার আর্থিক দিক তুলে ধরে তিনি জানান, ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় (৫ বছর) বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং বাকি ২ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেয়া হবে। তিনি দ্রুত আগামী একনেক সভায় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
উল্লেখযোগ্য যে, বৈষম্যপীড়িত তিস্তা অববাহিকার ২ কোটি মানুষের প্রাণের এই দাবিকে সামনে রেখে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগানে গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ১১৫ কিলোমিটার বিস্তৃতি তিস্তার দুই তীরে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির সমাপনীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছিলেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এই দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
মশাল মিছিলে আরও বক্তব্য রাখেন- নীলফামারী জেলা বিএনপির আহবায়ক মীর সেলিম ফারুক, সদস্য সচিব এএইচএম সাইফুল্লাহ রুবেল, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক রইসুল আলম চৌধুরী, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা, অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, গোলাম রব্বানী প্রধান এবং লালমনিরহাট বিএনপির নেতারা।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির। নয়তো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি। বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ব্যতিক্রমী মশাল মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সদস্য এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। মশাল মিছিলে তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ ছাড়াও নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা পরিষ্কারভাবে হুঁশিয়ারি দেন, নভেম্বরের মধ্যেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে। অন্যথায় নদীপারের মানুষেরা লাগাতার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
মশাল মিছিলের প্রধান অতিথি ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান বলেন, ‘২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। আমরা তাই আর কোনো প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না, এখন আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজের দৃশ্যমান শুরু দেখতে চাই।’ তিনি এটিকে নদীপারের প্রায় দুই কোটি মানুষের প্রাণের দাবি হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, তিস্তার ভয়াবহ ভাঙন ও বন্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিঃস্ব হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা কেবলই বাড়ছে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে স্যাটেলাইট টাউন তৈরি হবে, শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠবে এবং আবাদী জমি রক্ষা পাবে। ফলস্বরূপ উত্তরাঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে রাজীব প্রধান বলেন, এর আগে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। নতুন করে ৩ দিনের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালেই এবং নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ দৃশ্যমান না হলে কঠোর লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘স্বৈরাচারী পতিত হাসিনা সরকার কথা দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার স্বপ্নতরী তিস্তার তীরে নিয়ে এসে ডুবিয়ে দিয়েছিল।’ তিনি দাবি জানান, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোষাগারের টাকা দিয়েই নভেম্বরে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হোক।
পরিকল্পনার আর্থিক দিক তুলে ধরে তিনি জানান, ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় (৫ বছর) বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং বাকি ২ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেয়া হবে। তিনি দ্রুত আগামী একনেক সভায় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
উল্লেখযোগ্য যে, বৈষম্যপীড়িত তিস্তা অববাহিকার ২ কোটি মানুষের প্রাণের এই দাবিকে সামনে রেখে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগানে গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ১১৫ কিলোমিটার বিস্তৃতি তিস্তার দুই তীরে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির সমাপনীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছিলেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এই দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
মশাল মিছিলে আরও বক্তব্য রাখেন- নীলফামারী জেলা বিএনপির আহবায়ক মীর সেলিম ফারুক, সদস্য সচিব এএইচএম সাইফুল্লাহ রুবেল, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক রইসুল আলম চৌধুরী, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা, অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, গোলাম রব্বানী প্রধান এবং লালমনিরহাট বিএনপির নেতারা।